নাসিম রুমি: কোটি মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে আছে ‘তোমারে লেগেছে এত যে ভালো/ চাঁদ বুঝি তা জানে’ গানটি। ষাটের দশকে মুক্তি পাওয়া রাজধানীর বুকে সিনেমার গান এটি। নায়ক ছিলেন রহমান এবং নায়িকা শবনম। সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন এহতেশাম।
ঢাকাই সিনেমার প্রথম রোমান্টিক নায়ক রহমান। বলা হয়, ষাটের দশকের প্রথম সফল নায়কও তিনি। ১৮ জুলাই তার প্রয়াণ দিবস ছিলো।
এই দিনে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন শবনম। তিনি বলেন, রাজধানীর বুকে সিনেমা দর্শকরা সাগ্রহে গ্রহণ করেছিল। খুব সাড়া পড়েছিল। আজও সিনেমাটির কথা মুখে মুখে ফেরে। বিশেষ করে এই সিনেমার ‘তোমারে লেগেছে এত যে ভালো/ চাঁদ বুঝি জানে’ গানটি মানুষ এখনো মনে রেখেছে। দর্শকরা জুটি হিসেবে আমাদেরকে সাদরে গ্রহণ করেন।
‘রহমানের সঙ্গে হারানো দিন সিনেমায় জুটি হিসেবে অভিনয় করি। দর্শকরা আবারও বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করেন। জুটি হিসেবে সফলতা বাড়তে শুরু করে। হারানো দিন সিনেমারও একটি গান সবাই গ্রহণ করেছিলেন—মন যে দোলে…। এভাবেই জুটি হিসেবে আমাদের সিনেমার কাজ এগিয়ে চলে,’ বলেন শবনম।
এই নায়িকা আরও বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে রহমান শুধু আমার নায়ক ছিলেন না, তিনি ছিলেন পারিবারিকভাবে ঘনিষ্ট। তার সঙ্গে ভাই-বোনের মতো চমৎকার একটা সম্পর্ক ছিল। আমার স্বামী রবিনের সঙ্গেও সুন্দর সম্পর্ক ছিল। মানুষকে সম্মান করার মতো বিষয়টি তার মধ্যে বেশ ছিল। তিনি যেমন আমাকে প্রচণ্ড সম্মান করতেন, একইভাবে আমিও অনেক সম্মান করতাম।’
‘রহমান অভিনয় নিয়ে ভাবতেন, সাধনা করতেন। শুটিং স্পটে অভিনয় ছাড়া কিছু ভাবতেন না। তার অনেক গুণ ছিল।’
তিনি বলেন, ‘কষ্টের বিষয় হচ্ছে, রহমান এবং আমি সিলেটের ওদিকে শুটিং করতে গিয়েছিলাম। সেই শুটিং করতে গিয়েই তিনি অ্যাকসিডেন্ট করেন। তারপরের গল্প তো সবার জানা। সেদিন তিনি কিছু সময়ের জন্য গাড়ি নিয়ে কোথাও গিয়েছিলেন। তারপরই দুঃসংবাদটি আসে, তিনি অ্যাকসিডেন্ট করেছেন। এই স্মৃতি ভোলার নয়।’
‘ওই দিন প্রচুর রক্ত ঝরলে বেঁচে যায়। এরপর তার জীবনে নেমে আসে কষ্টের সময়। সিনেমা থেকে অনেক দূরে চলে যায়, বলতে গেলে একা হয়ে পড়ে। একাকীত্ব ভর করে তার জীবনে। পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। ভাই-বোনের মতো দেখতাম দুজনকে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তার সঙ্গে সিনেমা করতে গিয়ে অনেক স্মৃতি। যখনই নসটালজিক হয়ে পড়ি, ফেলে আসা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে, নায়ক রহমানকে মনে পড়ে,’ বলেন শবনম।