নাসিম রুমি: বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার তাঁর তিন দশকের বেশি দীর্ঘ ক্যারিয়ারে একের পর এক ছবিতে অভিনয় করেছেন, আর্থিকভাবেও হয়েছেন ভারতের অন্যতম সেরা উপার্জনকারী অভিনেতা। বহু বছর ধরে দেশের সর্বোচ্চ করদাতার খেতাবও তাঁর দখলে। সম্প্রতি ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো’-এর তৃতীয় মৌসুমের সমাপনী পর্বে এসে নিজের ক্যারিয়ারের ৩৫ বছর পূর্তি উদ্যাপন করেন তিনি। সেখানেই অকপটে শেয়ার করলেন অর্থের প্রতি তাঁর বিশেষ টান ও নিরাপত্তাবোধের গল্প।
অক্ষয় জানালেন, ছোটবেলায় একবার একটি সংবাদপত্রে পড়েছিলেন অভিনেতা জিতেন্দ্র ১০০ কোটি রুপি ফিক্সড ডিপোজিট করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘এর সুদ কত হবে?’ তখন সুদের হার ছিল ১৩ শতাংশ, অর্থাৎ মাসে ১ কোটি ৩০ লাখ রুপি। ‘তখনই ভেবেছিলাম, যদি কোনো দিন ১০০ কোটির এফডিআর করতে পারি, তাহলে জীবনে নিরাপদ থাকব। কিন্তু মানুষের চাহিদা বাড়তেই থাকে। সেই ১০০ কোটি থেকে আমার লক্ষ্য ১ হাজার কোটি, তারপর ২ হাজার কোটিতে পৌঁছেছে। লোভের তো শেষ নেই’, বলেন তিনি।
কপিল শর্মা মজা করে জানতে চান, তাঁর সবচেয়ে বড় এফডি কত টাকার? হেসে অক্ষয় উত্তর দেন, ‘ওটা আমি বলব না।’
মধ্যবিত্ত অভ্যাস আজও রয়ে গেছে
একই অনুষ্ঠানে অক্ষয় জানান, অনেক অর্থ উপার্জন করলেও তাঁর মধ্যে এখনো মধ্যবিত্তের অনেক অভ্যাস রয়ে গেছে। তাঁর ভাষ্যে, ‘এখনো যদি আমার ছেলে বা মেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে বাতি বা ফ্যান জ্বালিয়ে রাখে, আমি দৌড়ে গিয়ে বন্ধ করে দিই। জানি এতে মাসে হয়তো বাড়তি দুই হাজার টাকা বিল আসে, কিন্তু অভ্যাসটা ছাড়তে পারি না। আজ সকালে কোচকেও বকেছি। আমি বলেছিলাম, আমি ঢোকার পাঁচ মিনিট আগে এসি চালাতে। কিন্তু তিনি ২৫ মিনিট আগে চালিয়ে ফেলেছিলেন। এটা কৃপণতা নয়, বরং শৈশব থেকেই এমনভাবে বড় হয়েছি-সম্পদের যত্ন নিতে।’
নীতিবোধ
এর আগেও টিভি অনুষ্ঠান ‘আপ কি আদালতে’ সাক্ষাৎকারে অক্ষয় বলেছিলেন, ‘আমি উপার্জন করেছি, কারও কাছ থেকে চুরি করিনি। আট বছর ধরে আমি দেশের সর্বোচ্চ করদাতা। তাই বলে আমি টাকাকড়ি নিয়ে পাগল, তা নয়। টাকা জরুরি আর বাস্তববাদীও হতে হয়। আমি আয় করি, কর দিই, আর সেবা করি—এটাই আমার ধর্ম।’
তাঁর মতে, পরিশ্রম করে আয় করলে, কাউকে ঠকানো বা ক্ষতি না করলে, ইভেন্টে গিয়ে পারিশ্রমিক নেওয়াতেও কোনো ভুল নেই।
সমাজসেবায়ও এগিয়ে
শুধু অভিনয় বা আর্থিক সাফল্য নয়, দাতব্য কাজের ক্ষেত্রেও অক্ষয় প্রশংসিত। একবার বলিউডের ৬০০-এর বেশি স্টান্টম্যানের জন্য জীবনবিমা করিয়েছিলেন তিনি। কোভিড মহামারির সময় প্রধানমন্ত্রী তহবিলে অনুদান দেন ২৫ কোটি রুপি। মুম্বাইয়ের হাজি আলি দরগাহ সংস্কারের জন্যও তিনি সমপরিমাণ অর্থ দান করেন।