ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেছেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাস থেকে অবৈধ দোকান এবং ভবঘুরে ও ভাসমানদের উচ্ছেদে অভিযান চালানো ‘সঠিক পদক্ষেপ নয়’। সোমবার ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
নাসির উদ্দিন লেখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে ভবঘুরে-উদ্বাস্তু, নেশাগ্রস্ত কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীন অথবা বীভৎস রোগাক্রান্তদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর তৎপরতা জরুরি। তারা শিক্ষার্থীদের এবং বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি। এছাড়াও ক্যাম্পাস এবং আশেপাশের জায়গাগুলোতে সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত পর্যাপ্ত লাইটিং এর ব্যবস্থা করা আবশ্যক।
ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং একাডেমিক পরিবেশ নিশ্চিত করা সবার কাছে অগ্রাধিকার বলেও লিখেছেন তিনি।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অনেক অনুমোদিত বা ভাসমান দোকানপাট রয়েছে। এর বেশিরভাগই শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করে। ক্যাম্পাসে দোকান পরিচালনার অনুমোদনের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন। একটি যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনুমোদিত এবং অনুমোদিত দোকানপাট চিহ্নিত করতে হবে। যারা দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে স্থায়ী বা অস্থায়ী বা ভাসমান দোকান পরিচালনা করে আসছে তাদের একটি যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া হঠাৎ করে উচ্ছেদ করা সঠিক পদক্ষেপ নয়।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফলে প্রশাসনের এক্ষেত্রে দ্রুত নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দোকানপাটগুলোকে একটি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। না হলে নিত্যনতুন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে বলেও মনে করছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ দোকান এবং ভবঘুরে ও ভাসমানদের ‘উচ্ছেদ অভিযানে’ দোকানিদের মারধর আলোচনার জন্ম দিয়েছে। শনিবার দুপুরে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের। তার নেতৃত্বে পুলিশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের একটা টিম এ অভিযানে অংশ নেন।
এ অভিযানে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে থাকা দোকানগুলোতে ভাঙচুর চালাতে যেমন দেখা গেছে; তেমনই কয়েকজন দোকানির অভিযোগ, তাদেরকে চড়-থাপ্পর মেরেছেন উচ্ছেদে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা।
এছাড়া, ডাকসু পরিচালনার বাজেট চেয়ে কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে ডাকসু নেতারা যেভাবে বাকবিতণ্ডা করেছেন, সে বিষয়টিকে ‘আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে অশোভন’ আচরণ বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের এ সাধারণ সম্পাদক।
এর আগে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের জন্য তহবিল বরাদ্দসহ তিন দাবিতে ডাকসুর প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান। সেখানে কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।
সে বিষয়ে নাসির লেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার মহোদয়ের সঙ্গে কয়েকজন ডাকসু নেতা যেভাবে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে অশোভন আচরণ করেছে তা খুবই নিন্দনীয়। উক্ত ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। ট্রেজারার মহোদয় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সক্রিয় সংগঠক ছিলেন। শিক্ষার্থীদের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। বিগত প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার দায় বর্তমান ট্রেজারার মহোদয়ের ওপর চাপিয়ে অযাচিত চাপসৃষ্টি করা অছাত্রসুলভ ও বিবেকহীন আচরণ। ডাকসুর পদবী ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের ওপর মবতন্ত্র প্রয়োগ করা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা তাদেরকে দাবি আদায়ে নিয়মতান্ত্রিক পন্থা অনুসরণ করার আহ্বান জানাই।
