বাংলা চলচ্চিত্রের সাড়া জাগানো ‘দেবদাস’ সিনেমার প্রযোজক কামরুল হাসান খান (৭১) আর নেই। রাজধানীর স্কয়ার হসপিটালে আজ বুধবার ১৭ মার্চ বিকেলে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশেষ অবদান রাখা এই দেশবরেণ্য চলচ্চিত্র প্রযোজকের মৃত্যুতে সিনেমা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমেছে শোকের ছায়া।
কামরুল হাসান খানের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তার ছেলে কানাডা থেকে দেশে ফেরার পর ১৯ মার্চ শুক্রবার কিশোরগঞ্জের কুলিয়াচর উপজেলার মনোহরপুরে নিজ গ্রামে তাকে দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাড়া জাগানো উপন্যাস ‘দেবদাস’ নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে একাধিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ‘দেবদাস’ উপন্যাসকে রুপালী পর্দায় নিয়ে আসেন চাষী নজরুল ইসলাম।
বুলবুল আহমেদ ও কবরী অভিনীত ১৯৮২ সালে মুক্তি পাওয়া সেই চলচ্চিত্রটি দারুণ সাড়া ফেলে। আর সেই চলচ্চিত্রের প্রযোজক ছিলেন কামরুল হাসান খান। কামরুল হাসান খান প্রযোজিত ‘প্রতিরোধ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথম প্লেব্যাক করেন ভারতের কুমার শানু। মানবেন্দ্র, সাবিনা ইয়াসমিন, হৈমন্তী শুক্লাসহ বরেণ্য শিল্পীরাও তার চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন।
মুক্তিযুদ্ধ ও জনসেবায় কামরুল হাসান খানের অবদান স্মরণীয়। ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে তিনি সংস্কৃতি ও ক্রীড়া জগতের পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন। কামরুল হাসান খান সংস্কৃতি অঙ্গনে ‘ফরিদ ভাই’ বলেও পরিচিত ছিলেন। সংস্কৃতি ও ক্রীড়া জগতের পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি ছিলেন অনন্য।
১৯৬৭ সাল থেকে শান্তিনগর ক্লাবের দায়িত্বে আসেন এবং বিভিন্ন উন্নয়নে অংশ নেন। তিনি বহুমুখী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজক ও উদ্যোক্তা ছিলেন। তার নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন একেকজন তারকা, যার মধ্যে অন্যতম তাঁর আপন সহোদর, খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ ও কণ্ঠশিল্পী বদরুল হাসান খান ঝন্টু। কামরুল হাসান খান কিশোরগঞ্জের প্রাক্তন এমপি এ কে এম শামসুল হক গোলাপ মিয়া ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ-এর ভাগ্নে।