English

25.9 C
Dhaka
সোমবার, জুলাই ১৪, ২০২৫
- Advertisement -

জহির রায়হানের স্বপ্ন পূরণ করলেন আলমগীর কবির: ববিতা

- Advertisements -

নাসিম রুমি: ‘ধীরে বহে মেঘনা’, ১৯৭৩ সালে মুক্তি পাওয়া একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি রচনা এবং পরিচালনা করেছেন আলমগীর কবির এবং এটি তার পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। জহির রায়হানের স্বপ্ন আলমগীর কবিরই পূর্ণ করেন।

২০০২ সালে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ এশিয়ার চলচ্চিত্র তালিকায় সেরা ১০টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ৮ নম্বর অবস্থান লাভ করে ধীরে বহে মেঘনা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমিতে নির্মিত এ ছবিতে অভিনয় করেন ববিতা, গোলাম মুস্তাফা, আনোয়ার হোসেন, খলিল উল্লাহ খান প্রমুখ।

অতিথি শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন সুচন্দা। ছবির অন্যতম মুখ্যশিল্পী ববিতা ছবিটির স্মৃতিচারণা করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ‘ধীরে বহে মেঘনা’ চলচ্চিত্রের মূল পরিকল্পনা করেছিলেন জহির রায়হান। কাহিনি একটি বাঙালি পরিবারকে নিয়ে। প্রেক্ষাপট মুক্তিযুদ্ধ।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার হাত থেকে বাঁচতে নৌকাযোগে পালাচ্ছে পরিবারটি। সেই যাত্রার অনুষঙ্গ হিসেবে তুলে ধরা হয় যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের প্রামাণ্যরূপ। পরিকল্পনায় আলমগীর কবিরও সঙ্গী ছিলেন। স্বাধীন দেশের চলচ্চিত্র নিয়ে অনেক পরিকল্পনা ছিল জহির রায়হানের।১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে জহিরের নিরুদ্দেশে সবই হারিয়ে যায়। কেবল হারায়নি ‘ধীরে বহে মেঘনা’। সে দায়িত্ব কাঁধে নেন আলমগীর কবির। কিন্তু শুটিং শুরুর পর থেকেই দেখা দেয় পুঁজির অভাব।

শেষ পর্যন্ত সাহায্য নিতে হয় বাণিজ্যিক ছবির এক পরিবেশকের।তিনি টাকার জোগান দেন বটে, কিন্তু নাকও গলাতে থাকেন। অন্তত তিনবার বদলাতে হয় চিত্রনাট্য। ছবিতে ঢোকাতে হয় প্রেম। কমেডি। এমনকি গানও। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ঢাকায় এলে রাতারাতি তাকে রাজি করিয়ে ফেলেন। একদিনের মধ্যে গান লিখে সুর করে গাইয়ে নেওয়া হয়। ওদিকে কলাকুশলী নিয়েও চলে টানাপোড়েন। ক্যামেরাম্যানই বদলাতে হয় চারবার। কাঁচামালের অভাব, ক্যামেরা নষ্ট এসব তো ছিলই। তবে দুটো বিষয়ে কিছুতেই আপস করেননি আলমগীর কবির।

পরিবেশকের আপত্তি সত্ত্বেও ছবিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য ফুটেজ ব্যবহার করেন। আর মুক্তিযোদ্ধা চরিত্রে নেননি কোনো অভিনেতা। ১৯৭৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পায় ধীরে বহে মেঘনা। আলমগীর কবির যেহেতু জহির রায়হানের সঙ্গে কাজ করতেন তাই আমাকে ছবিটিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাস্ট করেন। আমি তখন সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ ছবিতে কাজ করে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হওয়ায় তিনি আমার খুব কদর করতেন। অসাধারণ মেধা ও মননের এ মানুষটি মুক্তিযুদ্ধের একটি অসাধারণ ছবি নির্মাণ করেছিলেন বলেই আজ ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের জন্য অসামান্য সম্মান বয়ে এনেছে ‘ধীরে বহে মেঘনা’।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/r47i
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন