English

31 C
Dhaka
শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
- Advertisement -

মানা শোনেননি, অসুস্থ হয়েও ইত্যাদির শেষ শুটিং করেন কাদের ভাই: হানিফ সংকেত

- Advertisements -
Advertisements
Advertisements

ক্যান্সারে ভুগে মারা গেছেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আবদুল কাদের। শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তুমুল জনপ্রিয় এই অভিনেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শোবিজ অঙ্গনে। শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ ধারাবাহিক নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন আব্দুল কাদের। সেই আলোচনার মাত্রা এতটাই ছিল যে ‘বাকের ভাইয়ের’ বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী না দিতে আব্দুল কাদেরের বাড়ির চারপাশে পোস্টার লাগানো হয়েছিল। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘বদি তুমি সাক্ষী দিলে, ভাসবে তুমি খালে-বিলে’।
এর পরের গল্প সবার জানা, এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য দীর্ঘদিন আব্দুল কাদেরকে পোহাতে হয়েছিল নানা মধুর যন্ত্রণা। নাটকের বাইরে আব্দুল কাদের জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন হানিফ সংকেতের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’-তে অভিনয় করে। দীর্ঘ তিন দশক এই জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের মামা-ভাগ্নে পর্বে অভিনয় করেছেন তিনি। সবশেষ আব্দুল কাদের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ‘ইত্যাদি’র শুটিংয়ে, অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে।
তাঁর হঠাৎ এমন চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে ‘ইত্যাদি’র উপস্থাপক, পরিচালক, লেখক ও প্রযোজক হানিফ সংকেতের। শনিবার সকালে গণমাধ্যমকে দেয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হানিফ সংকেত বলেন, “আমাদের জন্য খুবই কষ্টের খবর। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। অক্টোবরের মাঝামাঝি সর্বশেষ তিনি ‘ইত্যাদি’র শুট করেছিলেন। সে সময় তাঁকে খুব অসুস্থ দেখেছি। আমি তাঁকে বললাম, কী হয়েছে? উনি বললেন, ‘না, কিছু না; কিছু হয়নি।’ শেষে আমাকে বললেন, ‘আমার শরীরটা ভালো না, দোয়া করবেন।’ আমরা তাঁর শট একটা-একটা করে বসিয়ে নিয়েছি। যাঁরা পর্বটা দেখেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।”
হানিফ সংকেত আরো বলেন, “কাদের ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের প্রায় তিন দশকের সম্পর্ক। উনি অত্যন্ত শৃঙ্খলাপূর্ণ জীবনযাপন করতেন। দীর্ঘ তিন দশক তিনি আমাদের মামা-ভাগ্নে পর্বটা করেছেন এবং তিনি খুব জনপ্রিয়। ভাবি কিছুদিন আগে আমাকে বলেছিলেন… আমরা তাঁকে মানা করেছি, অসুস্থতা ও করোনার মধ্যে ‘ইত্যাদি’ না করতে। কিন্তু উনি বলেছেন, ‘না আমি ইত্যাদি করবই।’ তিনি শিডিউলমতো আসতেন, সময় নষ্ট করতেন না।”
আব্দুল কাদেরের সঙ্গে শেষ কথা প্রসঙ্গে  হানিফ সংকেত বলেন, “তাঁর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তিনি যখন চেন্নাই গেলেন। দেশে ফিরেও বিমানবন্দরে নেমে কথা হয়েছে ভিডিও-কলে। অনেক কান্না করলেন। আমাকে বললেন, ‘হানিফ ভাই, জানি না আপনার সঙ্গে আর দেখা হবে কি না। দোয়া করবেন যেন দেখা হয়।’
আব্দুল কাদেরের চলে যাওয়া অনেক বড় ক্ষতি উল্লেখ করে হানিফ সংকেত বলেন, ‘অন্যদের কী হয়েছে জানি না, তিনি আমাদের পরিবারের একজন। কাদের ভাই চলে যাওয়া মানে আমাদের পরিবারের একজন চলে যাওয়া।’
আবদুল কাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন অনেকদিন ধরে। ক্যান্সার জটিল আকারে ছাড়িয়ে পড়েছিল সারা শরীরে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তাকে গেল ৮ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাইয়ের ভেলোর শহরের সিএমসি হাসপাতালে নেয়া হয়। তবে তাঁর রক্তের হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় কেমোথেরাপি দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন ভারতের চিকিৎসকরা। পরে তাঁকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীরএভার কেয়ার হাসপালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চলছিল তাঁর চিকিৎসা। অবশেষে সব চিকিৎসার ঊর্ধ্বে চলে গেলেন তিনি। নিভে গেল দারুণ উচ্ছ্বাসে ভরা এক প্রাণ।
আব্দুল কাদের হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে ‘বদি’ চরিত্রে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান। এ ছাড়া তিনি হুমায়ূন আহমেদের ‘নক্ষত্রের রাত’ নাটকে দুলাভাই চরিত্রেও দারুণ প্রশংসিত হন। তিনি বহু নাটক-সিনেমা ও টিভি শোতে অভিনয়ে মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন