বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের অন্যতম প্রিয় মুখ, জনপ্রিয় নায়ক এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের অগ্রদূত ইলিয়াস কাঞ্চনের অসুস্থতার সংবাদে স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো চলচ্চিত্র সমাজ। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ অবস্থায় লন্ডনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শিল্পী, নির্মাতা, সহকর্মী এবং ভক্তদের মধ্যে নেমে এসেছে শোক ও উদ্বেগের ছায়া। শোকে ভেঙ্গে পরেছেন চিত্রনায়িকা চম্পা।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে চম্পা–ইলিয়াস কাঞ্চন ছিলেন এক সোনালি যুগলের নাম। পারিবারিক গল্পনির্ভর সিনেমা হোক কিংবা সামাজিক বাস্তবতাভিত্তিক কাহিনি—তাদের অনস্ক্রিন রসায়ন সবসময় দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। একে অপরকে দারুণভাবে পরিপূর্ণ করেছেন তাঁরা, যা তাদের জুটিকে করেছে দর্শকপ্রিয় ও স্মরণীয়।
চিত্রনায়িকা চম্পা গভীর আবেগঘন কণ্ঠে বলেন—“কাঞ্চনের অসুস্থতার খবর শুনে আমি ভেঙে পড়েছি। অন্যান্য বিষয় নিয়ে আমি স্বাভাবিক থাকলেও এই সংবাদ আমাকে অস্থির করে দিয়েছে। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না যে, কাঞ্চনের মতো শক্ত মনের মানুষ এতো বড় অসুখের সঙ্গে লড়ছেন। তিনি শুধু একজন নায়ক নন, তিনি আমাদের সবার অনুপ্রেরণা।”
তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন— “আমার দেখা একমাত্র নায়ক, যিনি সত নামাজি, সৎ চরিত্রের এবং পরোপকারী মানুষ—তিনি ইলিয়াস কাঞ্চন। এমন একজন মহৎ মানুষের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাওয়া আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গনের জন্য এক বিশাল সৌভাগ্য। আমরা সত্যিই গর্বিত যে, এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাঞ্চনের মতো একজন দেশপ্রেমিক ও মানবিক নায়ক কাজ করেছেন।”
চম্পা আরও জানান, কাঞ্চনের সঙ্গে তার পরিবারের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে— “ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রয়াত স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তার ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে আমার নিয়মিত যোগাযোগ আছে। পরিবারের সবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক একেবারে আত্মার মতো। বহুবার কাঞ্চন ভাইকে বলেছি—‘আপনি বিদেশে যান, দেশে পড়ে আছেন কেন?’ কিন্তু তিনি সবসময় বলতেন, ‘না, আমি বিদেশে যাব না। দেশের মানুষকে সড়ক দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচাতে এখনো অনেক কাজ বাকি আছে।’ তার এই উত্তর শুনে আমি মুগ্ধ হতাম। তখন মনে হতো, এই মানুষটি সত্যিকারের দেশপ্রেমিক।”
চম্পা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন—“আমি সবার কাছে অনুরোধ করব, আপনারা দোয়া করুন। আল্লাহ যেন তাকে দ্রুত সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন।”