একে আজাদ: এ দেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ সবাক চলচ্চিত্র “মুখ ও মুখোশ” এর অন্যতম নায়িকা পিয়ারী বেগম-এর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ । তিনি ২০২৩ সালের ৩০ মে, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো (আনুমানিক) ৮৬ বছর। মৃত্যুদিবসে এই অভিনেত্রীর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।
ছোটবেলা থেকেই নাচ, গান ও অভিনয়ের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ ছিলো পিয়ারী বেগমের। তাদের বাসা ছিলো পুরান ঢাকার আগামসী লেনে। পড়তেন কামরুন্নেসা গার্লস স্কুলে।স্কুল এবং মহল্লার নাটকে স্কুলের বন্ধবীদের নিয়ে অভিনয় করতেন। বাবা-মা’র সঙ্গে গিয়ে সিনেমা হলে ছবি দেখতেন। তখন ঢাকাসহ পূর্ব বঙ্গের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে পশ্চিম পাকিস্তান এবং ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হতো।
কামরুন্নেসা গার্লস স্কুলে থেকে ক্লাস এইট পাস করে তিনি টাঙ্গাইলের ভারতেশ্বরী হোমসে ভর্তি হন ক্লাস নাইনে। সেখান থেকে ম্যাট্রিক পাস করার পর ভর্তি হন ইডেন কলেজে। এ সময় থেকেই তিনি ঢাকা রেডিওতে নাটকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন।
‘মুখ ও মুখোশ’ ছবি নির্মাণ পরিকল্পনার সময়, ছবিতে অভিনয়ে আগ্রহী কিছু শিল্পী প্রয়োজন, এমন বিজ্ঞাপন দেখে পিয়ারী বেগম এবং তাঁর বান্ধবী জহরত আরা যোগাযোগ করেছিলেন ছবির পরিচালক আবদুল জব্বার খান-এর সাথে। আর দু’জনেই নির্বাচিত হন। তখনকার সিনেপত্রিকা ‘চিত্রালী’র প্রচ্ছদে বিশাল ছবি দিয়ে সংবাদ হলে, তাঁর বাবা-মা জানতে পারেন তিনি ছবিতে অভিনয় করছেন। মৃদু আপত্তি করলেও, বড়ো রকমের কোনো বাধা দেননি তাঁর বাবা-মা।
আর এভাবেই পিয়ারী বেগম ঢাকায় মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’ (৩ আগষ্ট, ১৯৫৬)–এর অন্যতম নায়িকা হয়ে যান।
এই ছবির পর তিনি আর কোন চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি।
ব্যক্তিজীবনে পিয়ারী বেগম, ১৯৫৮ সালে বিয়ে করেন ‘মুখ ও মুখোশ’ ছবিতে তাঁর সহশিল্পী চিত্রনায়ক আমিনুল হককে । পিয়ারী বেগম ও আমিনুল হক দম্পতীর একমাত্র ছেলে রবিউল আমিন, বাংশাদেশ বিমানে principal engineer হিসাবে কর্মরত আছেন।