English

26.6 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ১, ২০২৫
- Advertisement -

নৃত্যশিল্পে বিশেষ অবদান রাখা নৃত্যশিল্পী আমির হোসেন বাবুর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

এ কে আজাদ: আমির হোসেন বাবু। খ্যাতিমান নৃত্যশিল্পী, নৃত্যপরিচালক ও অভিনেতা। যিনি তাঁর সময়ে বাংলাদেশের সিনেমার অপরিহার্য্য একজন নৃত্যপরিচালক ছিলেন। গুণী এই নৃত্যপরিচালক আমাদের চলচ্চিত্রের গানকে অনেক সমৃদ্ধ করেছেন, তাঁর নৃত্যের ছন্দে। বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পে বিশেষ অবদান রাখা নৃত্যশিল্পী আমির হোসেন বাবুর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৩ সালের ৯ জুলাই, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল মাত্র ৫১ বছর। মৃত্যুদিবসে প্রয়াত আমির হোসেন বাবুর স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

আমির হোসেন বাবু ১৯৫২ সালের ২৮ মার্চ, ফেনী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মোঃ দেলোয়ার হোসেন, ওয়াসায় চাকরি করতেন। বাবার চাকরির সুবাদে পরিবারের সাথে পুরান ঢাকার আজিমপুরে বসবাস করতেন । ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট শাহীন স্কুল থেকে মেট্রিক ও ঢাকা কলেজ থেকে ডিগ্রী পাস করেন আমির হোসেন বাবু। নৃত্যকলায় ‘বাফা’ থেকে ডিপ্লোমা করেন তিনি। চার ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তাঁর ছোট তিন বোন- ডলি, শেলী, লিলি তিনজনই সুপরিচিত নৃত্যশিল্পী।

আমির হোসেন বাবুর প্রথম নৃত্য পরিচালিত ছবি রূপসনাতনের ‘দয়াল মুর্শিদ’ মুক্তিপায় ১৯৭৩ সালে।
তাঁর নৃত্য পরিচালনায় অন্যান্য ছবি- গুন্ডা, বাদশা, দস্যু বনহুর, দোস্ত দুশমন, বন্ধু, অলঙ্কার, সারেং বৌ, আরাধনা, জীবন নৌকা, অভিমান, অভাগী, ছোট মা, সুন্দরী, দোস্তী, লাল কাজল, খোকনসোনা, ঘর জামাই, নান্টু ঘটক, দুই রাজকুমার, জয় পরাজয়, রজনীগন্ধা, নাজমা, ক্ষুধা, কালো গোলাপ, সিকান্দার, বানজারান, নয়নের আলো, উজানভাটি, বাদল, রাজকন্যা, প্রিন্সেস টিনা খান, চোর, মান অভিমান, তালাক, ফুলশয্যা, দুনিয়াদারি, দেশবিদেশ, আওয়ারা, অশান্তি, মিস লোলিতা, আঁখি মিলন, মহা নায়ক, লালু মাস্তান, রাস্তার রাজা, রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত, সমর্পণ, স্বামী-স্ত্রী, ভেজা চোখ, জীবনধারা, যোগাযোগ, ভাইজান, ন্যায় অন্যায়, ব্যাথার দান, স্বপ্ন, নীতিবান, শিকার, মায়ের দোয়া, রাঙ্গাভাবী, জন্মদাতা, সত্য মিথ্যা, দোলনা, দাঙ্গা, পদ্মা মেঘনা যমুনা, অচেনা, বাদশা ভাই, বেপরোয়া, বন্ধু আমার, চোরের বউ, অন্ধ বিশ্বাস, অবুঝ সন্তান, কেয়ামত থেকে কেয়ামত, মৌসুমী, অন্ধপ্রেম, বিক্ষোভ, গোলাপী এখন ঢাকায়, রঙ্গীন সুজন সখি, পাপী শত্রু, মৌমাছি, নির্মম, তোমাকে চাই, আনন্দ অশ্রু, স্বজন, বাবা কেনো চাকর, বিয়ের ফুল, অনন্ত ভালবাসা, ভুলো না আমায়, শান্তি চাই, ভালবাসার ঘর, এ বাঁধন যাবে না ছিড়ে, মেঘলা আকাশ, দুই ভাইয়ের যুদ্ধ, হাসন রাজা, ইত্যাদি।

আমির হোসেন বাবু চলচ্চিত্রে তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। প্রথমবার ১৯৯২ সালে, ‘বেপরোয়া’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক, দ্বিতীয়বার ২০০১ সালে, ‘মেঘলা আকাশ’ ছবিতে শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।

নৃত্য পরিচালনার পাশাপাশি অনেকগুলো ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন। বিভিন্ন ছবিতে তিনি নানা রকমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। নায়ক-সহনায়ক-ভিলেন আবার কখনো ক্যাবারে ড্যান্সার।
আমির হোসেন বাবু অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে- আবার তোরা মানুষ হ, জিঘাংসা, বাদশা, যাদুর বাঁশি, পাগলা রাজা, দাতা হাতেমতাই, বারুদ, দোস্তী, সুখে থাকো, পেনশন, প্রেমিক, আওয়ারা, লালু মাস্তান, হৃদয়ের বন্ধন, অন্তরে ঝড়, অন্যতম।

ব্যক্তিজীবনে আমির হোসেন বাবু, প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর মৃত্যুর আগেই তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। সাবিনা-বাবু দম্পতীর একমাত্র ছেলে শ্রাবণ, বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী।

বীর মুক্তিযোদ্ধা, বরেণ্য নৃত্যশিল্পী, নৃত্যপরিচালক ও অভিনেতা আমির হোসেন বাবু। যিনি তাঁর সময়ে বাংলাদেশের সিনেমার অপরিহার্য্য একজন নৃত্যপরিচালক ছিলেন। গুণী এই নৃত্যপরিচালক আমাদের চলচ্চিত্রের গানকে অনেক সমৃদ্ধ করেছেন, তাঁর নৃত্যের ছন্দে। চলচ্চিত্রের সবার প্রিয়, সদা হাস্যোজ্বল, খোশ-গল্প প্রিয়, বন্ধুবৎসল একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন আমির হোসেন বাবু। বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পে তাঁর অবদান অবশ্য অবশ্যই স্মরণযোগ্য।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/41mp
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন