English

31 C
Dhaka
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
- Advertisement -

গভীর রাতে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের হোস্টেলে ‘অদ্ভুত শব্দ’ কে করে?

- Advertisements -

কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের হোস্টেলে থাকা ছাত্রীদের কানে গভীর রাতে ভেসে আসে ‘অদ্ভুত শব্দ’। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ছাত্রীরা। ছাত্রীদের ধারণা, এসব অদ্ভুত শব্দ ‘ভূতে’ করছে। এ জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘ভূতের ভয়’ দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের ভয় দূর করতে সেখানে হুজুর ডেকে এনে মিলাদও পড়ানো হয়েছে।

তবে স্থানীয়রা বলছেন ভিন্ন কথা। স্থানীয়দের ভাষ্য, ভূত নয়, গভীর রাতে এসব অদ্ভুত শব্দ করছেন বখাটেরা। এসব বখাটের বেশির ভাগই মাদকসেবী।

সরেজমিনে নগরীর চর্থা এলাকায় অবস্থিত কলেজটিতে গিয়ে দেখা গেছে, কলেজটির দক্ষিণে কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়। কলেজের পশ্চিম দিকের রাস্তা রানির দিঘি হয়ে চলে গেছে নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ের দিকে। কলেজের একটু পশ্চিমেই সালাউদ্দিন মোড়। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অবস্থিত হওয়ায় কলেজটিতে সব সময় আলোক ঝলমল পরিস্থিতি বিরাজ করে। এর পরও সেখানে শিক্ষার্থীরা ‘ভূতের ভয়ে’ রয়েছেন।

কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, হাবিবা আক্তার জানান, গত বেশ কয়েক দিন ধরে কলেজ হোস্টেলের মেয়েদের মধ্যে ভূতের আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাত হলে তারা অদ্ভুত শব্দ শুনতে পান। এ আওয়াজ সহজে বন্ধ হয় না। অদ্ভুত শব্দে গা শিউরে ওঠে ছাত্রীদের। আওয়াজ শুরু হলে রাতে সবাই জবুথবু হয়ে বসে থাকে। এ অবস্থা চলতে থাকার একপর্যায়ে গত সোমবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় হুজুর ডেকে এনে হোস্টেলে মিলাদ পড়ানো হয়!

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হোস্টেলটির একটি ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। নড়বড়ে ভবনটিতে বৃষ্টি হলে পানি ঢুকে পড়ে। বাতাস ও ভূমিকম্প হলে সবাই আঁতকে ওঠে। কলেজ এবং ছাত্রীদের হোস্টেলগুলো একই আঙিনায় অবস্থিত। ছাত্রীদের হোস্টেলের পূর্ব দিকে কলেজের সীমানাপ্রাচীরের বাইরে বখাটেদের আনাগোনা আছে। কলেজের পূর্ব পাশের সড়কে প্রায়ই প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন করে বখাটেরা। রাতেও সেখানে তাদের উৎপাত থাকে।

চর্থা এলাকার বাসিন্দা তারেকুল ইসলাম, মোহাম্মদ হোসেন, জমিন উদ্দিন বলেন, কলেজের পূর্ব পাশেই ছাত্রীদের হোস্টেলগুলো অবস্থিত। পূর্ব পাশে সীমানাপ্রাচারীর থাকলেও অনেক স্থানে প্রাচীরের ওপর তারকাঁটার বেড়া নেই। যার কারণে গভীর রাতে প্রাচীর টপকে বখাটেরা কলেজ আঙিনায় ঢুকে পড়ে। এরপর তারা সেখানে নিরাপদে মাদক সেবন করে। গভীর রাতে তারা অনেক সময় মাদক সেবন করে চিৎকার-চেঁচামেচি করে। আমাদের ধারণা, নেশাগ্রস্তরাই ছাত্রীদের ভয় দেখাতে এমনটা করছেন।

নাম প্রকাশ না শর্তে হোস্টেলে থাকা অন্তত তিনজন ছাত্রী জানান, করোনাকালে তাঁদের হোস্টেল বন্ধ ছিল। হোস্টেল চালু হলে অনেক শিক্ষার্থী এসে দেখেন, অনেকের জামা-কাপড়সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। পরে বেশ কয়েকজন ছাত্রী কলেজ অধ্যক্ষের কাছে এ সমস্যার সমাধান চেয়েছেন। তাঁদেরও ধারণা, ছাত্রীদের ভয় দেখাতে মাদকসেবীরা এমন কাণ্ড করছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জামাল নাছের বলেন, ‘মেয়েরা রাতে ভয় পাওয়ার বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে। তাই মিলাদ পড়ানো হয়েছে।’ বখাটেদের উৎপাতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বখাটেরা সীমানাপ্রাচীরের বাইরে কী করে সেটা আমি জানি না। তবে আমাদের কলেজ সুরক্ষিত আছে।’

জামাল নাছের আরো বলেন, এই আধুনিক যুগে ভূতের ভয় এটা হাস্যকর ব্যাপার। আমার কাছে মনে হয়, ছাত্রীরা রাতে পড়ার সময় হতে পারে বিড়াল কান্না করেছে। এ ছাড়া গভীর রাতে অনেকেরই মনে ভয় কাজ করে। এমন কিছু থেকেই ছাত্রীরা ভয় পেতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন