English

26.3 C
Dhaka
মঙ্গলবার, আগস্ট ৫, ২০২৫
- Advertisement -

বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি: কপ-২৬ জলবায়ু চুক্তি

- Advertisements -

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ক্রমেই সর্বনাশা রূপ পাচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের ভাষায়, বিশ্ব একটি সুতা ধরে ঝুলে আছে। যেকোনো সময় এই সুতা ছিঁড়ে পতন ঘটতে পারে। সেই পতন রোধে যে ধরনের বৈশ্বিক উদ্যোগ থাকা প্রয়োজন ছিল, দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমরা তার থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে শেষ হয়েছে কপ-২৬ সম্মেলন। নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত বিতর্ক করে যে চুক্তি শেষ পর্যন্ত সম্পাদিত হয়েছে তা কোনোভাবেই বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য কার্বন নির্গমন যে হারে কমিয়ে আনা প্রয়োজন ছিল, এই চুক্তি তার থেকে অনেক পেছনে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্ষুব্ধ পরিবেশকর্মীরা বলেছেন, এই চুক্তি তাঁদের ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে না।
কপ-২৬ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে শেষ পর্যন্ত যে চুক্তিতে পৌঁছেছে, তা অবশ্যই মন্দের ভালো। চুক্তি অনুযায়ী ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক রেখে আগামী বছরে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে আরো বড় পরিসরে চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে। কয়লার ব্যবহার কিছুটা কমিয়ে আনার ব্যাপারে প্রধান ব্যবহারকারী দেশগুলো একমত হয়েছে।
এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রদেয় আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা হবে। গ্লাসগো সম্মেলনে এমন ফলাফলই আসবে, পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা আগে থেকেই তা আশঙ্কা করে আসছিলেন। কারণ সম্মেলনের অনেক আগে থেকেই প্রধান জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলো সম্মেলনে যাতে কঠোর শর্ত আরোপ না হয় সে জন্য নানা ধরনের লবি পরিচালনা করে আসছিল। বলা যায়, তাঁরা সফল হয়েছেন। জাতিসংঘের মহাসচিব এই চুক্তিকে ‘রাজনৈতিক আপস’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নপ্রক্রিয়া ক্রমেই দ্রুততর হচ্ছে। তাপপ্রবাহ নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে। ক্রমেই বেশি করে গলছে মেরু অঞ্চলের বরফ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে এবং অনেক দেশের উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলসহ বহু দ্বীপ দেশ তলিয়ে যাচ্ছে। ক্রমেই বেশি করে মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হচ্ছে। খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। জনস্বাস্থ্যে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এককথায় মানবজাতি অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতেও রাজনৈতিক নেতারা সঠিক পথে হাঁটছেন না। কপ-২৬ সম্মেলনের আগে ১২০টি দেশ জাতিসংঘে তাদের যে ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি) জমা দিয়েছে, তাতে কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে তাপমাত্রা কমানোর কার্বন নিঃসরণ যে হারে কমানো প্রয়োজন ছিল বাস্তবে অঙ্গীকার মিলেছে তার চেয়ে অনেক অনেক কম, সাড়ে ৭ শতাংশ মাত্র। অথচ তাপমাত্রার বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য কমানো প্রয়োজন ছিল কমপক্ষে ৫৫ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন ২৬ গিগাটনে নামিয়ে আনা প্রয়োজন ছিল, যা এখন আছে ৫২.৪ গিগাটন। কিন্তু বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী তা ৪২ গিগাটনে নামবে কি না তা নিয়েও সন্দেহ আছে।
পৃথিবী নামের গ্রহটিতে মানবজাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব মূলত রাজনৈতিক নেতাদেরই নিতে হবে। কিন্তু কপ-২৬ সম্মেলনে তাঁদের যে ভূমিকা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, তা আমাদের প্রত্যাশার সঙ্গে মোটেও সংগতিপূর্ণ নয়। আমরা তাঁদের আরো কার্যকর ভূমিকা চাই।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/q1uh
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন