নাসিম রুমি: ঠাকুরের ডাকে জয় আর বীরু নামের দুই তরুণ মাস্তানের ডাকাত ধরার যে সিনেমা হয়ে ওঠে বলিউডের ইতিহাস। সেই সিনেমা এখন মুক্তির সুবর্ণ জয়ন্তীতে।
মুক্তির এতদিন পেরিয়েও বহু মানুষের আগ্রহ থেকে বিচ্যুত হয়নি ‘শোলে’। সিনেমার সংলাপ, দৃশ্য, গল্প নিয়ে আলোচনা ও প্রশ্নের পাশাপাশি পাত্র-পাত্রীরা কে কত রুপি পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন, তা নিয়ে কৌতুহল আছে অনেকের।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্রটির বাজেট ছিল ৩ কোটি টাকা, যা তখনকার সময়ের অন্যতম ব্যয়বহুল ভারতীয় প্রযোজনাগুলোর মধ্যে একটি। বক্স অফিস ভরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ভারতের একটি ধ্রুপদি চলচ্চিত্রের মর্যাদাও পায় ‘শোলে’।
‘শোলে’ সিনেমায় সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পকেটে পুরেছিলেন মাস্তান বীরু চরিত্রের অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। তিনি তার সঙ্গী আরেক মাস্তান ‘জয়’ চরিত্রাভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের চেয়ে দেড় গুণ বেশি টাকা পেয়েছিলেন।
ধর্মেন্দ্র পেয়েছিলেন দেড় লাখ রুপি, অমিতাভ পান ১ লাখ।
মূলত এই দুজনই- ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ বচ্চন জুটি কাঁপিয়ে দিয়েছিল বলিউডের বক্স অফিস।
এছাড়া গব্বর সিংয়ের আইকনিক চরিত্র বড় পর্দায় ফুটিয়ে তোলা আমজাদ খান পেয়েছিলেন ৫০ হাজার রুপি; আর ঠাকুর বলদেব সিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করা সঞ্জীব কুমার ‘শোলে’ সিনেমার জন্য পেয়েছিলেন এক লাখ ২৫ হাজার রুপি পারিশ্রমিক।
আর অভিনেত্রীদের মধ্যে জয়া বচ্চন পেয়েছিলেন ৩৫ হাজার রুপি; আর বাসন্তী চরিত্রে হেমা মালিনী ‘শোলে’তে অভিনয় করে ৭৫ হাজার রুপির চেক পেয়েছিলেন।
গেল জুন মাসে ইতালির বোলোনিয়া শহরে ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাতায়’ উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয় রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় এই সিনেমাটির। সেখানে সিনেমার ‘আনকাট সংস্করণ’ দেখানো হয়েছে।
পঁচাত্তরে মুক্তির পর ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি টিকেট বিক্রি করা সিনেমা ‘শোলে’। যে সিনেমায় ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ বচ্চন জুটি কাঁপিয়ে দিয়েছিল বলিউডের বক্স অফিস।
বিশ্লেষকরা বলেছেন ‘শোলে’ যেন কেবল একটি সিনেমা নয়, বরং হয়ে ওঠে সংস্কৃতির প্রতীক। এ সিনেমার সংলাপ বিয়েতে বলা হয়, রাজনীতিতে ব্যবহার করা হয়, এমনকি বিজ্ঞাপনচিত্রেও দেখা গেছে।
সিনেমাটির চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন কিৎবদন্তি চিত্রনাট্যকার জুটি সেলিম খান ও জাভেদ আখতার। এর কাহিনী পশ্চিমা ও জাপানি সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত। তবে ‘শোলে’ পুরোপুরি ভারতীয় আবহে তৈরি।
সিনেমায় দেখানো হয়েছে রামগড় নামে এক কাল্পনিক গ্রামে জয় ও বীরু নামের দুই মাস্তানকে ডাকাত গব্বর সিংয়ের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য নিয়োগ দেন এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা, ঠাকুর বলদেব সিং। গব্বর সিং ভারতীয় সিনেমার অন্যতম আইকনিক খলনায়ক।
এক মাস্তান বীরুর ভূমিকায় অভিনয় করা ধর্মেন্দ্রর ভাষ্য, “শোলে বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য।”
আরেক মাস্তানের চরিত্র করা অমিতাভ বচ্চন বলেছিলেন, “আমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা শোলের শুটিং। তখন অবশ্য বুঝিনি সিনেমাটির আইকনিক মাত্রায় পৌঁছাবে।”