দিল্লির রাস্তা থেকে বেওয়ারিশ কুকুরগুলো সরিয়ে দিল্লি-এনসিআর এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন বলিউড তারকারা। জন আব্রাহাম, জাহ্নবী কাপুর, বরুণ ধাওয়ান ও কৌতুকশিল্পী বির দাসসহ অনেকেই এই রায়কে অমানবিক বলে আখ্যা দিয়েছেন।
গত ১১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি ও আশপাশের এলাকা থেকে সব বেওয়ারিশ কুকুর সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার নির্দেশ দেয়। কারণ হিসেবে বাড়তে থাকা কুকুরের আক্রমণ ও জলাতঙ্কের আশঙ্কা তুলে ধরা হয়।
প্রাণী অধিকার রক্ষায় বহু বছর ধরে কাজ করা অভিনেতা জন আব্রাহাম প্রধান বিচারপতি বিচারপতি বি.আর. গাভাইয়ের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এই রায় পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে তিনি লেখেন, এরা ‘স্ট্রে’ নয়, বরং কমিউনিটি ডগ-যারা বহু প্রজন্ম ধরে মানুষের প্রতিবেশী হিসেবে এখানেই বাস করছে। এই নির্দেশনা সরাসরি অ্যানিমাল বার্থ কন্ট্রোল (এবিসি) রুলস, ২০২৩ এবং সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায়গুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯০ সালেই বলেছিল-পথের কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের একমাত্র কার্যকর ও বৈজ্ঞানিক উপায় হলো নির্বীজন ও টিকাদান, যা পরে তাদের নিজ এলাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, জয়পুরে ৭০ শতাংশ ও লখনউতে ৮৪ শতাংশ কুকুর নির্বীজন করা হয়েছে এবং এর ফলে জলাতঙ্ক কমেছে, কুকুর শান্ত হয়েছে ও আক্রমণও হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু কুকুর সরিয়ে নেওয়া কখনোই কার্যকর সমাধান নয়। “দিল্লিতে প্রায় ১০ লাখ কুকুর আছে-তাদের সবাইকে সরিয়ে নেওয়া বাস্তবসম্মত বা মানবিক নয়। এতে বরং নতুন, অপরিচিত, অনির্বীজিত ও অটিকাপ্রাপ্ত কুকুর এসে এলাকাগুলোতে ঢুকে পড়বে-মন্তব্য জনের।
তিনি সুপ্রিম কোর্টকে আহ্বান জানান-আইনসম্মত, মানবিক ও কার্যকর এবিসি পদ্ধতিকে সমর্থন করে এই রায় পরিবর্তন করতে, যা জনস্বাস্থ্য ও সংবিধানের সহমর্মিতা ও সহাবস্থানের নীতিকে রক্ষা করবে।
জনের পাশাপাশি বরুণ ধাওয়ান ও জাহ্নবী কাপুরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই নির্দেশের বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা একে “সব কুকুরের জন্য মৃত্যুদণ্ড” বলে মন্তব্য করেছেন। কৌতুকশিল্পী বির দাসও রায়টির সমালোচনা করে কুকুরদের ‘দিল্লিওয়ালা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।