মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জুনিয়র সেকশনের ভবনে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তর ঘটনায় পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম, শিক্ষিকা মাহরীন চৌধুরীসহ ৩২ জন নিহত ও বহু হতাহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনাটি পুরো জাতিকে গভীর শোকের সাগরে ভাসিয়েছে।
কেউ আবার দুর্ঘটনাটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নানা গুজব ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই মাইলস্টোনের শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। সোমবার দুপুরে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার সময় তিনিও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আটকা পড়েন একটি ক্লাসরুমে। তার দাবি- স্কুল ছুটি হওয়ার পর এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। ফলে ক্লাসরুমে আটকা পড়া বা দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা খুব বেশি না। সঙ্গে এও জানান, নিহতদের সংখ্যা নিয়েও কোনো রকম লুকোচুরি করা হচ্ছে না।
তবে পূর্ণিমা দাসের কথা মানতে নারাজ অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। আজ বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে অভিনেত্রী বলেন, ‘উক্ত পূর্ণিমা দাসের স্ট্যাটাসটি আমাকে খুব “বিরক্ত” করছে। কেন করছে, সেটা বলছি। যেখানে স্কুলের হেড পিয়ন নিজেই বলেছে, স্কুল ছুটি হয় ১টা ৩০ মিনিটে, এমনকি অনেক স্টুডেন্ট ও একই কথা বলেছে। প্লেন ক্র্যাশের সময় ক্লাস চলছিল, ১০ মিনিট পর ছুটি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। স্কুলের এতগুলো শিক্ষার্থী, পিয়ন যেখানে বলেছে ১টা ৩০ মিনিটে এ স্কুল ছুটি হওয়ার কথা ছিল সেখানে ২ দিন পর এসে আপনি একা “১ টাযয়” স্কুল ছুটি হয়ে গেছে বললে তো এটা আমাদের বিরক্ত করবেই!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আপনি লিখেছেন “স্কাই” সেকশনে একটা বাচ্চা দাঁড়ানো ছিল! সিরিয়াসলি? জুনায়েত থেকে শুরু করে রাইসা মনিসহ অনেক বাচ্চা মারা গেছে যারা স্কাই সেকশনে ছিল। ক্লাসের মধ্যে এতগুলো বই খাতা, স্কুল ব্যাগ কোত্থেকে আসল? নিশ্চয়ই বলবেন না “স্টুডেন্টরা ক্লাসে বই খাতা ব্যাগ রেখে বাসায় চলে যায়, এটাই আপনাদের নিয়ম” ম্যাডাম, আপনার একার কথার সাথে, এতগুলো নিরীহ শিক্ষার্থী এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কথার কোনও মিল নেই।’
শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাসের কথায় কোনো কিছুই পরিস্কার না জানিয়ে সাদিয়া আয়মান লিখেছেন, ‘এতগুলো স্বনামধন্য সংবাদমাধ্যমে যারা সত্যতা যাচাই বাছাই না করে নিউজ করে না তারাও কালকে অব্দি দিয়েছে ২২ জনের নিহতের খবর, কাল রাত থেকে আজ পর্যন্ত চিকিৎসারত আরও কয়েকজন ইন্তেকাল করেছে। আপনার ভাষ্যমতে, “স্কাই সেকশনে থাকা একজন, আর কিছু স্টুডেন্ট ক্লাউড সেকশনে থাকা এবং ৩জন শিক্ষিকা আগুনে পুড়েছে” সেই কিছুর সংখ্যা ৩০+? সেটাকে “কিছু” বলে না। কোনো ভাবেই বিশ্বাসযোগ্য কিংবা যৌক্তিক কোনোটাই লাগছে না আপনার এই ক্লারিফিকেশনে। আর এখনও অনেক পরিবার তাদের সন্তান কিংবা অভিভাবক (যারা বাচ্চা আনতে গিয়েছিল) তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না, সেগুলোর হদিস কে দিবে? লাশ পরিবারের কাছে তুলে দেওয়া আপনার বা স্কুলের দায়িত্ব না, এটা যাদের দায়িত্ব তাদের কর্মকাণ্ডই বেশ সন্দিহান। গতকাল বিমান বাহিনীর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে রাতে যে ছবি পোস্ট করা হয়েছে তারপর আর সাধারণ জনগণের অথবা ভুক্তভুগীদের আর ভালো কিছু “আশা” না করাই ভালো। জানিনা, আপনি কেন পুরো দুনিয়ার বিরুদ্ধে একটা স্ট্যাটাস লিখলেন, যেটা পলিটিশিয়ানরা অনেকেই শেয়ার করছে, তাই ব্যাপারটা আরও চোখে লাগলো আরকি! ধন্যবাদ।’
সবশেষে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আপনারা যারা বাকি ইনফরমেশন নিয়ে সিরিয়াস না হয়ে শুধু মাত্র ‘স্কুল ছুটি হওয়ার সময় (১ টা অথবা ১টা ৩০ নিয়ে) বেশি সিরিয়াস, তাদের জন্য বলি, স্কুল ১টা অথবা ১টা ৩০ মিনিটে হোক, সেটা নিহতের সংখ্যা কমিয়ে আনবে না। সংবাদ মাধ্যমগুলো নিউজ ভুল প্রমাণ করবে না। স্কুল ছুটি হতেই পারে ১টা অথবা ১টা ৩০-এ, ক্লাসে তখনও অনেক স্টুডেন্ট ছিল, “কিছু” স্টুডেন্ট ছিল এটা কোনো ভাবেই বিশ্বাসযোগ্য না। ৩০+ কখনোই “কিছু” সংখ্যক মানুষ না!’