নাসিম রুমি:ধর্মেন্দ্র তাঁর কেরিয়ারে ৬টি ব্লকবাস্টার এবং ৭টা সুপারহিট সহ ৭৫টি সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তবুও, তাকে কখনও সুপারস্টার ট্যাগ দেওয়া হয়নি।
বলিউড আইকন ধর্মেন্দ্র সোমবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। দীর্ঘ দু-সপ্তাহের লড়াই শেষ। হিন্দি সিনেমার হি-ম্যান চলে গেলেন তাঁর ৯০তম জন্মদিনের কেক কাটার আগে। ছয় দশক ধরে বিস্তৃত তাঁর কেরিয়ার। ৮৮ বছরেও দর্শককে চুম্বকের মতো পর্দায় আটকে রাখার জাদুমন্ত্র জানতেন তিনি।
এই মাসের শুরুতে স্বাস্থ্য ভীতি কাটিয়ে বাড়িতে ফিরেছিলেন। ফ্যানেরা আশা করেছিল এবারও মৃত্যুকে হারিয়ে দেবেন হিম্যান। কিন্তু তা ঘটল না। অ্যাকশন হিরো থেকে শুরু করে রোমান্টিক হিরো, সব চরিত্রেই তিনি পারফেক্ট। ধর্মেন্দ্র অন্য যে কোনও বলিউড নায়কের চেয়ে বেশি সাফল্যের স্বাদ পেয়েছিলেন বক্সঅফিসে। তবুও, সুপারস্টারের ট্যাগ তাঁর নামের পাশে বসেনি।
ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষাণ দেওল ১৯৬০ সালে ২৪ বছর বয়সে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ দিয়ে তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেছিলেন। পরের কয়েক বছর ধরে তিনি ‘বন্দিনী’, ‘আয়ি মিলন কি বেলা’ এবং ‘কাজল’-এর মতো হিট ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন।
ফুল অউর পাথর তাঁকে বক্স অফিস সফল তারকা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে। সত্তরের দশকের শেষ অবধি, ধর্মেন্দ্র ধারাবাহিকভাবে বলিউডের শীর্ষস্থানীয় তারকাদের মধ্যে ছিলেন। অনুপমা, আদমি অউর ইনসান, মেরা গাঁও মেরা দেশ, সীতা অর গীতা, শোলে, লোফার, ইয়াদোঁ কি বারাত, এবং ধর্ম বীরের মতো হিট ছবিতে উপস্থিত ছিলেন। আশির দশকে তিনি অ্যাকশন চলচ্চিত্রে মন দেন। বদলে কি আগ, গুলামি, লোহা এবং এয়লান-এ-জং-এর মতো স্বল্প-বাজেটের ছবি সাফল্য পায় তাঁর কাঁধে ভর করে। ৬৪ বছরের কেরিয়ারে, ধর্মেন্দ্র ৭৫ টি হিট ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, যা কোনও হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেতার প্রধান চরিত্রে সর্বাধিক। অমিতাভ বচ্চন (৫৭), রাজেশ খান্না (৪২), শাহরুখ খান (৩৫) এবং সালমান খান (৩৮) এর মতো সুপারস্টারদের মোট কেরিয়ার হিটের চেয়ে বেশি।
ধর্মেন্দ্রকে কেন কখনও সুপারস্টার বলা হয়নি?
ধর্মেন্দ্র তাঁর সমসাময়িক এবং জুনিয়রদের চেয়ে বেশি হিট দিয়েছিলেন, তবুও তিনি কখনই ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ তারকা ছিলেন না। ধর্মেন্দ্র যখন তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তখন এই ট্যাগটি দিলীপ কুমারের কাছে ছিল এবং পরে সত্তরের দশকে রাজেশ খান্না এবং পরবর্তীতে অমিতাভ বচ্চন খানিকটা লাইমলাইট কেড়েছিলেন। কিন্তু দর্শক মনে রাজত্ব করে গিয়েছেন গরম-ধরম। ইয়াদোঁ কি বারাত, মেরা গাঁও মেরা দেশ এবং ধরম বীর দুজন হিরোর ছবি। অন্যান্য নায়করা তখন নিয়মিত একক হিট দিচ্ছিলেন। আশির দশকে, যখন ধর্মেন্দ্র একক হিট দিয়েছিলেন, তখন চলচ্চিত্রগুলি অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্না বা ঋষি কাপুর অভিনীত ছবিগুলির চেয়ে ছোট বাজেটের ছিল। ৬টি ব্লকবাস্টার এবং ৭টি সুপার হিট ছবির মালিক ধর্মেন্দ্র। আশ্চর্যজনকভাবে নায়কের ১৫০টি ছবি ফ্লপ হয়েছিল, যা কোনও বলিউড তারকার জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর জেরেই হয়ত ধর্মেন্দ্র কখনও সুপারস্টার তকমা পাননি।
