১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চন। শোকার্ত কাঞ্চন তখন থেকেই শুরু করলেন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন। গত ২৭ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি সেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তার সংগঠনের নাম এখন জাতীয় স্লোগানে পরিণত হয়েছে। সেই পথ ধরেই ২২ অক্টোবর পালিত হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। এ উপলক্ষে তারকারা বলেছেন সড়ক নিরাপদ দিবস নিয়ে…
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের সফলতাই আজকের নিরাপদ সড়ক দিবস। নতুন পরিবহন আইনে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের দাবি পূরণ করা হয়েছে বলে মনে করি। এই আন্দোলনের পথিকৃৎ ইলিয়াস কাঞ্চনের পাশে আছি আমরা চলচ্চিত্র অঙ্গনের মানুষরা।’
চিত্রনায়ক রুবেল বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চনের যে সংগ্রাম তা দেশবাসীর চাওয়া। তিনি এই দাবিতে দীর্ঘদিন শ্রম দিয়ে আসছেন যা দেশব্যাপী প্রশংসা পেয়েছে। তার সঙ্গে দেশের মানুষ রয়েছে। আমরা চলচ্চিত্র সমাজ রয়েছি তার পাশে।
চিত্রনায়িকা মৌসুমী বলেন, ‘আমাদের সড়ক এতটাই অনিরাপদ। দেশের প্রতিটা অঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনার খবর আমরা পাই। যে পরিবারের প্রিয়জন হারিয়ে যায় সেই বোঝে কষ্টের কথা। আমাদের সড়ক নিরাপদ করতে ইলিয়াস কাঞ্চন যে ভূমিকা পালন করে আসছে তা সত্যিই প্রশংসিত। আমি সব সময়ই এ নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সাপোর্ট করে আসছি।’
অভিনেতা রিয়াজ বলেন, ‘ভালো কাজের পাশে কাউকে পাওয়া যায় না। এটাই বাস্তবতা। কিন্তু কাঞ্চন ভাই যে আন্দোলন শুরু করেন সড়কের জন্য সেখানে অনেক চড়াই-উতরাই পার হতে হয়েছে তাকে। অনেক ধৈর্য ধরে এগিয়ে গেছেন তিনি। তাই সফলতা পেয়েছেন। নিরাপদ সড়ক দিবস এখন রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। এটাই বড় সফলতা কাঞ্চন ভাইয়ের।’
অভিনেতা ফেরদৌস বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের জন্য যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন কাঞ্চন ভাই। সেই আন্দোলনের জন্যই সরকার ২২ অক্টোবরকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ঘোষণা করেছে। আমি মনে করি, শুধু দিবস পালন করাই নয়, সড়ক যেন কোনো মায়ের বুক খালি না করে। একটি পরিবারের কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেলে খুবই দুঃখজনক ঘটনার শুরু হয়। দেখা যায়, পরিবারের উপার্জনক্ষম মানুষটিই একটি দুর্ঘটনার শিকার হলো। তখন একজনের জন্য পুরো পরিবারই বিপদের মুখে পড়ে। তাই সড়ক নিরাপদ হতেই হবে। কাঞ্চন ভাইয়ের এ আন্দোলনের সঙ্গে আমিও আছি।’
শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেছেন, ‘আমরা কাঞ্চন ভাইয়ের (ইলিয়াস কাঞ্চন) পাশে আছি। নিরাপদ সড়ক বিষয়ে তার এই সুন্দর কাজের সঙ্গে শিল্পীরা থাকবেন এবং শিল্পী সমিতি আছে।’
চিত্রতারকা ইমন বলেন, ‘কাঞ্চন ভাইয়ের পাশে গোটা চলচ্চিত্র রয়েছে। কারণ তিনি আমাদের পথপ্রদর্শক, সিনিয়র অভিনেতা। কাঞ্চন ভাইয়ের স্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এরপর থেকে তিনি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ভূমিকা রেখে আসছেন। আমি মনে করি, কাঞ্চন ভাইয়ের এ আন্দোলন আরও বেগবান হবে।’ চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক বলেন, ‘সারাদেশের মানুষ ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইকে সমর্থন দিয়েছে ও ভবিষ্যতেও দেবেন। কারণ নিরাপদ সড়ক একটি নাগরিক অধিকার।’
আজ চলচ্চিত্রের সকল কলাকৌশী ও অভিনেতা এবং অভিনেত্রীরা রাস্তায় নেমে ২২ অক্টোবর পালন করা উচিৎ ছিল।