২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সালমানের জন্মদিন উপলক্ষে এক চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সামিরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।
সালমান কেন আত্মহত্যা করবেন? এ প্রশ্নের উত্তরে সামিরা বলেছিলেন- ‘ও (ইমন) ‘মেন্টালি সুইসাইডাল বাই নেচার’। এর আগেও তিনবার সুইসাইডের চেষ্টা করেছেন। মেট্রোপলিটন হাসপাতালের রেকর্ড চেক করলে সেটা জানা যাবে। সেখানে দুবারের রেকর্ড আছে। আরেক হাসপাতালে আছে তৃতীয় রেকর্ড। তিনটাই আমাদের বিয়ের আগের ঘটনা। তিনটা ঘটনাই আমি জানি। একবার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে করেছিল। আরেকবার আমাকে বিয়েতে রাজি করানোর জন্য করেছে। আরেকবার অন্য একটি ঘটনায় সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।’
সালমান কেন আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠলেন- এ প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সামিরা বলেন, ‘ইমন ছবিতে ক্যারিয়ার করতে চাননি। তিনি পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন। এরশাদ (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) ও নীলা চৌধুরীকে নিয়ে এক ঘটনায় নীলা চৌধুরী জেলে যান। তিনি ময়মনসিংহ কারাগারে থাকা অবস্থায় ইমন একদিনও তার মাকে দেখতে যায়নি। কেন? ইমন কিন্তু তার মাকে মা বা আম্মা বলে ডাকত না, বলতো ‘মহিলা’। আমাদের সামনে অবশ্য ওভাবে বলত না। নীলা চৌধুরী যখন শুটিং সেটে যেতেন, ইমন বলত- ‘মহিলা আসছে’। সেটা শুনে ডলি জহুর আন্টি একদিন তাকে বকা দিয়ে বলেছিলেন ‘তুই এভাবে ডাকছিস কেন? তোর তো মা হয়।’ ইমন তখন হেসে উড়িয়ে দিয়েছে।’
এদিকে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী বরাবরই দাবি করে আসছেন, তার ছেলে আত্মহত্যা করেননি, বরং তাকে হত্যা করা হয়েছে।
অন্যদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সাবেক প্রধান বনজ কুমার মজুমদার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিলেন- ‘খুন নয়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন।’ পিবিআই সেদিন সালমানের আত্মহত্যার পেছনে পাঁচটি কারণও দাঁড় করিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে খালার বান্ধবীর মেয়ে সামিরা হককে বিয়ে করেছিলেন সালমান শাহ, যার পুরো নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। সামিরা ছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরার মেয়ে এবং বিউটি পার্লার ব্যবসায় জড়িত।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহের লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর একে একে থানা–পুলিশ, সিআইডি, র্যাব, পিবিআইসহ একাধিক সংস্থা তদন্ত চালায়। সব প্রতিবেদনেই ঘটনাটি আত্মহত্যা বলা হলেও সালমানের পরিবারের আপত্তিতে প্রতিবারই তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন করা হয়।