স্যান্ড্রা বুলক, হলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। নিষ্ঠা এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে যিনি ক্যারিয়ারে ব্লকবাস্টার হিটের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। অভিনয় জীবনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অংশ হয়েছেন এবং এমনকি অভিনয়ের জন্য বিভিন্ন প্রশংসাও অর্জন করেছেন।
পেশাদার ক্যারিয়ারে অন্য কারও মতো ততটা বিতর্কিত না হলেও ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে গেছেন সান্ড্রা। প্রকাশ্যে যে কেউ তাকে সুখি বলতে বাধ্য। কারণ, সবসময় মুখে একটি সাহসী এবং উজ্জ্বল হাসি ধরে রাখতেন তিনি। কিন্তু তার স্বামীর দ্বারা প্রতারিত হওয়া থেকে শুরু করে জীবনসঙ্গী মৃত্যুর কাছে পরাজিত-সবকিছুই দেখেছেন তিনি। সংসার জীবনে দুই সন্তানের মা স্যান্ড্রা এখন অবিবাহিত, কিন্তু একসময় তার অতীতে বেশ রঙিন সম্পর্ক ছিল। যেসব সম্পর্ক মধ্যে সবসময় উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে।
একজন সেলেব্রিটি হওয়ার অর্থ হল ভক্ত কিংবা জনসাধারণ দ্বারা ক্রমাগত প্রশ্ন কিংবা সংবাদমাধ্যম কর্তৃক তদন্তের মুখোমুখি হওয়া। স্যান্ড্রাও এর ব্যতিক্রম নন। ভক্তরা সবসময় জানতে চেয়েছেন তিনি কার সঙ্গে ডেট করেছেন বা বিয়ে করেছেন।
অভিনেত্রীর প্রথম প্রেম ছিল টেট ডোনোভানের সঙ্গে। ১৯৯২ সালে ‘লাভ পোশন নং ৯’ সিনেমার সেটে দেখা হয়েছিল তাদের। তিন বছর প্রেম করার পর করার পর বাগদান করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্ক টেকেনি। ১৯৯৪ সালে তারা আলাদা হয়ে যান।
এরপর স্যান্ড্রার দেখা হয় ১৯৯৬ সালে ম্যাথিউ ম্যাককনাঘির সঙ্গে ১৯৯৬ সালে ‘অ্যা টাইম টু কিল’ সিনেমার সেটে। প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়েন তারা। কয়েক বছর ধরে সম্পর্কে থাকলেও সেটি তারা গোপন রাখার চেষ্টা করেন। পরে অবশ্য সেটা আর গোপন থাকেনি। কিন্তু ঘর বাঁধাও হয়নি তাদের। তবে, বিচ্ছেদের পরেও তারা বন্ধু ছিলেন।
ম্যাথিউর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর বেশিদিন একা ছিলেন না স্যান্ড্রা। রায়ান গসলিংয়ের সঙ্গে প্রেমের গুজবে আবারও তার ব্যক্তিগত জীবন সামনে আসে। কিন্তু সেটা অস্বীকার করেন অভিনেত্রী। বলেছেন, তাদের মধ্যে শুধুই বন্ধুত্ব। তবে ম্যাথিউ ম্যাককনাঘির সঙ্গে বিচ্ছেদের পর, অভিনেত্রী বব্লাইডারের সঙ্গে দুই বছর ডেট করেছিলেন। কিন্তু ২০০০-এর গোড়ার দিকে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে।
২০০৫ সালে, স্যান্ড্রা বুলক জেসি জেমসকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের ৪ বছরের মধ্যেই জেসির প্রতারণা ও কেলেঙ্কারির গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ২০১০ সালে, অভিনেত্রী জেসির বিরুদ্ধে অন্যনারীর সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ আনেন। একই সয়ে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন। সেই সময়ে, তিনি ২০০৯ সালে তার ‘ব্লাইন্ড স্লাইড’ সিনেমার জন্য নিজের প্রথম অস্কার জিতেছিলেন স্যান্ড্রা। একই সময় একটি ছেলে সন্তানও দত্তক নেন।
বিবাহবিচ্ছেদের ফলে তার সন্তান কীভাবে প্রভাবিত হচ্ছিল তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে, অভিনেত্রী সিবিএস সানডে মর্নিং-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমি বলতে চাইছি, অনেক কিছু ঘটে গেছে। আপনি কীভাবে শোক সামাল দেন এবং এই প্রক্রিয়ায় আপনার সন্তানকে আঘাত না করেন? বাচ্চাটি ছিল একেবারেই ছোট। এই বয়সে তারা আপনার অনুভূতির সবকিছু গ্রহণ করে। তাই, আমার কর্তব্য ছিল তার প্রতি এবং তার জীবনের প্রথম বছরকে আমার শোক দিয়ে কলঙ্কিত না করা।’
স্বামী কর্তৃক প্রতারণার পরও অভিনেত্রীর ব্যক্তিজীবনে প্রেমের অধ্যায় থেমে থাকেনি। অভিনেত্রী এরপর ব্রায়ান র্যান্ডাল নামে একজন আলোকচিত্রীর মধ্যে তার সুখ এবং ভালোবাসা খুঁজে পান। ২০১৫ সালে তার ছেলের জন্মদিনের পার্টিতে ছবি তোলার সময় তাদের দেখা হয়েছিল। এর পরপরই, এই জুটি ডেটিং শুরু করে। ২০২৩ সালে মারাক্তক একটি রোগের সঙ্গে তিন বছর লড়াই করার পর ব্রায়ানের মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত এটি ছিল সান্ড্রার জীবনে রংধনু এবং রোদের আলো। বুলক তাকে ‘তার জীবনের ভালোবাসা’ বলতেন। এখনও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এই দুঃখজনক ও কষ্টের অধ্যায় স্মরণ করে অভিনেত্রীর চোখ ছলছল করে। কখনও কখনও দু’ফোঁটা অশ্রুও গড়িয়ে পড়ে।
এদিকে কাজের সূত্রে অভিনেত্রীকে সর্বশেষ ‘বুলেট ট্রেন’ সিনেমায় বড়পর্দায় দেখা গেছে। এটি মুক্তি পেয়েছে ২০২২ সালে। বর্তমানে তিনি কিয়ানু রিভসের সঙ্গে জুটি বেঁধে নতুন একটি প্রজেক্ট নিয়ে দর্শকদের সামনে হাজির হচ্ছেন বলে জানা গেছে। নাম ঠিক না হওয়া এ সিনেমাটি একটি রোমান্টিক থ্রিলার।