নাসিম রুমি: বাংলা সংগীতের আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্র নকীব খান। স্বাধীনতার পরপরই জন্মভূমি চট্টগ্রামে শুরু হয় তার সংগীতযাত্রা। কিশোর বয়সেই বালার্ক ব্যান্ডের হয়ে গান ও পিয়ানো বাজানোর মধ্য দিয়ে শিল্পীজীবনের সূচনা। এরপর ১৯৭৪ সালে যোগ দেন কিংবদন্তি ব্যান্ড সোলস-এ। প্রায় এক দশক সোলসের হয়ে কাজ করার পর বাবার মৃত্যুতে চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে আসেন ঢাকায়।
১৯৮৫ সালে গড়ে তোলেন নিজের স্বপ্নের ব্যান্ড রেনেসাঁ। সুর, সংগীত আর কবিত্বময় গানে ভর করে রেনেসাঁ হয়ে ওঠে শ্রোতাদের প্রিয় ব্যান্ড। সেই শুরু থেকে আজ অবধি শ্রোতার অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়েই পথচলা তার। এ বছর পূর্ণ হলো নকীব খানের সংগীতজীবনের অর্ধশত বছর।
এই দীর্ঘ যাত্রার মাইলফলক উদ্যাপন করতে শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের ক্রিস্টাল বলরুমে আয়োজিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘নকীব খান ফিফটি ইয়ারস সেলিব্রেশন’। আয়োজন করেছে টেলিভিশন জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (টিজেএফবি)।
অনুষ্ঠানে নকীব খানের অর্ধশতকজুড়ে পথচলা নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন তার সহকর্মী ও সমকালীন সংগীতশিল্পীরা। উপস্থিত ছিলেন খুরশীদ আলম, ফেরদৌস ওয়াহিদ, নাসিম আলী খান, রবি চৌধুরী,আসিফ আকবর, মনির খান, গীতিকার রিটন অধিকারী রিন্টু, সুরকার মিল্টন খন্দকারসহ আরও অনেকে। তারা বলেছেন নকীব খানকে নিয়ে তাঁদের স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার গল্প।
শুধু কথাতেই নয়, ছিলো গানও। নকীব খান নিজেই গেয়ে শোনাচ্ছেন তার জনপ্রিয় কিছু সৃষ্টি। পাশাপাশি তাঁর গান পরিবেশন করেছেন হুমায়রা বশির, আঁখি আলমগীরসহ নতুন প্রজন্মের শিল্পীরাও।
এই আয়োজনে নিয়ে টিজেএফবির সভাপতি রেদুয়ান খন্দকার বলেন, “নকীব খান আমাদের সংগীতজগতের এক জীবন্ত কিংবদন্তি। তাঁর ক্যারিয়ারের ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন করতে পেরে আমরা গর্বিত ও আনন্দিত। আশা করছি গান আর গল্পে ভরপুর এক স্মরণীয় আয়োজন হয়েছে।
এর আগে গত জানুয়ারিতে নকীব খানের এই সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইয়ামাহা ফ্ল্যাগশিপ সেন্টারেও এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই আবেগঘন কণ্ঠে শিল্পী বলেছিলেন, “৫০ বছর ধরে টিকে থাকা এবং মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়াটা অনেক বড় অর্জন। গান দিয়েই আমি সেই জায়গা পেয়েছি। আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা।”
অর্ধশতক পেরিয়ে নতুন স্বপ্ন ও নতুন সুরের আহ্বান নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন নকীব খান—বাংলা সংগীতের রেনেসাঁ।