হলে পরীক্ষা চলছে। বাইরে আরেকটি কক্ষে একটি শিশুকে কোলে নিয়ে বসে আছেন এক নারী। কিছুক্ষণ পরপরই শিশুটি কেঁদে উঠছে। তার কান্না শুনে পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে আসেন এক পরীক্ষার্থী। তিনি দুধপান করালে শিশুটি শান্ত হয়।
শিশুটিকে দুধপান করিয়ে আবার পরীক্ষার হলে ঢুকে পড়েন ওই পরীক্ষার্থী। এভাবে তিনি দুইবার শিশুটিকে দুধপান করান।
বুধবার (১ জুন) গাজীপুর সদরের ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজে স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষা চলাকালে এমনই দৃশ্য দেখা গেলো।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশুটির বয়স ৩০ দিন। মা সানজিদা হক ভাবনা বাংলা স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী। সন্তানকে মায়ের কােলে রেখে পরীক্ষা দেন তিনি।
তাদের গ্রামের বাড়ি গাজীপুর মহানগরের সালনার কাথোরার পলাশটেক এলাকায়। পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কয়েকমাস আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি চলে আসেন ভাবনা। এক মাস আগে শিশুপুত্রটির জন্ম হয়। সন্তানকে নিয়েই পরীক্ষার হলে ছুটে আসেন তিনি।
কলেজের প্রভাষক মো. খোরশেদ আলম জানান, তিনি ভাবনার হলেই নির্বাচনী পরীক্ষার ডিউটিতে ছিলেন। পরীক্ষা দিলেও ভাবনার মনে যেন সবসময় একটা টেনশন কাজ করছিল।
কারণ জানতে চাইলে তিনি সব খুলে বলেন। পরে পরীক্ষা চলাকালে দুধপান করানোর অনুমতি নিয়ে দুইবার হল থেকে সন্তানের কাছে গেছেন। আর চার ঘণ্টার পরীক্ষার সময় শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগেই উত্তরপত্র জমা দিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে যান।
এ বিষয়ে পরীক্ষার্থী ভাবনা জানান, একবছর আগে তার বিয়ে হয়েছে। স্বামী একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। এক মাস আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার পুত্রসন্তান জন্ম হয়।
চিকিৎসক তাকে ৪০ দিন বাইরে চলাফেরা করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি পরীক্ষা না দিয় এক বছর লস করতে চাননি। তাই সন্তানকে নিয়েই পরীক্ষা দিতে আসেন তিনি।