নাসিম রুমি: বলিউডের দাপুটে অভিনেতা সঞ্জয় দত্তের জীবন সিনেমার গল্পর চেয়েও কম নয়। ব্যক্তিগত জীবনে মান্যতার সঙ্গে ঘর বেঁধে সুখী জীবন পার করছেন এই তারকা। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) মান্যতার জন্মদিন। বিশেষ দিনে স্ত্রীকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সঞ্জয় দত্ত।
স্ত্রীর সঙ্গে তোলা বেশ কটি ছবি সঞ্জয় দত্ত তার ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। এ ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “শুভ জন্মদিন মা। আমার জীবনে আসার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। তুমি আমার শক্তি, আমার পরামর্শদাতা, আমার স্তম্ভ। সৃষ্টিকর্তা সবসময় তোমাকে সুখে ও শান্তিতে রাখুক। মা, আমি তোমাকে ভালোবাসি।” এ পোস্টের শেষে সঞ্জয় লেখেন—“মান্যতা।”
মূলত, এরপর থেকে সঞ্জয় দত্তের ‘মা’ সম্বোধন করা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা শুরু হয়েছে। সঞ্জয়-মান্যতার মাতৃভাষা হিন্দি। এ ভাষায় মাকে ‘মা’ অথবা ‘মাতা’ বলা হয়ে থাকে। এ হিসাব কষে নেটিজেনরা বলছেন—“স্ত্রীকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করেছেন সঞ্জয়।”
এর পক্ষে বেশ কিছু যুক্তি উঠে এসেছে। যেমন: এক সময় ছন্নছাড়া জীবন ছিল সঞ্জয় দত্তর। বিতর্ক তার জীবনসঙ্গী ছিল। মাদক আর অন্ধকার জগতে তার বসবাস ছিল। সেখান থেকে সঞ্জয়কে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে এনেছেন স্ত্রী মান্যতা। সুখের সংসার গড়েছেন। ২০২০ সালে ক্যানসার আক্রান্ত হন সঞ্জয় দত্ত। তখন তার পাশে ছিলেন মান্যতা। সব কিছু মিলিয়ে স্ত্রীর উপর অগাধ ভরসা সঞ্জয়ের। তাই স্ত্রী মান্যতাকে ‘মা’ বলে ডাকতে দ্বিধাবোধ করেননি সঞ্জয়।
পাল্টা যুক্তিও দাঁড় করিয়েছেন কেউ কেউ। তাদের ভাষ্য, সাধারণত আমরা জন্মদাতাকে ‘মা’ বলে ডাকি। সঞ্জয় দত্ত এ অর্থে মান্যতাকে ‘মা’ বলে সম্বাধন করেননি। বরং ‘মান্যতা’ নামের প্রথম অংশ হিসেবে ‘মা’ বলে সম্বোধন করেছেন। মান্যতা তার নাম ইংরেজি হরফে লেখেন, (Maanayata), এখান থেকে নামের প্রথম অংশ ব্যবহার করেছেন সঞ্জয় দত্ত।
বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্তি পাল্টা যুক্তি দাঁড় করালেও এ নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি সঞ্জয় দত্ত কিংবা মান্যতা।
১৯৮৭ সালে রিচা শর্মাকে প্রথম বিয়ে করেন সঞ্জয় দত্ত। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে এ সংসার ভেঙে যায়। মস্তিষ্কের রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯৬ সালে মারা যান রিচা। ১৯৯৮ সালে মডেল রিয়া পিল্লাইকে বিয়ে করেন সঞ্জয়। ২০০৫ সালে ছাড়াছাড়ি হয় তাদের।
তবে তৃতীয় স্ত্রী মান্যতার সঙ্গে সঞ্জয়ের পরিচয় অনেকটা নাটকীয়ভাবে। সেই সময় নাদিয়া দুরানি নামে এক জুনিয়র আর্টিস্টের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন সঞ্জয়। তখনই মান্যতার সঙ্গে তার পরিচয়। মান্যতার নাম ছিল দিলনাওয়াজ শেখ। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করেন তিনি।
নাদিয়া ও মান্যতার মধ্যে কোনো বিষয়ে মিল ছিল না। নাদিয়া জাঁকজমকপূর্ণ জীবন পছন্দ করতেন। সঞ্জয়ই তার সব ইচ্ছা পূরণ করতেন। অন্যদিকে মান্যতা সঞ্জয়কে রান্না করে খাওয়াতেন। ধীরে ধীরে সঞ্জয়ের মনে জায়গা করে নেন মান্যতা।
‘সজন’ সিনেমাখ্যাত এই অভিনেতার ব্যাপারে খুবই যত্নশীল ছিলেন মান্যতা। শুটিং সেটে তার প্রিয় খাবার রান্না করে নিয়ে যেতেন। এছাড়া ব্যক্তিগত ও পেশাদার বিভিন্ন বিষয়ে খেয়াল রাখতেন। সঞ্জয়ের কোনো ক্ষতি হতে দিতেন না। সবকিছু মিলিয়ে মান্যতার প্রতি সঞ্জয়ের আকর্ষণ দিন দিন বাড়তেই থাকে। দীর্ঘ দিন সম্পর্কে থাকার পর ২০০৮ সালে বিয়ে করেন এই জুটি। এ সংসারে তাদের দুটো সন্তান রয়েছে।