English

23 C
Dhaka
মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪
- Advertisement -

সাধন রায়: চলচ্চিত্রায়নের একজন নিপুণ কারিগর

- Advertisements -

এ কে আজাদ: অসংখ্য জনপ্রিয় ছবির বরেণ্য ও নন্দিত চিত্রগ্রাহক সাধন রায়ের ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৮৮ সালের ২৯ জানুয়ারি, ৭৪ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন। প্রয়াণ দিবসে সাধন রায়ের স্মৃতির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।

১৯১৪ সালের ৫ নভেম্বর, চট্টগ্রাম শহরের নালাপাড়ায়, জন্মগ্রহণ করেন সাধন রায়। কৈশোর বয়স থেকেই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পরেন। বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্য সেনের কর্মী হিসেবে তাঁর উপর হুলিয়া জারি হয়। হুলিয়া মাথায় নিয়ে সাধন রায় চট্টগ্রাম থেকে কোলকাতায় চলে যান। সেখানে গিয়ে চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হন। লাইট বয় ও চিত্রগ্রহণ সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। কোলকাতায় তিনি সহকারী হিসেবে বেশ কয়েকজন নামি-দামী চিত্রগ্রাহকের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ‘প্রমথেশ বড়ুয়া’, তাঁর সঙ্গে শেষ উত্তর, উত্তরায়ণ, মায়ের প্রাণ, জবাব (হিন্দি)সহ ছয়টি চলচ্চিত্রে সহকারী চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন। প্রমথেশ বড়ুয়ার ইউনিটের বাইরেও সুশীল মজুমদারের ‘রিক্তা’, ‘তটিনীর বিচার’, ‘হাসপাতাল’, ঋত্বিক ঘটকের ‘অযান্ত্রিক’ চলচ্চিত্রে কাজ করেন সাধন রায় । এছাড়াও খ্যাতিমান চিত্রগ্রাহক ক্লদ রেনোয়ার’র সহকারী হিসেবে জ্যঁ রেনোয়া’রের ‘দি রিভার’ (১৯৫০) তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ।

Advertisements

চলচ্চিত্রগ্রাহক হিসেবে সাধন রায়ের ঢাকায় প্রথম কাজ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘আপ্যায়ন’। এরপর ১৯৫৭ সালে, অস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্রগ্রাহক ওয়াল্টার ল্যাসালির প্রধান সহযোগী হিসেবে, এ জে কারদারের ‘জাগো হুয়া সাভেরা’ চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন।
চলচ্চিত্রগ্রাহক হিসেবে সাধন রায়ের ঢাকায় মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- যে নদী মরু পথে, তোমার আমার, পয়সে, গোধুলীর প্রেম, সাতরং, পুনম কি রাত, নায়িকা, আগুন নিয়ে খেলা, ইয়ে ভি এক কাহানী, রাজা এলো শহরে, জিনা ভি মুশকিল, জংলী ফুল, পরশমনি, অপরিচিতা, আলোর পিপাসা, অন্তরঙ্গ, ভানুমতি, জলছবি, রক্তাক্ত বাংলা, মাটির মায়া, কে তুমি, যন্তর-মন্তর, উত্তরণ, বসুন্ধরা, দূর থেকে কাছে, দি রেইন, আদালত, বেদ্বীন, হাসি, রাজা বাদশা, স্মৃতি তুমি বেদনা, কংকর, পুরস্কার, তরুলতা, এতিম, নদের চাঁদ, ছুঁটির ঘণ্টা, উজান ভাটি, জীবন এলো ফিরে, অভিযোগ, ডার্লিং, বড় মা, লাল মেম সাহেব, শুভরাত্রি, আমি কার, চন্দ্রনাথ, শুভদা, রঙিন রূপবান ইত্যাদি।

নিজের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সাধন রায় পেয়েছেন- শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস চলচ্চিত্র পুরস্কার, হীরালাল সেন স্মৃতি সংসদ পদক’সহ অসংখ্য সম্মাননা।

Advertisements

সাধন রায় বেশ কিছু চলচ্চিত্রে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন। গুণী চলচ্চিত্রগ্রাহক সাধন রায়কে নিয়ে চিত্রপরিচালক পি এ কাজল ‘গোধূলি’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন।

ব্যক্তিজীবনে সাধন রায় বকুল রায়কে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান শুক্লা ও কৃষ্ণা, দুইজনই ভারতে বসবাস করেন।

চলচ্চিত্রগ্রাহক হিসেবে সাধন রায়ের কাজ- শিল্পের নান্দকিতার বিচারে যেমন, তেমনই গ্ল্যামারের ঝলকানিতেও সমৃদ্ধ করেছে আমাদের চলচ্চিত্রশিল্প এবং চিত্রগ্রহণের ধারাকে। তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান, সৃজনশীল মেধাবী চলচ্চিত্রগ্রাহক। খ্যাতিমান সব মানুষদের সাথে কাজ করে চলচ্চিত্র সম্পর্কে বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ ছিলেন তিনি। সৃজনশীল ও ব্যতিক্রমী কাজের স্বাক্ষর রেখে গেছেন তাঁর চিত্রায়িত চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্র সম্পর্কে অর্জিত জ্ঞান ও শিক্ষা দিয়ে এদেশের চলচ্চিত্রশিল্পকে করে গেছেন সমৃদ্ধ। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের সমৃদ্ধিতে সাধন রায়ের অবদান অবশ্য অবশ্যই স্মরণযোগ্য।

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন