নাসিম রুমি: অভিনয়ে বুঝিয়েছেন নিজের উচ্চতা। মঞ্চে দেখিয়েছেন তার যোগ্যতা। রং-তুলি হাতে এঁকেছেন জীবনের গল্পটা। নানা গুণের অধিকারী এই মানুষটি মডেল, অভিনেত্রী ও চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াত। আজ তার ৫৩তম জন্মদিন। মুক্তিযুদ্ধের বছর ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় পড়াশোনা করেন। প্রখ্যাত অভিনেতা আবুল হায়াতের বড় মেয়ে তিনি। কালের প্রবাহে তিনিও হয়ে উঠেছেন জাত শিল্পী। আশির দশকে ‘খোলা দুয়ার’ নাটকে বাবার মেয়ে হয়েই অভিনয় শুরু করেন। এরপর যুক্ত হন নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে। টিভি নাটকে প্রথমে আলোচনায় আসেন ‘অয়োময়’ ধারাবাহিক দিয়ে।
এরপর পুরো নব্বইয়ের দশকে ছিলেন শীর্ষ অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন। একে একে অভিনয় করেন শঙ্কিত পদযাত্রা, রূপনগর, ছোট ছোট ঢেউ, অন্য ভুবনের ছেলেটা, চেনা অচেনা মুখ, থাকে শুধু ভালোবাসা, বীজমন্ত্র, স্পর্শ, শেষ পর্যন্ত তোমাকে চাই, বিপ্রতীপ, অতিথি, হার জিত, আশিক সব পারে, বিষকাঁটার মতো জনপ্রিয় নাটকগুলোতে।
মডেলিং জগতেও খেতাব ছিল তার। একটা সময় পর অভিনয় জগৎ থেকে বিরতি নিয়েছিলেন। তবে যখনই ফিরে এসেছেন তখনই নিজেকে সমাদৃত করেছেন। বাণিজ্যিক সিনেমায় তাকে দেখা না গেলেও মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা আগুনের পরশমণি ও জয়যাত্রায় অভিনয় করেন তিনি।
অভিনয়ের বাইরে তিনি নাট্যকার। অনেক নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে শুধু তোমারেই জানি, শুকতারা, শঙ্খবাস, ঘাসফুল, প্রেরণা অন্যতম।
উপস্থাপক হিসেবেও সুপরিচিতি আছে তার। ‘বিপাশার অতিথি’ নামে একটি অনুষ্ঠান বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। আবৃত্তি ও গানেও দক্ষ তিনি।
তার আরেকটি প্রতিভা হলো তিনি একজন চিত্রশিল্পী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। বছর কয়েক আগে অ্যাসিড আক্রান্ত নারীদের সাহায্যার্তে নিজের আঁকা ছবির প্রদর্শনী করেছিলেন।
বর্ণিল ক্যারিয়ারে তিনি একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯৯৪ সালে আগুনের পরশমণি সিনেমার জন্য তিনি এই পুরস্কার পান। এ ছাড়া তার ঝুলিতে অসংখ্য পুরস্কার রয়েছে।
সাংস্কৃতিক জীবনের মতো ব্যক্তিগত জীবনটাও মসৃণ। ব্যক্তিজীবনে নিজের ক্যারিয়ারের সেরা জুটি অভিনেতা ও নির্মাতা তৌকীর আহমেদকে বিয়ে করেছেন। সংসারে রয়েছে দুটি সন্তান; এক ছেলে ও এক মেয়ে। মিডিয়া জগতে সুখী দম্পতি হিসেবে তাদের বেশ সুপরিচিতি আছে। বর্তমানে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে আমেরিকায় বসবাস করেন এই অভিনেত্রী।