English

26.6 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ১, ২০২৫
- Advertisement -

একটি অপূর্ণতা আমাকে এখনো কষ্ট দেয়: সৈয়দ আব্দুল হাদী

- Advertisements -

সৈয়দ আব্দুল হাদী, দেশের কিংবদন্তির সংগীতশিল্পী। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান। ১৯৪০ সালের ১ জুলাই তার জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে। বেড়ে ওঠেন আগরতলা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং কলকাতায়। কলেজ জীবন কাটে রংপুর ও ঢাকায়।

বয়স খানিকটা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততাও কিছুটা কমিয়েছেন। তবে গান ছেড়ে দূরে যাননি। এখনও গানের সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গাইছেন বিভিন্ন আয়োজনে। আগামীকাল এ শিল্পীর জন্মদিন। দিনটি এলেই ভক্ত-শ্রোতাদের ভালোবাসায় তিনি মুগ্ধ হয়ে যান।

হাদী বলেন, ‘জন্মদিনকে আসলে আমি খুব বেশি গুরুত্ব দেই না। সেভাবে তাই পালনও করি না। তবে পরিবারের সদস্যদের থেকে একটু বাড়তি ভালোবাসা পাই, এটা আমার ভালো লাগে। শুভাকাক্সক্ষীরাও ফোন করে শুভেচ্ছা জানান, এটিও খুব উপভোগ করি। এটাই আমার আনন্দ।’

সৈয়দ আব্দুল হাদীর বাবা সৈয়দ আবদুল হাই ছিলেন ইপিসিএস (ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস) অফিসার। তবে তিনি গানও গাইতেন এবং কলেরগানে গান শুনতে পছন্দ করতেন। বাবার শখের গ্রামোফোন রেকর্ডের গান শুনে কৈশোরে সংগীত অনুরাগী হয়ে উঠেন আব্দুল হাদী। তখন থেকেই গাইতে গাইতে গান শিখেছেন। তবে তিনি হতে চেয়েছিলেন শিক্ষক। কিন্তু প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন সংগীতশিল্পী হিসেবে। জীবনের এ গল্পগুলো সৈয়দ আব্দুল হাদী তুলে এনেছেন তার লেখায়। ২০২২ সালে প্রকাশ করেছেন নিজের আত্মজীবনী ‘জীবনের গান’। এ বইয়ে উঠে এসেছে তার শৈশব, কৈশোর, যৌবন ও গানের জগতের পাশাপাশি চাকরি জীবনের অনেক ঘটনা।

এ প্রসঙ্গে হাদী বলেন, ‘আমার জীবনটা বেশ ঘটনাবহুল। অনেক চড়াই-উতরাই পার করে এখানে এসেছি। আছে সুখ-দুঃখের হাজারও ঘটনা। সেগুলো আমার অনুরাগীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার জন্যই বইটি লেখা।’

আড়াই বছর ধরে আত্মজীবনী লিখেছেন হাদী। এই দীর্ঘসময়ে তিনি অন্য কোনো কাজে মনোযোগ দেননি। অক্লান্ত পরিশ্রম আর আন্তরিকতা ঢেলে জীবনের গল্প পাঠকদের কাছে প্রকাশ করেছেন। এ বইয়ে শুধু তার কথাই লিখেছেন তা নয়, বর্ণনা দিয়েছেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উত্থানেরও।

সৈয়দ আব্দুল হাদী দেশাত্ববোধক গানের জন্য বিখ্যাত। ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গাইছেন। ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নিয়ে অনার্স পড়াকালীন সুবল দাস, পি.সি গোমেজ, আবদুল আহাদ, আবদুল লতিফ প্রমুখ তাকে গান শেখার ক্ষেত্রে সহায়তা ও উৎসাহ যোগান। ১৯৬০ সালে ছাত্রজীবন থেকেই সিনেমায় গান গাওয়া শুরু তার। ১৯৬৪ সালে তিনি একক কণ্ঠে প্রথম বাংলা সিনেমায় গান করেন। নাম ছিল ‘ডাকবাবু’। বেতারে গাওয়া তার প্রথম গান ‘কিছু বলো, এই নির্জন প্রহরের কণাগুলো হৃদয়মাধুরী দিয়ে ভরে তোলো’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশ হয় আব্দুল হাদীর প্রথম রবীন্দ্রসংগীতের একক অ্যালবাম ‘যখন ভাঙলো মিলন মেলা’।

সিনেমা এবং অ্যালবামে বহু কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন সৈয়দ আব্দুল হাদী। সিনেমায় গান গেয়ে সেরা শিল্পী হিসাবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন পাঁচ বার। সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক। এছাড়া পেয়েছেন আরও বিভিন্ন সম্মাননা।

নন্দিত এই শিল্পী কাজ করেছেন টেলিভিশন প্রযোজক হিসেবেও। ক্যারিয়ারে সাফল্যের চ‚ড়ায় উঠেছেন ঠিকই, তবে রঙিন জগতের স্রোতে মিশে যাননি। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দারুণ পরিপাটি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার ঝুলিতে রয়েছে অসংখ্য প্রাপ্তির গল্প। তবু কিছু অপ্রাপ্তি ও ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে যায়। জনপ্রিয় গুণী শিল্পীরও তেমনি একটি অপূর্ণ ইচ্ছা রয়েছে। দুঃখ নিয়েই তিনি বলেন, ‘সলিল চৌধুরীর সুরে আমার একটি গান করার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু সেটি আর সম্ভব নয়, কারণ তিনি জীবনের ওপারে চলে গেছেন। এই একটি অপূর্ণতা আমাকে এখনও কষ্ট দেয়।’

এখনও গানে নিয়মিত কিংবদন্তি এ সংগীতশিল্পী। এর বাইরে অবসরে লেখালেখি করেই সময় কাটান বলে জানিয়েছেন তিনি।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/jfi3
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন