English

27.1 C
Dhaka
শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৫
- Advertisement -

কি ভাবে নায়ক হলেন জাফর ইকবাল?

- Advertisements -

নাসিম রুমি: ১৯৭০ ও ১৯৮০র দশকে দর্শকদের মনে আলাদাভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। কারণ, তার ফ্যাশন, স্টাইল ছিল অন্যদের চেয়ে অনেকখানি এগিয়ে। এজন্য কেউ কেউ তাকে বাংলাদেশের এলভিস প্রিসলি বলেও অভিহিত করতেন।  এমনকি এই সময়ে এসেও তার মতো বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন, স্টাইলিশ তারকার দেখা মেলে না। তিনি নায়ক জাফর ইকবাল। বেঁচে থাকলে আজ ৭৫ বছরে পা রাখতেন তিনি। অর্থাৎ আজ তার জন্মদিন।

জাফর ইকবাল এমন একজন, যিনি গান ও সিনেমা দুই জগতেই দাপট দেখিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, দেশের সূর্যসন্তান হিসেবেও তার নামটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কেননা ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে তিনি সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন।

জাফর ইকবাল ১৯৫০ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের পর থেকেই পরিবারে সংগীতের চর্চা দেখেছেন। তার বড় ভাই আনোয়ার পারভেজ ছিলেন দেশের প্রথম সারির সুরকার-সংগীত পরিচালক। আর তার বোন শাহনাজ রহমতুল্লাহ তো বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী। পারিবারিক আবহে তাই জাফর ইকবালের মনেও বাসা বাঁধে সুর। কিন্তু তার মননে ছিল আধুনিকতা। পশ্চিমা, আন্তর্জাতিক সংগীত তাকে বেশি আকৃষ্ট করেছিল। তাই গিটারে হাত পাকিয়ে নেমে পড়েন ব্যান্ড মিউজিকে।

১৯৬৭ সালে বন্ধুদের নিয়ে ‘র‌্যাম্বলিং স্টোনস’ নামের একটি ব্যান্ড গঠন করেছিলেন জাফর ইকবাল। এই ব্যান্ডের হয়ে বহু কনসার্ট করেছিলেন তিনি। মজার ব্যাপার হল- কনসার্ট করতে গিয়েই তার নায়ক হওয়ার জার্নির শুরু হয়।

 

১৯৬৯ সালে এক অনুষ্ঠানে তিনি যখন মঞ্চে গিটার বাজিয়ে গলা ছেড়ে গাইছেন, তখন দর্শক সারিতে বসা নন্দিত নির্মাতা খান আতাউর রহমান। স্টেজের সেই সুদর্শন তরুণের মাঝে তিনি দেখতে পান আগামীর চিত্রনায়ককে। তাই নিজের পরবর্তী সিনেমা ‘আপন পর’-এ জাফর ইকবালকে কাস্ট করেন। আর এভাবেই গায়ক থেকে নায়ক হয়ে ওঠেন জাফর ইকবাল।

প্রায় দেড়শ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন এই অকালপ্রয়াত নায়ক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- ‘ভাই বন্ধু’, ‘অবদান’, ‘সাধারণ মেয়ে’, ‘ফকির মজনুশাহ’, ‘দিনের পর দিন’, ‘অংশীদার’, ‘সাত রাজার ধন’, ‘আশীর্বাদ’, ‘অপমান’, ‘এক মুঠো ভাত’, ‘নয়নের আলো’, ‘গৃহলক্ষ্মী’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘প্রেমিক’, ‘নবাব’, ‘প্রতিরোধ’, ‘ফুলের মালা’ ইত্যাদি।

সিনেমায় ব্যস্ত হয়ে পড়ায় গানে সেভাবে কাজ করতে পারেননি জাফর ইকবাল। তবে প্রকাশ করেছিলেন ‘কেন তুমি কাঁদালে’ শীর্ষক একটি একক অ্যালবাম। তার গাওয়া প্রায় দুইশ গানের মধ্যে ‘সুখে থেকো ও আমার নন্দিনী’, ‘এক হৃদয়হীনার কাছে’, ‘যেভাবেই বাঁচি বেঁচে তো আছি’, ‘শেষ করো না শুরুতেই খেলা’ গানগুলো কালজয়ী হয়ে আছে।

ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে মরণব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হন। নষ্ট হয়ে যায় তার হার্ট ও কিডনি। ফলে ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে।

তিনি চলে গেলেও কণ্ঠ ও অভিনয়ের কারণে আজও দর্শকের মাঝ বেঁচে আছেন তিনি। তার ঠোঁট মেলানো ‘আমার বাবার মুখে’, ‘আমার সারাদেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর’, ‘তুমি আমার জীবন’ কিংবা ‘চাঁদের সাথে আমি দেবো না তোমার তুলনা’ গানগুলোতে অমর হয়ে থাকবেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/h2og
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন