English

27 C
Dhaka
রবিবার, জুলাই ১৩, ২০২৫
- Advertisement -

কেন বলিউড নির্মাতারা সফলভাবে ক্রিকেট নির্ভর সিনেমা বানাতে পারেননি?

- Advertisements -

ক্রিকেট পাগল জাতি হিসেবে ভারতের সুনাম বিশ্বজুড়ে। ক্রিকেটের সাথে ভারতীয় সিনেমার যোগসূত্রও কম নয়। বলিউড নায়িকাদের প্রেমেও পড়েছেন অনেক ভারতীয় ক্রিকেটার। কেউ কেউ আবার বেঁধেছেন গাঁটছড়াও। বিরাট কোহলি-আনুশকা শর্মা, কিংবা শর্মিলা ঠাকুর-টাইগার পদৌতি; এমন অনেক প্রেম আর প্রণয়ে বলিউড আর ভারতীয় ক্রিকেট মিলেমিশে একাকার।

তবে এই জমজমাট যোগাযোগেও বলিউডের ক্রিকেট নির্ভর সিনেমাগুলো কেন যেনো জমেনি। অনেক অনুপ্রেরণামূলক বলিউড ক্রিকেট সিনেমার নির্মাণও হয়নি ঠিকঠাক। যদিও লগন, ইকবাল, এমএস ধোনি: দ্য আনটোল্ড স্টোরি, ৮৩’র মতো কিছু সিনেমা এর ব্যতিক্রম।

অনেক বাঘা বাঘা নির্মাতাও ধরতে পারেননি ক্রিকেটের ধুনটা। অনেকে রমরমা ব্যবসার কথা মাথায় রেখে বাজার ধরতে গিয়ে খেই হারিয়েছেন। ক্রিকেট নির্ভর সিনেমাকে বানিয়ে ফেলেছেন স্রেফ মাসালা।

অনেক ক্রিকেটারের চরিত্রে বড় বড় বলিউড তারকা অভিনয় করার পরও সিনেমা হিট করেনি।

বলিউডে প্রথম ক্রিকেট নির্ভর সিনেমা সুবোধ মুখার্জির ‘লাভ ম্যারেজ’ (১৯৫৯)। যেখানে অভিনয় করেন দেব আনন্দ। তিনি ঝাঁসি থেকে উঠে আসা এক ক্রিকেটারের চরিত্রে অভিনয় করেন। যে ক্রিকেটার বোম্বেতে এসে বিখ্যাত হন। প্রথমে জমিদার কন্যা তাকে পছন্দ না করলেও মাঠের খেলা দেখে তার প্রেমে মজে যান। তারা বিয়ে করে ঝাঁসিতে ফিরে যায়। এরপর নানা চড়াইউতরাইয়ে তাদের জীবন আগায়। তবে সেই সিনেমা খুব একটা সফল হয়নি। ক্রিকেটটাও সেখানে পায়নি পূর্ণ মাত্রা।

এরপর আর তিন দশকে বলিউডে কোনো ক্রিকেট নির্ভর সিনেমা নির্মাণ করা হয়নি। ১৯৮৩ সালে ভারতের বিশ্বকাপ জয় দেশটির ক্রিকেটে নতুন জোয়ার আনে। এরপর আবারও শুরু হয় ক্রিকেট নির্ভর সিনেমা বানানোর ঝোঁক। রসদ পেয়ে ১৯৮৪ সালে বানানো হয় ‌‘অলরাউন্ডার’। এই সিনেমায় অভিনয় করেন কুমার গৌরব। শক্তি কাপুরের পরিবর্তে তাকে এই চলচ্চিত্রে নেওয়া হয়েছিল। অনিবার্যভাবে সিনেমা হিট বানাতে ক্রিকেটের সাথে এখানেও মেশানো হয় বলিউড ঘরানার প্রেম ও মাসালা। ফলে অপ্রত্যাশিতভাবেই এটি মাসালা সিনেমা হয়ে ওঠে। যেখানে ক্রিকেটটা অনেকখানি কোণঠাসা হয়ে পড়ে।

তবে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে ক্রিকেট ভিত্তিক চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটায় দেব আনন্দের আওয়াল নাম্বার (১৯৯০)। যেখানে দেব একাই প্রাক্তন ক্রিকেটার, নির্বাচকদের প্রধান ও পুলিশের ডিআইজি চরিত্রে অভিনয় করেন। সেই সিনেমায় বর্তমান ক্রিকেটার রূপে হাজির ছিলেন আমির খান। আর ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বোমা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেন আমিরের সৎ ভাই আদিত্য। মাঠের খেলায় মগ্ন আমির। আর দূর নিয়ন্ত্রিত বোমা নিয়ে তৈরি তার সৎ ভাই। অন্যদিকে স্নাইপার হাতে প্রস্তুত ডিআইজি দেব আনন্দ। আর শেষ বল থেকে দরকার ছয় রান। এই অদ্ভূত সিনেমাটি ক্রিকেট নির্ভর সিনেমাকে বিপর্যয়ে ফেলে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্রিকেট নির্ভর সিনেমা বানাতে গিয়ে খুব একটা গবেষণা করা হয়নি ভারতে। নির্মাতার আসলে বুঝতে চাননি এই খেলাটি কীভাবে কাজ করে।

ক্রিকেট নিয়ে বানানো অধিকাংশ হিন্দি সিনেমার ফলাফল ছিল অনুমেয়। তাতে দেখানো ক্রিকেট ম্যাচগুলো ছিল অবাস্তব। ২০০৯ সালে বানানো ‌‘দিল বোলে হাদিপ্পা’ সিনেমাটি প্রযোজনা করেছিল ভারতের বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান যশ রাজ ফিল্মস। যেখানে দেখানো হয় একজন নারী ক্রিকেটার (রানি মুখার্জি) পুরুষ ছদ্মবেশে খেলেন এবং জাতীয় দলে ডাক পান। তবে সেই সিনেমাও ছিল অনেকটা অবাস্তব ও ক্রিকেট জ্ঞান বহির্ভূত। অক্ষয় কুমারের ক্রিকেটীয় সিনেমা পাতিয়ালা হাউজ (২০১১) বানানো হয়েছিল একটি অনুপ্রেরণামূলক কাহিনী অবলম্বনে। যে ক্রিকেটার স্বপ্ন পূরণ হয় জীবনের চল্লিশতম বছরে এসে। তবে সেখানেও ক্রিকেটের চেয়ে বেশি প্রাধান্য ফ্যামিলি ড্রামা।

বিশ্লেষকদের মতে, ক্রিকেটের মতো নাটকীয় গেমটাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেননি বলিউডের নির্মাতারা। বাইরে থেকে আনা নাটকীয়তাকে চাপাতে গিয়ে বলিউডের অনেক বড় বড় পরিচালকও ক্রিকেট নির্ভর সিনেমা বানাতে গিয়ে খেই হারিয়েছেন।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/vxl5
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন