English

27.6 C
Dhaka
শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫
- Advertisement -

পরিচালককে ধোঁকা, দুর্নীতির মামলায় নাম অভিনেত্রী হৈমন্তীর

- Advertisements -

টলিউডের মডেল-অভিনেত্রী হৈমন্তীর নাম নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে আসার পর টলিপাড়ায় শোরগোল পড়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে এসেছে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। গোপাল দলপতির সঙ্গে যোগসূত্র ধরেই হৈমন্তীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ হৈমন্তীর নাম প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন।

এবার তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন পরিচালক অতনু বসু। ‘অচেনা উত্তম’ ছবিতে একটি নার্সের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। ছোট্ট একটি সিনের জন্য তিন দিনের শ্যুটিং ছিল। উত্তমের চরিত্রে ছিলেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কী এমন ঘটল যে পরিচালক হৈমন্তীর দৃশ্য কেটে ছোট করে দিলেন ছবিতে? এমন কি, বিরক্ত পরিচালক ডাবিংও করতে ডাকেননি হৈমন্তীকে! অন্য শিল্পীদের দিয়ে ডাবিং করে দৃশ্যটি ছবির সঙ্গে জোড়া হয়।

পরিচালক অতনু বসু এই বিষয়ে জানালেন, ‘একদিন কাজ করতে না করতেই প্রযোজকের সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা করে ও। প্রযোজকের সঙ্গে পার্ক স্ট্রিটের এক হোটেলে দেখা করে এবং পরবর্তী ছবির পরিচালক হিসেবে অন্য একজনের নাম প্রস্তাব দেয়।’ খানিক আক্ষেপের সুরেই অতনু আরো বলেন, ‘আমি যে মেয়েটিকে কাজের সুযোগ করে দিলাম, তাঁর মধ্যে বিন্দুমাত্র পেশাদারিত্ব ছিল না। আমাকে না জানিয়ে আমার ছবি প্রযোজকের কাছে এক অন্য পরিচালকের হয়ে দরবার করতে চলে গেল। এটা আমার কাছে অত্যন্ত নিম্ন রুচির পরিচয় বলে মনে হয়েছিল’।

পরিচালক অতনু বসুর মনে হয়েছে, এটা যেন কোথাও ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাওয়ার মতো বিষয় ছিল। তাঁর এই ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে অতনু তাঁকে আর ডাবিংয়ের জন্য ডাকেননি এবং তাঁর ছবির দৃশ্যটিকেও এডিট করে যথাসম্ভব ছোট করে দেন।

হৈমন্তীর উত্থান অনেকটা ধুমকেতুর মতো। চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে মার্জার সরণী থেকে রুপোলি জগতে পা রেখেছিলেন বেহালার হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৮ সালে ‘জাল’ ছবিতে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে দোলন রায়ের মতো অভিনেতারা সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তারপর দু’ একটা অনামী  ছবিতে দেখা গিয়েছিল হৈমন্তীকে। শোনা যায় এর পরেই নাকি ক্যারিয়ার গড়ার উচ্চাকাঙ্কা নিয়ে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। আবার কেউ বলেন, তিনি নাকি ‘জাল’ ছবির প্রযোজকের সঙ্গিনী ছিলেন। টলিউডে কান পাতলে হৈমন্তীকে নিয়ে অনেক টক ঝাল মিষ্টি খবর রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গোপাল দলপতির সঙ্গে তাঁর নাম উঠে আসায় অনেকেই বলছেন, টালিগঞ্জে হৈমন্তী একজনের সঙ্গে দীর্ঘদিন লিভ ইন সম্পর্কে ছিলেন। সেই ব্যক্তিই কি গোপাল দলপতি ছিলেন?

বিগত দু’বছর ধরে টলিউড ইন্ডাস্ট্রির কারও সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ রাখেননি মডেল অভিনেত্রী হৈমন্তী। প্রায় দু’ বছর আগে ‘জাল’ ছবির পরিচালক শ্যামল বসুকে ফোন করে বলেছিলেন তাঁর হাতে প্রযোজক রয়েছে, একটি ছবি শ্যামল বসুর সঙ্গে তৈরি করতে চান। যেখানে হৈমন্তী নায়িকা হবেন। কিন্তু তারপর আর হৈমন্তী যোগাযোগ করেননি। ফোন নম্বরও বদলে ফেলেছেন। টলিউড ইন্ডাস্ট্রির যাঁদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল তাঁদের কারও সংস্পর্শে তিনি নেই। প্রায় কেউই জানেন না হঠাৎ করে ধুমকেতুর মত কোথায় উড়ে গেলেন হৈমন্তী!

এখন প্রশ্ন উঠছে, প্রযোজক আছে বলে ছবি তৈরি করার জন্য হৈমন্তী পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন কি নিয়োগ দুর্নীতির টাকার ভরসাতেই? আরও বড় প্রশ্ন, হৈমন্তের লিভ ইন পার্টনার কি গোপাল দলপতিই ছিলেন? তাহলে কি তার টাকাই টলিউডে ইনভেস্ট করার জন্য হৈমন্তী পথ খুঁজছিলেন?

হৈমন্তী টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে তারকা হতে এসেছিলেন। কিন্তু সেভাবে অভিনয় দক্ষতা ছিল না। তাই প্রযোজকদের সাহায্য নিয়ে বিকল্প পথ বেছে নিয়েছিলেন। হৈমন্তীকে নিয়ে এরকম আরও নানা কৌতুহলী প্রশ্ন রয়েছে। যা হয়তো এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টলিউডের এক ব্যক্তি জানান, চটকদার চেহারা ছাড়া ক্যামেরার সামনে আসবার কোনও গুণই ছিল না হৈমন্তীর, অগত্যা সুপারিশই ভরসা ছিল। প্রযোজক হাতানো ছাড়া অন্য উপায় ছিল না হৈমন্তীর, তেমনই বলছে পরিচিতরা।

এদিকে কুন্তলের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা ঢুকেছে হৈমন্তী ও আরমান (ওরফে গোপাল দলপতি)-এর যৌথ অ্যাকাউন্টে। এই রহস্যময়ীকে ঘিরে দানা বাঁধছে হাজারো প্রশ্ন, যা নিয়োগ দুর্নীতি মামলার মোড় ঘোরানোর জন্য যথেষ্ট বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/4y3x
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন