নাসিম রুমি: গত বছর গণঅভ্যত্থানে জোরালো ভূমিকা রাখেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। কখনো রাজপথে, কখনো সোশ্যাল মিডিয়ায়— রাজনীতি ও সমাজের নানা অসঙ্গতি নিয়ে সরব থেকেছেন। কিন্তু বাঁধনের এই সরব থাকাকে যেন ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে একটি বিশেষ মহল।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে বাঁধনকে নিয়ে নতুন অভিযোগ উঠেছে, তিনি নাকি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট! রবিবার (২৫ মে) এ নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাঁধন। এ অভিনেত্রীর দেওয়া ফেসবুক পোস্টে মিশে আছে— বিস্ময়, বিদ্রুপ আর সামান্য রসিকতা!
“আবারো ‘র’ এজেন্ট হয়ে গেলাম, কী দারুণ এক যাত্রা!”— এই বাক্য দিয়ে লেখা শুরু করেন বাঁধন। এ অভিনেত্রী লেখেন, “২০২১ সালে আমি একজন গর্বিত ‘র’ এজেন্ট ছিলাম। তবে সেটা বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত বলিউড সিনেমা ‘খুফিয়া’। ওই সিনেমায় আমার সহশিল্পী ছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী টাবু। যারা দেখেননি দেখে ফেলেন! ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে আছে।”
পরের ঘটনা বর্ণনা করে বাঁধন লেখেন, “ওই সিনেমায় অভিনয়ের পর ঘটনা নতুন মোড় নেয়। আমি ‘খুফিয়া’ সিনেমার প্রিমিয়ারে পর্যন্ত যেতে পারিনি। কারণ, ভারতীয় হাই কমিশন আমার ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিল-একবার নয়, পাঁচবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি নুর (নুরুল হক নুর) সঙ্গে আমার একটা ছবি দেখে ভারতীয় হাই কমিশন খুব চিন্তিত ছিল। ছবিটি আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলাম। শেষমেশ, ভিসার জন্য দেশের পরিচিত প্রভাবশালী মানুষদের সাহায্য নিতে হয়। হাই প্রোফাইল কিছু লোকজনের হাসাহাসির মাঝেই এক মাসের সিঙ্গেল-এন্ট্রি ভিসা পাই।”
ভিসা জটিলতার কারণে কাজ হারানোর তথ্য উল্লেখ করে বাঁধন লেখেন, “দুইজন প্রভাবশালী সূত্র থেকে জেনেছি, সিনেমার অন্যতম একজন নায়িকাও আমার ভিসা জটিলতায় জড়িত ছিলেন। সে ব্যক্তি কে ছিল তা অনুমান করা যেতে পারে! ভিসা জটিলতার কারণে টলিউড এবং বলিউডে অনেক ভালো কাজের সুযোগ হারিয়ে ফেলি। তবে থেমে থাকিনি।”
একবার বাঁধনকে ‘সিআইএ’-এর এজেন্টের তকমা দেওয়া হয়েছিল। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী লেখেন, “জুলাই মাসের আন্দোলনের সময় আমাকে বলা হলো সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ)-এর এজেন্ট। আমি নাকি ইউএসএআইডি থেকে টাকা নিয়ে ‘ঐতিহাসিক বিপ্লব’ চালিয়েছি। তারপর হলাম জামায়াতের এজেন্ট। কারণ, আমি তাদের এক নেতার ভিডিও আমার পেজে শেয়ার করেছিলাম।”
বাঁধন তার পোস্টটিকে মজার উল্লেখ লেখেন, “আমার এক বন্ধু বলল, আমি নাকি মোসাদের হয়েও কাজ করছি। আর গতকাল রাতে আবারো ‘র’ এজেন্ট হয়ে গেলাম! বর্তমান সরকারের ঘনিষ্ঠ একজন আমার কাছে সিরিয়াসভাবে জিজ্ঞেস করে বসল, “টাকা খাইছো নাকি?” আমাদের কী দারুণ একটা সমাজ! যে ব্যক্তি দেশকে ভালোবাসে না, সে ভাবে আর কেউ দেশকে ভালোবাসতে পারে না।