দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২১ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘ফ্যামিলি ম্যান সিজন থ্রি’। বিশ্বের ২৪০টির বেশি দেশে একযোগে মুক্তি পেলেও এবার দর্শক প্রতিক্রিয়া মিশ্র। কিছু দর্শক এই সিজনটিকে ভালো বললেও অনেকেই বলছেন, আগের দুই সিজনের মূল যে বিষয় সেটাই এখানে অনুপুস্থিত। বিশেষ করে স্ক্রিনপ্লে অনেকটাই দুর্বল।
কেমন হলো নতুন সিজন?
আগের মতোই মনোজ বাজপেয়ী শ্রীকান্ত তিওয়ারির চরিত্রে ফিরেছেন, কিন্তু সেই আগের ‘মিডল ক্লাস স্পাই’এর আবেগ, স্বাভাবিক হাস্যরস আর তীক্ষ্ণ উপস্থিতি যা এই চরিত্রটিকে জনপ্রিয় করেছিল তা এই সিজনে ততটা পাওয়া যায়নি।
আগের দুই সিজনের মূল ভাব অনুপস্থিত
এই সিজনের বড় দুর্বলতা হলো আগের দুই সিজনের সেই পরিচিত ফ্লেভার ধরে রাখতে না পারা। কমেডির ছন্দ অনেকটা হারিয়ে গেছে, শ্রীকান্ত ও জে কে এর দারুণ রসায়ন প্রায় অনুপস্থিত, আর গল্পের গতি অনেক দৃশ্যে অকারণে থেমে গেছে। ফলে সিজনটি ব্যর্থ হয়েছে।
গল্পে দুর্বলতা, উত্তরহীন প্রশ্ন
তৃতীয় সিজনের গল্প সাজানো হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারত, চীন অ্যাঙ্গেল, কর্পোরেট অস্ত্র চুক্তি, সীমান্ত রাজনীতি। যেখানে অনেক কিছু একসাথে আনতে গিয়ে এবার কিছুটা খিচুড়িই রান্না করা হয়েছে। যে কারণে গল্প অনেকটাই খাপছাড়া লেগেছে। এছাড়াও ভিলেনদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট নয়, গল্পের মধ্যে অনেক কিছুই লজিকলেস লেগেছে এবং আগের সিজন থেকে ঝুলে থাকা প্রশ্নগুলোরও কোনো সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায়নি। যদিও অ্যাকশন দৃশ্য শক্তিশালী বিশেষ করে প্রথম এপিসোডের শেষ দৃশ্যের অ্যাকশন ছিল অসাধারণ।তবে ইমোশন এর অনুপস্থিতির কারণে গল্পের টান ধরে রাখতে পারেনি।
মনে হয়েছে, সিজন ৩ নয়, সিজন ৪ এর প্রস্তুতি
শেষের কয়েকটি দৃশ্য দেখলে বোঝা যায় পুরো সিজনটি যেন পরবর্তী সিজনের জন্য গ্রাউন্ড তৈরি করেছে। ওপেন এন্ডিং ছিল বরাবর তবে যেটা আশা ছিল আরও বেশি লজিকাল ও শক্তিশালী হবে।
আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু: জয়দীপ আহলোয়াত
এই সিজনে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন জয়দীপ আহলোয়াত। রুকমা চরিত্রে তার উপস্থিতি প্রায় প্রতিটি দৃশ্যে আলাদা শক্তি যোগ করেছে। “এই সিজন যতটা না মনোজ বাজপেয়ীর, তার চেয়ে বেশি জয়দীপ আহলোয়াতের।” তার অভিনয়ই সিজনের সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক হিসেবে আলোচনা পাচ্ছে।
ফাইনাল ভারডিক্ট
‘ফ্যামিলি ম্যান থ্রি’ বড় ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। একদিকে অ্যাকশন এবং কিছু শক্তিশালী মুহূর্ত আছে, কিন্তু গল্পের অসামঞ্জস্য, চরিত্রের গভীরতার অভাব, কমেডির ব্যর্থতা, আগের সিজনের অসমাপ্ত প্রশ্ন এবং সিজন ৪-এর জন্য অতিরিক্ত প্রস্তুতিমূলক টোন। সব মিলিয়ে একটা বিশাল হতাশাই সৃষ্টি করেছে।
তবুও জয়দীপ আহলোয়াতের বাজিমাত করা অভিনয় এবং কিছু শক্তিশালী দৃশ্য পুরো সিজনটিকে একেবারে ডুবতে দেয়নি।
