English

29.6 C
Dhaka
মঙ্গলবার, আগস্ট ১২, ২০২৫
- Advertisement -

প্রাপ্তবয়স্ক যে ছবিগুলো গল্পেও নজর কেড়েছে দর্শকের

- Advertisements -

প্রাপ্তবয়স্ক ছবি বলতে আমরা বুঝি এমন কিছু ছবি, যা সাধারণ বিনোদনের গণ্ডি পেরিয়ে যৌনতার সংবেদনশীল দিকগুলো খোলামেলাভাবে তুলে ধরে। প্রাপ্তবয়স্ক ছবিগুলো শুধু খোলামেলা দৃশ্যের জন্য আলোচিত হয়। তবে আজ এমন পাঁচটি ছবি নিয়ে প্রতিবেদন, যেগুলো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য হলেও এর গল্প মানুষের আবেগ, আকাঙ্ক্ষা এবং সম্পর্কের জটিল দিক নিয়ে ভাবতে শেখায়। এই ছবিগুলো প্রমাণ করে যে, যৌনতা ও সম্পর্ক নিয়ে পরিপক্ব আলোচনা করতে হলে সাহসী গল্প বলা জরুরি।

গল্প, নির্মাণশৈলী ও অভিনয়ের জন্য দর্শকদের মনে আলাদা ছাপ ফেলেছে এই পাঁচ ছবি।

আইস ওয়াইড শাট (১৯৯৯)
ডাক্তার বিল হারফোর্ড (টম ক্রুজ) এবং তার স্ত্রী অ্যালিস হারফোর্ড (নিকোল কিডম্যান) নিউইয়র্ক শহরের উচ্চবিত্ত সমাজের সুখী দম্পতি। এক পার্টির রাতে কিছুটা মাতাল অবস্থায় অ্যালিস স্বীকার করেন, একসময় তিনি অন্য একজন অপরিচিত নৌবাহিনীর অফিসারের জন্য তীব্র আকর্ষণ অনুভব করেছিলেন এবং স্বামীর সব কিছু ছেড়ে চলে যাওয়ারও মানসিকতা ছিল। অ্যালিসের এই অকপট স্বীকারোক্তি বিলকে মানসিকভাবে আলোড়িত করে তোলে।

এখান থেকে বিলের মধ্যে সন্দেহ, কৌতূহল এবং পুরুষসুলভ ইগোর সংঘাত শুরু হয়। তিনি রাতভর শহরে ঘুরে বেড়ান এবং নানান ধরণের প্রলোভন এবং রহস্যের সম্মুখীন হন।

এই মনস্তাত্ত্বিক প্রাপ্তবয়স্ক থ্রিলারটি শুধুমাত্র যৌনতার ওপর ভিত্তি করে নয়, বরং মানুষের সম্পর্ক, কামনা এবং অবচেতনের জটিল দিকগুলোর অন্বেষণ করেছে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সন্দেহ, কৌতূহল এবং ইচ্ছার সংঘাত সিনেমাটিতে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে।

সিনেমার ধীরগতির কাহিনি ও রহস্যময় পরিবেশ এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয়। স্ট্যানলি কুব্রিকের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন টম ক্রুজ ও নিকোল কিডম্যান।

ব্লু ইজ দ্য ওয়ার্মেষ্ট কালার (২০১৩)

অ্যাডেল নামের এক কিশোরীর গল্প, যে নিজের যৌন পরিচয় এবং ভালোবাসা খুঁজে পাওয়ার যাত্রায় এগিয়ে যায়। অ্যাডেল একটি সাধারণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। প্রথমদিকে সে নিজের অনুভূতি নিয়ে দ্বিধায় থাকে, কারণ তার ছেলেবন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কটা যেন কোথাও আটকে আছে।

এরপর অ্যাডেলের জীবনে আসে এমা। প্রথম দেখা থেকেই অ্যাডেল ভেতরে ভেতরে কিছু টের পায়, যেন এই মেয়েটি তার জীবনে বিশেষ কিছু। ধীরে ধীরে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে, যা পরে রূপ নেয় প্রেমে।

এটি শুধুমাত্র একটি প্রেমের গল্প নয়, বরং আত্ম-আবিষ্কারের একটি সংবেদনশীল যাত্রা। সাহসী, খোলামেলা এবং বাস্তবধর্মী। সিনেমার দীর্ঘ এবং স্পষ্ট যৌন দৃশ্য অনেক বিতর্কের জন্ম দিলেও, এটি মূলত চরিত্রের গভীর সংযোগ এবং আবেগের পরিপূর্ণতা তুলে ধরার মাধ্যম। আব্দেললতিফ কেচিচের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন লি সিডক্স, অ্যাডেল এক্সারচপোলস, জেরেমি লাহের্ত প্রমুখ।

