পুলিশের কর্তাব্যক্তিদের অনেক আশ্বাসের পরও বাংলাদেশে অপরাধ কমছে না, বরং অপরাধের নতুন নতুন শাখা ডালপালা বিস্তার করছে। মানুষের নিরাপত্তাবোধ ক্রমেই হুমকির মুখে পড়ছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা বিদেশে পালিয়ে গিয়ে সাজার হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করছে।
অনেকে বিদেশে বসেই দেশের অপরাধজগতের কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের রেড নোটিশে থাকা ৪৬ জন বাংলাদেশি আসামি এখনো বিভিন্ন দেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর তদন্তে উঠে এসেছে, তাদের অনেকেই দেশের ভেতরে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক তৎপরতায় লিপ্ত। অনেকেরই দেশের ভেতরে নিজস্ব অপরাধী দল রয়েছে, যাদের মাধ্যমে তারা নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ ইন্টারপোলের সদস্য হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৩ জন আসামির বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল। এর মধ্যে গত ১৮ বছরে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ১৭ জনকে। বাকি ৪৬ জন এখনো অধরা। ইন্টারপোলের রেড নোটিশে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যার পলাতক আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামের নাম।
আলোচিত পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছে মতিঝিলে আওয়ামী লীগের নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলার আসামি জিসান আহমেদ ও মানিক, আব্দুল জব্বার ওরফে মুন্না, নবীন হোসেন ওরফে নবী, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, খোরশেদ আলম, শাহাদাৎ হোসেন ওরফে শাহাদাত, দীপু ওরফে নুরুল, রফিকুল ইসলাম ওরফে কাজল, নাসিরউদ্দিন রতন, হারুন শেখ, শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, মকবুল হোসেনসহ বেশ কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসী।
রেড নোটিশে থাকা অপরাধীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন আসামি এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন আসামিও রয়েছে। আইন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার সম্পন্ন করা কিংবা দণ্ড কার্যকর করা অত্যন্ত জরুরি।
বিভিন্ন দেশে পলাতক অপরাধীরা বহু নাম, বহু পাসপোর্ট, এমনকি বিভিন্ন দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে বলেও তথ্য পাওয়া যায়। তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়াতে হবে। ইন্টারপোলের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ আরো বাড়াতে হবে।
গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অন্যতম শর্ত হচ্ছে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য অপরাধ দমনে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে।
ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিদেশে পলাতক অপরাধীদের ফিরিয়ে আনতে প্রচেষ্টা আরো বাড়াতে হবে।