English

31.4 C
Dhaka
রবিবার, জুলাই ৬, ২০২৫
- Advertisement -

বীর মুক্তিযােদ্ধা ও অভিনেত্রী অমিতা বসু’র মৃত্যুবার্ষিকী আজ

- Advertisements -

এ কে আজাদ: অমিতা বসু। মঞ্চ, বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও বেতারের যেসব নাট্য শিল্পীরা, এই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করেছেন, তাদের মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী অমিতা বসুও। বীর মুক্তিযােদ্ধা ও অভিনেত্রী অমিতা বসু’র মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৫ সালের ১২ জুন, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। এই অভিনেত্রীর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তাঁর বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি।

অভিনেত্রী অমিতা বসু ১৯৪৬ সালের ১৯ মার্চ, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে, জন্মগ্রহণ করেন।
মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি অভিনয়জগতে আসেন।সালাহউদ্দিন পরিচালিত, ১৯৬৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আলোমতি’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম চলচ্চিত্রে আসেন তিনি।

অমিতা বসু অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে- যে আগুনে পুড়ি, বিন্দু থেকে বৃত্ত, জয় বাংলা, লালন ফকির, তিতাস একটি নদীর নাম, কে তুমি, চন্দ্রলেখা, দেবদাস, আলতাবানু, নাজমা, চন্দ্রনাথ, নিশানা, যুবরাজ, সমর্পণ, দেশবিদেশ, রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত, অন্ধ বিশ্বাস, অন্যতম।

তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকে জড়িত ছিলেন। তাঁর অভিনয় প্রতিভার স্বাক্ষর তিনি রেখেছেন বেতারেও। অমিতা বসু মঞ্চ-বেতার ও টেলিভিশন নাটকেরও জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারিত ঐতিহাসিক নাটক ‘জল্লাদের দরবার’-এ অভিনয় করেছিলেন অমিতা বসু।
তাঁর স্বামী অজয় বসুও অভিনয় জগতের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে অমিতা বসু, স্বপরিবারে ঢাকা ত্যাগ করে বাগেরহাট গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিছুদিন যেতেই পাকবাহিনীরা তাদের বাড়ি লুট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পােড়া ভিটে আঁকড়ে ধরেও তাঁদের পরিবার অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পায়নি। একসময় প্রিয় স্বদেশভূমি ত্যাগ করে ভারতে রওনা হন। কিন্তু সুন্দরবন এলাকায় আসতেই তিনি বাধাপ্রাপ্ত হন, এখানে পাক বাহিনীরা বাঙালি নিধন করে চলেছে। নিরুপায় হয়ে সুন্দরবনেই থেকে যান। এ সময়ে সুন্দরবন এলাকায় মুক্তি বাহিনীরা সংগঠিত হচ্ছিল। দেশের এ দুর্দিনে অকারণে বসে না থেকে, তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযােদ্ধাদের সাথে যােগ দেন, তাঁদের সাথে একনাগাড়ে তিন মাস কাজ করেন। ইতোমধ্যে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের কথা জেনে যায় পাকসেনারা। অমিতা বসুর আর সেখানে থাকা নিরাপদ মনে হয় না। মুক্তিযােদ্ধাদের সহায়তায় এবার ভারতে চলে যান। ভারতে গিয়ে তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যােগ দেন। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও বেতারের যেসব নাট্য শিল্পীরা, এই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করেছেন, তাদের মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী অমিতা বসুও।

অভিনেত্রী অমিতা বসু, বীর মুক্তিযােদ্ধাদের সাথে বাংলাদশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন। স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদান রাখার জন্যে তিনি বিভিন্ন সময়ে সম্মানিত হয়েছেন। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযােদ্ধা সংসদ তাঁকে ‘মুক্তিযােদ্ধা পদক’-এ ভূষিত করে। ১৯৯১ সালে ‘মুজিব নগর কর্মচারী সংসদ পদক’ প্রদান করে। ১৯৯৭ সালে ‘নারী প্রগতি সংঘ’ তাঁকে সম্বর্ধনা, ট্রফি ও সাটিফিকেট প্রদান করে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/d31y
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন