এ কে আজাদ: সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রদর্শক, প্রযোজক, পরিবেশক। আমাদের দেশে চলচ্চিত্রশিল্পের শুরুতেই তার পরিবারের রয়েছে বিশেষ অবদান।
এদেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সবাক চলচ্চিত্র “মুখ ও মুখোশ” (১৯৫৬) এর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে তার পরিবারের (বড় ভাই মোশারফ হোসেন চৌধুরীর মাধ্যমে) এদেশের চলচ্চিত্রের সাথে সম্পর্ক শুরু হয়। এরপর প্রেক্ষাগৃহ, প্রযোজনা ও চলচ্চিত্র সামগ্রীর ব্যবসার মাধ্যমে ৭০ বছরেরও বেশী সময় ধরে এই পরিবারের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ঠতা অব্যাহত রয়েছে।
 ঐতিহ্যবাহী চলচ্চিত্র পরিবারের সদস্য ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। প্রয়াত সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ১৯৩৯ সালে, সিরাজগঞ্জ জেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাস করেন। বড় ভাই মোশাররফ হোসেন চৌধুরীর হাত ধরে ১৯৬১ সালে পাকিস্তান ফিল্ম ট্রাস্টের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। পঞ্চাশদশকের শুরু থেকেই তাদের এই প্রতিষ্ঠান বিদেশী চলচ্চিত্র পরিবেশনার কাজ করত। পরে আমাদের দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু হলে দেশী-বিদেশী সব ধরণের চলচ্চিত্রই পরিবেশনা করতেন। তাঁরা বাংলাদেশে ফুজি ফিল্মের এজেন্ট ছিলেন। একসময় নিজেরা বেশ কয়কটি সিনেমা হল তৈরি করে ও লিজ্ নিয়ে শুরু করেন প্রদর্শন ব্যবসা।
পরবর্তীতে চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবেও আত্নপ্রকাশ করেন। সারেন্ডার, বলবানসহ বেশ কিছু চলচ্চিত্র প্রযোজনার সাথে জড়িত ছিলেন সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি হিসেবে ৩ বার দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন।
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের কাছে একজন মৃদুভাষী, সজ্জন এবং ভালো মানুষ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। একজন দানশীল মানুষ হিসেবে খ্যাত এই মানুষটিকে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

