এ কে আজাদ: গুণী অভিনেতা মাসুদ আলি খান এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ । তিনি ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর, ঢাকায় নিজ বাসাতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। প্রয়াত এই অভিনেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই । তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
মাসুদ আলী খান ১৯৩১ সালের ৬ অক্টোবর, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতায় কিছুকাল পড়াশুনার একটি অংশ শেষ করেন, এরপর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরে জগন্নাথ কলেজ এবং স্যার সলিমুল্লাহ কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি।
 ছোটবেলায় ক্লাস টুতে পড়ার সময় স্বরসতী পূজায় ‘রানা প্রতাপ সিং’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন।
 উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় তিনি ‘ড্রামা সার্কেল’র সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন।
মাসুদ আলী খান বেতার ও টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় করেছেন। টেলিভিশনে তাঁর অভিষেক হয়, থিয়েটার ব্যক্তিত্ব, নাট্যকার ও পরিচালক নাট্যগুরু নুরুল মোমেন এর একটি নাটকের মধ্য দিয়ে। নাটকটির নাম ছিল “ভাই ভাই সবাই”। তিনি নায়ক ডঃ বশিরের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
 মাসুদ আলী খান অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকসমূহ- সংশপ্তক, এইসব দিনরাত্রি, কোথাও কেউ নেই, সুখী মানুষ প্রজেক্ট, দিন চলে যায়, মধুর ঝামেলা, গুলশান এভিনিউ, সাদা কালো মন, শাপমোচন, ফিফটি-ফিফটি, পৌষ ফাগুনের পালা, প্যাভিলিয়ান, একান্নবর্তী, প্রভৃতি।
তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সাদেক খান পরিচালিত ‘নদী ও নারী’ মুক্তিপায় ১৯৬৫ সালে। এই ছবিতে তাঁর নায়িকা ছিলেন রওশন আরা। মাসুদ আলী খান অভিনীত অন্যান্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে- বেগানা, দীপু নাম্বার টু, দুই দুয়ারী, মাটির ময়না, মোল্লা বাড়ীর বউ, জোনাকীর আলো, উল্লেখযোগ্য।
কর্মজীবনে তিনি সরকারের নানা দপ্তরে চাকরি করেছেন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন।
ব্যক্তিজীবনে মাসুদ আলী খান ১৯৫৫ সালে বিয়ে করেন তাহমিনা খানকে। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে একের পর এক বৈচিত্র্যময় সব চরিত্রে অভিনয় করেগেছেন মাসুদ আলী খান।
 অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও সম্মাননা। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য- একুশে পদক ২০২৩, টিভি নাটক আর্টিস্ট অ্যান্ড প্লে রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন (টেনাসিনাস) থেকে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ও
 মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার।

