English

29 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

জজের মেয়ে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিতে অস্বীকার করায় সহপাঠীদের সাথে বাকবিতণ্ডতা: অভিভাবক ‘অপদস্ত’

- Advertisements -

বগুড়ায় সরকারি এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীর মাকে ‘অপদস্ত’ করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার এ ঘটনায় দুপুর তিনটা থেকে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।

বিদ্যালয়ে ঝাড়ু দেয়াকে কেন্দ্র করে ওই কর্মকর্তার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের সাথে তার সহপাঠীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত।

বগুড়া সরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে বগুড়ার জজ আদালতের এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার মেয়ে পড়াশোনা করে। বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে থাকে। গত সোমবার ওই কর্মকর্তার মেয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা ছিল। তবে নিজেকে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার মেয়ে পরিচয় দিয়ে সে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিতে অস্বীকার করে। এই নিয়ে তার অপর সহপাঠীদের সাথে বাকবিতণ্ডতা তৈরি হয়।

Advertisements

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আরও অভিযোগ করে বলেন, ওই রাতেই কর্মকর্তার মেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মাধ্যমে মেসেঞ্জারে তার সহপাঠীদের বস্তির মেয়ে উল্লেখ করে পোস্ট দেয়। এই সময় সে পোস্টে উল্লেখ করে, তোরা বস্তির মেয়ে। আমার মা সরকারি…। তোদের মায়েদের বল আমার মায়ের মতো …. হতে।’

ওই পোস্টে বিচারকের মেয়ের ৪ জন সহপাঠী পাল্টা উত্তর দেয়। এই নিয়ে ওই কর্মকর্তা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে মঙ্গলবার অভিভাবকদের ডাকতে বলেন। মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে প্রধান শিক্ষাকের ডাকে ওই ৪ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে আসেন। ওই সময় সেই কর্মকর্তা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হুমকি দিয়ে জেল দেওয়ার কথা বলেন। এই সময় দুই অভিভাবকে ওই কর্মকর্তার পা ধরে ক্ষমা চাইয়ে নেওয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষিকা বলেন, ‘কর্মকর্তার মেয়ে ও কিছু শিক্ষার্থী পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে বিচার বসানো হয়। এই সময় কর্মকর্তা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জেলে দেওয়ার হুমকি দিলে দুইজন অভিভাবক নিজে থেকে পা ধরে ক্ষমা চান। তাদের কেউ বাধ্য করেনি বা পা ধরতে বলেনি।’

এ বিষয়ে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সরকারি চাকরিজীবিদের সন্তানদের সাথে বেসরকারি চাকরিজীবি বা ব্যবসায়িদের সন্তানদের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব কাজ করে। যতটুকু জেনেছি সোমবার কর্মকর্তার মেয়ের ঝাড়ু দেওয়া কথা ছিল। তবে সে তিনমাস আগেই স্কুলে আসায় এই পরিবেশ হয়তো বুঝে উঠতে পারেনি। এজন্য সে ঝাড়ু দিতে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে এই কাজটি সম্পূর্ণ করেন। এই সময় অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে ক্রিটিসাইজ করে। এই নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

Advertisements

প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, এ কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে ডাকা হয়। তাদের সাথে কথা বলা হয়। কিন্তু অভিভাবকের মাফ চাওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেন। অভিভাবকেরা ভয় পেয়ে এভাবে মাফ চেয়েছেন। তাদের কেউ বাধ্য করেনি।

এ ঘটনায় বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আকতার খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তারা সমাধানের জন্য আশস্ত করেন।

একই সঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিনকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন