English

33 C
Dhaka
বুধবার, জুলাই ২, ২০২৫
- Advertisement -

কোটা আন্দোলনে সমর্থন পশ্চিমবঙ্গের একঝাঁক তারকার

- Advertisements -

বাংলাদেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনের খবর ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশি দেশ ভারতেও। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারানো রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুতে সমবেদনা জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকজন তারকা শিল্পী। আন্দোলনকারীদের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন টলিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি, সঙ্গীতশিল্পী সাহানা বাজপেয়ী, গীতিকার এবং পরিচালক ইন্দ্রদীপ দাস গুপ্ত এবং অভিনেতা অনিন্দ্য চ্যাটার্জি।

সামাজিকমাধ্যমে নিজেদের সংহতি জানিয়ে এই তারকারা আবু সাঈদের প্রতিবাদি ছবি শেয়ার করেছেন। সাহসিকতার সঙ্গে পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে চলমান আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছেন বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাঈদ।

১) স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়

শহর ঢাকায় বারুদে গন্ধে আঁতকে উঠেছেন স্বস্তিকা।  ঢাকার জাহাঙ্গীরনগরকে নিজের ক্যাম্পাস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই দেখছেন তিনি।  বাংলাদেশের মতো অতিথিপরায়নতা এবং প্রতিবাদি মানসিকতার প্রশংসাও তার কন্ঠে।

সামাজিকমাধ্যমে স্বস্তিকা লিখেন, ‘এক মাস হলো আমি নিজের দেশে নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খবরের চ্যানেলে তৃতীয় বিশ্বের কোনো খবরই তেমন একটা চলে না। আর আমি খুব একটা ফোনের পোকা নই তাই এত খারাপ একটা খবর কানে আসতে দেরি হলো।

তো কয়েক মাস আগে বাংলাদেশ গেলাম, খুব ইচ্ছে ছিলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যাওয়ার।  চারুকলা যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল, জীবনের একটা স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে। প্রতিবার আসি, ব্যস্ততায় যাওয়া হয়না, মা’ও খুব যেতে চাইতেন বাংলাদেশ, নিয়ে যাওয়া হয়নি, কিন্তু আজ একটা ভিডিও দেখলাম, গুলির ধোঁয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আক্রান্ত।  ছাত্র বয়স গেছে সেই কবে, তবে জাহাঙ্গীরনগর আর আমার যাদবপুর খুব কাছাকাছি। কাঠগোলাপের গাছ গুলোও কেমন এক রকম। এক রকম আকাশের মেঘগুলোও। কেবল আজ ওখানে বারুদের গন্ধ।

‘‘ময়দান ভারী হয়ে নামে কুয়াশায়
দিগন্তের দিকে মিলিয়ে যায় রুটমার্চ
তার মাঝখানে পথে পড়ে আছে ও কি কৃষ্ণচূড়া ?
নিচু হয়ে বসে হাতে তুলে নিই
তোমার ছিন্ন শির, তিমির।’’

এমন এক আপ্যায়নপ্রিয় জাতি দেখিনি, খাবারের নিমন্ত্রণ যেন শেষ হতেই চায় না, অমন সুন্দর করে সারা রাস্তা জুড়ে ভাষার আল্পনা আর কোথায় দেখব? নয়নজুড়ানো দেওয়াল লেখা? এ বোধহয় মুক্তিযুদ্ধের শপথ নেওয়া একটা জাতির পক্ষেই সম্ভব।
আজ, অস্থির লাগছে।  আমিও তো সন্তানের জননী। আশা করবো বাংলাদেশ শান্ত হবে। অনেকটা দূরে আছি, এই প্রার্থনাটুকুই করতে পারি। অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো-সেই আমাদের আলো…আলো হোক…ভাল হোক সকলের’।
২) সাহানা বাজপেয়ী

২০০০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ছিলেন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সাহানা বাজপেয়ী।  এরপরও নানা সময় গানের সুবাদে এপার বাংলায় এসেছেন তিনি।  কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের রক্তক্ষরণে হৃদয় পুড়ছে সাহানারও।

সামাজিকমাধ্যমে আবু সাঈদের প্রতিবাদি ছবি শেয়ার করে সাহানা লিখেছেন, ‘মৃত্যুর ঠিক আগে সোস্যাল মিডিয়ায় ‘৬৯ সালের শহীদ শিক্ষক শামসুজ্জোহার কথা লিখেছিলেন আবু সাঈদ। ডক্টর শামসুজ্জোহা ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে পাকিস্তানি সেনার বন্দুকের গুলি থেকে ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন তিনি।

আবু সাঈদ লিখেছিলেন, ‘স্যার, এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার। আপনার সময়সাময়িক যারা ছিল, সকলেই মরে গেছে। কিন্তু আপনি মরেও অমর। আপনার সমাধি, আমাদের প্রেরণা৷ আপনার চেতনায় আমরা উদ্ভাসিত।’
আবু সাঈদ শুধু নন, গোটা বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে আজ বলছে, ‘যদি আজ শহিদ হই তবে আমার নিথর দেহটা রাজপথে ফেলে রাখবেন। ছাত্র সমাজ যখন বিজয় মিছিল নিয়ে রুমে ফিরবে তখন আমাকেও বিজয়ী ঘোষণা করে দাফন করবেন।’

৩) ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত 

ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত বিখ্যাত ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক।  বিসমিল্লাহ, আমি তোমাকে চাই, হরিপদব্যান্ডওয়ালা, পারবোনা আমি তোমাকে ছাড়তে, এক যে ছিল রাজা, গল্প হলেও সত্যি চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।  আবু সাঈদের মৃত্যুতে হৃদয় ভেঙেছে তারও।

সামাজিকমাধ্যমে ইন্দ্রদীপ লিখেছেন, ‘জীবন আপনাকে মনে রাখবে, ভাই।  ক্ষমতার সাথে সাথে দায়িত্ব আসে, সত্য প্রায়শই ভুলে যায় এবং অগ্রাহ্য হয়ে যায়।  এমন সরকারের জন্য তীব্র লজ্জ্জা।  বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের সাথে নিরঙ্কুশ সংহতি।’

৪) অনিন্দ্য চ্যাটার্জি

অনিন্দ্য চ্যাটার্জি পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র পরিচালক।  জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দুর গায়ক-গীতিকার তিনি।  সাম্প্রতিক সময়ে তিনি স্বাধীন সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে মূলধারার বাংলা চলচ্চিত্রে বহুবিধ গান রচনা করেছেন।

আবু সাঈদের ছবি শেয়ার করে ক্ষুদিরাম বসুর কবিতা ক্যাপশন দিয়েছেন অনিন্দ্য।

তিনি লিখেছেন-
‘লড় –
না লড়তে পারলে বলো ।
না বলতে পারলে লেখো ।
না লিখতে পারলে সঙ্গ দাও ।
না সঙ্গ দিতে পারলে যারা এগুলো করছে তাদের মনোবল বাড়াও ।
যদি তাও না পারো, যে পারছে,
তার মনোবল কমিও না ।
কারণ, সে তোমার ভাগের লড়াই লড়ছে ।
– ক্ষুদিরাম বসু’ ।

৪) কৌশিক সরকার

নিহত বিক্ষোভকারী আবু সাঈদের ছবি পেন্সিলে এঁকে সামাজিকমাধ্যমে শেয়ার করেছেন কলকাতার গুণী শিল্পী কৌশিক সরকার। কোটা সংস্কারের লড়াইয়ে বুক প্রশস্ত করে সাঈদের দাঁড়ানো ছবিটিই তিনি তুলে নিয়েছেন নিজের পেন্সিলের আগায়।

আবু সাঈদের ছবি এঁকে কৌশিক সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘চক্ষে আমার তৃষ্ণা
ওগো তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে…’

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/fxbi
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন