বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি এবং কিছুটা উন্নত জীবনের প্রত্যাশায় বহু তরুণ ঘর ছাড়ে, পাড়ি জমায় অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে। তাদের একটি বড় অংশই বিপদগ্রস্ত হয়। অনেকে বেচাকেনার শিকার হয়। অনেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে আটক হয়ে নির্যাতনের শিকার হয়।
শুধু লিবিয়ায় নয়, অতীতে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমাতে গিয়েও বহু তরুণের সলিলসমাধি হয়েছে। থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার জঙ্গলে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তাদের অনেকের ঠাঁই হয়েছে গণকবরে কিংবা লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে সাগরের জলে। বছরের পর বছর চলে আসছে এই অমানবিক মানবপাচার। কিন্তু এটি বন্ধ করার জন্য কখনোই ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
মাঝেমধ্যে দু-একজন নিম্ন পর্যায়ের দালাল ধরা হলেও মূল হোতারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। জানা যায়, লিবিয়ায় জিম্মি করা একেকজনের পরিবারের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। সেই টাকা কারা কিভাবে সংগ্রহ করে লিবিয়ায় পাঠাচ্ছে, তা অনুসন্ধান করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা খুব কঠিন কাজ নয়। পাচারকারী নেটওয়ার্কে কারা জড়িত, কারা কিভাবে তরুণদের লিবিয়া পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে, উদ্যোগী হলে তা-ও জানা যেতে পারে। কিন্তু আন্তরিক উদ্যোগেরই অভাব রয়েছে।
বাংলাদেশে মানবপাচারের যে অবস্থা, তাতে এটিকে একটি ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে গণ্য করা এবং মানবপাচার রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে বিচারপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে মানবপাচার দ্রুত নির্মূল হোক।