বেসিক ইন্সটিংক্ট (১৯৯২)
এই সিনেমাটি ইরোটিক থ্রিলারের এক কালজয়ী ক্লাসিক। ডগলাস এবং স্টোনের দুর্দান্ত রসায়ন এবং গল্পের টানটান উত্তেজনা সিনেমাটিকে আলাদা মর্যাদা দিয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের এক প্রখ্যাত রকস্টারকে নৃশংসভাবে হত্যা করার মাধ্যমে সিনেমার গল্পের শুরু। তদন্তের দায়িত্ব পড়ে গোয়েন্দা নিক কারান (ডগলাস)-এর ওপর। খুনের ধরন এতটাই ঠাণ্ডা মাথায় ঘটানো যে, সন্দেহের তীর দ্রুতই ঘুরে যায় নিহত ব্যক্তির প্রেমিকা এবং রহস্যময় লেখিকা ক্যাথরিন ট্রামেল (শ্যারন স্টোন)-এর দিকে।

রহস্যময় লেখিকা ক্যাথরিন ট্রামেলের চরিত্রে শ্যারন স্টোন এক অনন্য ছাপ ফেলেছেন। সিনেমার বিখ্যাত সেই ‘ইন্টারোগেশন সিন’ আজও আলোচনার বিষয়। চিত্রনাট্য এবং পটভূমির গা ছমছমে পরিবেশ দর্শককে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আটকে রাখে। পল ভারহোভেন পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন মাইকেল ডগলাস এবং শ্যারন স্টোন।

দ্য ড্রিমারস (২০১৩)
১৯৬৮ সালের গল্প। সিনেমাপ্রেমী এক আমেরিকান তরুণ ম্যাথিউ, পড়াশোনার জন্য প্যারিসে এসেছে। সেখানেই তার পরিচয় হয় জমজ ভাইবোন থিও এবং ইসাবেল-এর সঙ্গে। তারা দুজনও চলচ্চিত্র এবং শিল্প-সাহিত্যের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত। একদিন ম্যাথিউ জানতে পারে, থিও ও ইসাবেলের বাবা-মা শহরের বাইরে যাচ্ছেন। তারা ম্যাথিউকে আমন্ত্রণ জানায় তাদের বাসায় কয়েকদিন থাকার জন্য। এই সুযোগেই তিনজনের মধ্যে তৈরি হয় এক অদ্ভুত, অন্তরঙ্গ এবং অনন্য বন্ধন। ধীরে ধীরে তাদের কথোপকথন, উষ্ণতা আর চলচ্চিত্র নিয়ে আলোচনা এক প্রকার সাহসী এবং পরীক্ষামূলক সম্পর্কের দিকে মোড় নেয়। তিন তরুণ-তরুণী তাদের যৌবনের কৌতূহল ও স্বাধীনতার খোঁজে যৌনতা, ভালোবাসা এবং পরিচয়ের সীমা পেরিয়ে যায়।

পরিচালক বার্তোলুচ্চি তাঁর নান্দনিক পরিচালনার মাধ্যমে যৌনতা ও মুক্তচিন্তার সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন অনন্যভাবে। এতে অভিনয় করেছেন ইভা গ্রিন, লুইস গ্যারেল ও মাইকেল পিট।

নিম্ফোম্যানিয়াক (২০১৩)
যৌনতা আর বাস্তবতার গল্পকে নির্মাতা বেঁধেছেন এক সূতায়। গল্পের প্রধান চরিত্র জো ধীরে ধীরে তার জীবনের সব অধ্যায় বলতে শুরু করে। শৈশব থেকে কৈশোর, তারপর প্রাপ্তবয়স্ক জীবনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিটি ধাপেই যৌনতা তার জীবনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায়। ছোটবেলা থেকেই সে বুঝতে পারে, সে সাধারণ নয়, তার মধ্যে আছে তীব্র যৌন আকর্ষণ। জো’র প্রথম যৌন সম্পর্ক, বন্ধুদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে অধিক সংখ্যক পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার খেলা- এসবের মধ্যে দিয়ে গল্প এগোতে থাকে।

পর্দায় যৌনতার সব সীমারেখা পার করা এ সিনেমা নিছক কোনো যৌনতার সিনেমা নয়, বরং এটি এক নারীর যৌন-আবিষ্কারের গভীর আত্মজৈবনিক উপাখ্যান। গল্পের গাঁথুনি এবং দার্শনিক কথোপকথন সিনেমাটিকে প্রাপ্তবয়স্ক সিনেমার চেয়েও বেশি কিছুতে পরিণত করেছে। লার্স ভন ট্রিয়ায়ের পরিচালনায় এতে অভিনয় করেছেন চারলট গেইনসবর্গ, মিয়া গথ, লেসি মার্টিন, উইলিয়াম ড্যাফো প্রমুখ।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/apds
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন