নাসিম রুমি: সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত ছুঁই ছুঁই, চারিদিকে নানা সাজে সজ্জিত একটি ময়দান; সামনের প্রস্তত থাকা বিশালাকার মঞ্চে তখনও আলো ঝলমলিয়ে ওঠেনি। দলে দলে ময়দানে পা রাখছেন শ্রোতারা, সমবেত হতে দেখা যায় প্রায় হাজার খানেক মানুষকে; তখন সকলে প্রহর গুনছেন এক চূড়ান্ত মুহূর্তের; অপেক্ষা, কখন মঞ্চে উঠবেন আমাদের সকলের প্রিয় জেমস।
দেশের মাটিতে গুরু তথা নগরবাউল জেমসের কনসার্টগুলোতে এমন চিত্র খুবই সাধারণ। কিন্তু একই দৃশ্য যখন সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে দেখা মিলল, তখন আর সন্দেহ থাকে না, কেন বিশ্বসেরা এই শিল্পী। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় দাম্মামের আল খোরাব ময়দানে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল জেমসের ভক্তরা। বাঙালি, অবাঙালি থেকে শুরু করে সৌদি আরবসহ নানা দেশের দর্শকের আনাগোনা ছিল এদিন। তবে ময়দানে সবচেয়ে বেশি উপস্থিতি ছিল প্রবাসী বাংলাদেশিদের।
অবশেষে সেই চূড়ান্ত মূহুর্ত উপস্থিত! স্টেজে বড় করে লেখা উঠল ‘নগরবাউল জেমস’, ঝলমলিয়ে উঠল নানা রঙের আলো। আর তা দেখে উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন অপেক্ষমান দর্শক-শ্রোতারা। জেমস জেমস বলে মুখরিত হয়ে ওঠে আল খোরাবের ময়দান।
সকলের চোখ স্টেজের দিকে, প্রত্যেকের হাতে মুঠোফোনের ক্যামেরাও তাক করা। এমন সময় হাতে গিটার নিয়ে আবির্ভুত হতে দেখা গেল জেমসকে। শুরু করলেন গিটারের ঝংকার; মাথায় গামছা বেঁধে চিরচেনা রূপে হাজির হয়ে ভক্তদের জানালেন অভিবাদন। বলা বাহুল্য, এত সংখ্যক দর্শক দেখে আপ্লুত হয়ে জেমস বললেন ‘লাভ ইউ’।
আর কথা না বাড়ালেন না জেমস, ঝংকার তুলে গাইতে শুরু করলেন ‘পদ্ম পাতার জল’। সঙ্গে শ্রোতা-দর্শকের কলরবও ছিল শোনার মতোই। যেন জেমস এর গানের হাল ধরলেন তার ভক্তরাই।
এরপর একে একে জেমস গাইতে থাকেন শ্রোতাপ্রিয় সকল গান। যেমন দস্তানা মাস্তানা, গুরু ঘর বানাইলা, দশ মাস দশ দিন, সুলতানা বিবিয়ানা, বিজলি, আসবার কালে আসলাম একা, ঝাকানাকা, আমি আমি তারায় তারায়সহ আরও বেশ কয়েকটি গান পরিবেশনা করেন তিনি।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া জেমসের এই কনসার্টের বহু সংখ্যক ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেখানে নেটিজেনদের অনেকেই যারা উপস্থিত ছিলেন, তারা দাবি করছেন, প্রায় লাখ খানেক মানুষের সমাগম ছিল সেই কনসার্টে। তবে কিছু গান মিস করে যাওয়ায় জেমস এর ওপর খানিকটা হতাশও ছিলেন তারা।