English

28.6 C
Dhaka
শনিবার, আগস্ট ৯, ২০২৫
- Advertisement -

৩০০ ডলার নিয়ে নিউইয়র্ক এসে অস্কার জয়, শার্লিজ থেরনের স্বপ্নযাত্রা

- Advertisements -

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ইতালি ঘুরে যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী শার্লিজ থেরন। নাচ নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছা ছিল; কিন্তু তা হয়নি। পরে মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু হলেও অভিনয়ে নিজেকে খুঁজে পান তিনি। থেরনের অভিনয়ের জীবন সংগ্রামের গল্প, সেসবই আইএমডিবি থেকে তুলে ধরা হয়েছে তার ৫০তম জন্মবার্ষিকীতে। শার্লিজ থেরনের জন্ম ১৯৭৫  সালের ৭ আগস্ট।

থেরন তার শৈশব কাটিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। মাত্র ১৩ বছর বয়সে থেরনকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বোর্ডিং স্কুলে। সেখানেই তার প্রথম শিল্পচর্চার প্রতি ভালোবাসা জন্মে। চেয়েছিলেন নাচ নিয়ে থাকতে। পরে মডেলিং শুরু করে বিজ্ঞাপনে ডাক পান অভিনেত্রী। তখনো মডেলিং, নাকি অভিনয়—এ নিয়ে দোটানায় ছিলেন থেরন।

প্রথম মডেলিংয়ের কাজে ইউরোপে আসেন তিনি। ইতালির একটি প্রতিযোগিতায় নাম লেখান। পরে এক বছর মাকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন ইউরোপের বিভিন্ন শহরে। সেখান থেকে চলে আসেন নিউইয়র্কে। সেখানে ব্যালে নৃত্যশিল্পী হিসেবে নাম লেখান।

শার্লিজ থেরন এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি তিন দিনের মডেলিংয়ের কাজে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলাম। সেখানে এসে বন্ধুর বাসায় পুরো একটি শীত কাটিয়ে দিই। যে বাসায় থাকতাম, সেখানে কোনো জানালা ছিল না। কিন্তু আমি ব্যালে নৃত্য শিখতে আগ্রহী হয়েছিলাম। যে কারণে ধৈর্য ধরেছি। পরে যখন হাঁটুতে চোট পেলাম, তখন মনে হলো আমাকে দিয়ে এই নৃত্য হবে না।

এদিকে মা বলছিলেন— তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে চান। আমার নিজের সিদ্ধান্ত আমার ওপরই চাপিয়ে দেন। কী করব তখন, সব মিলিয়ে আমি ডিপ্রেশনে পড়ে যাই।

১৯৯৪ সালে মায়ের সঙ্গে জন্মভূমিতে না ফিরে মায়ের দেওয়া মাত্র ৩০০ ডলার নিয়ে নিউইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসে পাড়ি দেন শার্লিজ থেরন। ফেরার মতো কোনো টাকা ছিল না। হাতে থাকা ৩০০ ডলার অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। এমনও দিন গেছে, তিনি রেস্তোরাঁ থেকে রুটি চুরি করে খেয়েছেন। এভাবে টিকে থাকা তার পক্ষে কষ্টসাধ্য। সঙ্গে মায়ের পাঠানো চেক ছিল। সেগুলো ভাঙানোর জন্য একদিন হলিউড বুলেভার্ড এলাকার ব্যাংকে যান। কিন্তু চেকগুলো ভাঙাতে ঝামেলা পোহাতে হয়। কারণ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন। এ নিয়ে ব্যাংকেই ঝগড়া শুরু করে দেন তিনি। এ সময় হঠাৎই তার পেছনে থাকা জন ক্রসবি নামে একজন গ্রাহক তাকে একটি ব্যবসায়িক কার্ড হাতে ধরিয়ে দেন এবং চেকটিও ভাঙিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এই ক্রসবি মূলত তরুণ অভিনয়শিল্পী, পরিচালক, গায়ক–গায়িকাদের কাজ খুঁজে দিতেন।

পরে ক্রসবিই তাকে প্রথম ফিল্ম স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। এরপর ক্রসবির সহায়তায় তিনি প্রথম একটি ভৌতিক সিনেমায় নাম লেখানোর সুযোগ পান। সিনেমার নাম ‘চিলড্রেন অব দ্য কর্ন ৩: আরবান হার্ভেস্ট’। সিনেমায় থেরনের কোনো সংলাপ ছিল না। পরে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে অনেকের চোখে পড়েন।

কারণ তার উচ্চতা ছিল বেশি। দেখতেও সুন্দরী। অভিনয়েও নিজেকে প্রতিনিয়ত দক্ষ করে তোলেন। বছর পেরোতেই ‘ডেভিলস অ্যাডভোকেট’ সিনেমায় আল পাচিনোর সঙ্গে পর্দা শেয়ারের সুযোগ তাকে হলিউডে ক্যারিয়ার গড়তে অবদান রাখে।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ‘সুইট নভেম্বর’, ‘দ্য ইতালিয়ান জব’, ‘মনস্টার’সহ ব্যবসাসফল সিনেমায় নাম লেখান। মনস্টার সিনেমার জন্য ২০০৪ সালে অস্কারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়ে যান। একসময় হয়ে ওঠেন হলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া তারকাদের মধ্যে একজন। প্রতিটি সিনেমায় কোটি ডলার পারিশ্রমিক নিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।

এদিকে শৈশবে একটি ঘটনা তাকে প্রায়ই ট্রমার মধ্যে নিয়ে যায়। বিভিন্ন সময় সাক্ষাৎকারে তিনি সে ঘটনা সম্পর্কে জানিয়েছেন, ঘটনাটি তিনি কখনই ভুলতে পারেননি। তখন তার বয়স মাত্র ১৫ বছর। থাকতেন দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে। দিনটি ছিল ২১ জুন ১৯৯১ সাল।

থেরনের বাবা সেদিন মাতাল হয়ে বাসায় ফিরেন। তার হাতে ছিল বন্দুক। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় স্ত্রী ও মেয়েকে হুমকি দিতে থাকেন তিনি। স্ত্রীকে আঘাত করেন। একসময় স্ত্রী ও মেয়েকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়েন। নিজেদের রক্ষা করতে একসময় হাতে পিস্তল তুলে নেন থেরনের মা, বাঁচার জন্য পাল্টা গুলি ছোড়েন। গুলিতে থেরনের বাবা মারা যান। আত্মরক্ষার্থে গুলি, তাই বেকসুর খালাস পেয়ে যান থেরনের মা। কিশোরী বয়সের সেই দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে তিনি মডেলিংয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/0rjs
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন