নাসিম রুমি: দুর্গাপুজো মানেই আলো আর আবেগে ভরা শহর কলকাতা। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। তবে সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য এবারের উৎসব ছিল খানিক একাকী।
দুর্গাপুজো মানেই আলো আর আবেগে ভরা শহর কলকাতা। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। তবে সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য এবারের উৎসব ছিল খানিক একাকী। কারণ স্ত্রী অর্পিতা এবং ছেলে তৃষাণজিৎ— যাকে সবার কাছে ‘মিশুক’ নামেই চেনে— পুজোর দিনগুলো কাটিয়েছে মুম্বইতে, দাদু বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেই। বহু বছর ধরে জুহুতেই দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন বিশ্বজিৎ। সেখানেই নাতিকে ঘিরে জমে উঠেছিল উৎসব। এমনকি নাতির জন্য বিশেষ যজ্ঞের আয়োজনও করেছিলেন তিনি। সেই যজ্ঞের ভিডিও ভাগ করে নিয়েছেন অর্পিতা, যেখানে দেখা যায় নিষ্ঠা সহকারে আচার পালন করছে তৃষাণজিৎ। মা অর্পিতা স্নেহে ছেলের মাথায় আগুনের তাপও দিচ্ছেন— দৃশ্যটি ভরে উঠেছিল মমতায়।
কিন্তু পুজোর আড়ালেই তৈরি হচ্ছিল আর এক আনন্দের খবরে। টলিউডে অভিষেক হতে চলেছে বাংলার ‘ইন্ডাস্ট্রি’-পুত্রের। বাবা প্রসেনজিৎ, মা অর্পিতা আর দাদু বিশ্বজিতের পথে হেঁটে খুব শীঘ্রই বড় পর্দায় পা রাখছে মিশুক। জানা গিয়েছে, তাকে সেলুলয়েডে আনছে প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছরই শুরু হবে শ্যুটিং। যদিও পরিচালক বা নায়িকার নাম এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। তবে গুঞ্জন, হয়তো সৃজিত মুখোপাধ্যায় কিংবা কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতেই প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে গুজব চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। যদিও ‘দেবী চৌধুরাণী’ ছবির প্রচারের সময় প্রসেনজিতকে যখন এ প্রসঙ্গ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়, তিনি বিষয়টি অস্বীকার না করলেও বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবুও টলিউডের অন্দরে কানাঘুষো চলছিল, আর সেই জল্পনাই এবার সত্যি হতে চলেছে।
অন্যদিকে, অর্পিতা প্রতি বছরই মুম্বইয়ের এই পুজোয় থাকেন। এবছরও তিনি নিজে দাঁড়িয়ে সব আয়োজন সামলালেন। অতিথিদের ভোগ পরিবেশন করতে দেখা গেল তাঁকে। এমনকি উপস্থিত ছিলেন বলিউড পরিচালক রাকেশ রোশনও।
টলিপাড়ার আলোচনায় এখন একটাই নাম— ‘ইন্ডাস্ট্রি’ জুনিয়র। যেমন হিন্দি ছবির জগতে আছে ‘বিগ বি’ আর ‘ছোটা বি’, বাংলার পর্দায় কি তবে তৈরি হতে চলেছে নতুন যুগলবন্দি— ‘ইন্ডাস্ট্রি’ আর ‘ইন্ডাস্ট্রি’ জুনিয়র?
দিন কয়েক আগেই নিজের ১৯ বছরের জন্মদিন পালন করেছে মিশুক। আর আজ সে প্রস্তুত নতুন যাত্রার পথে। বিনোদনের নানা অনুষ্ঠানে বাবার পাশে প্রায় নিয়মিত দেখা যাচ্ছে তাঁকে। কখনও আবার বাবার অনুপস্থিতিতে একাই হাজির হয়েছেন সে। হাসিমুখে তারকাদের সঙ্গে ছবি তুলছে, আড্ডায় মেতে উঠছে। সেই সব ছবি বাবাই গর্বের সঙ্গে ভাগ করছেন নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছে, মিশুক অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছে নামী অভিনেত্রী দামিণী বেণী বসুর কাছে।
প্রসেনজিৎও ছেলের পথচলায় নির্দিষ্ট সীমারেখা টেনে দিয়েছেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন— ছেলেকে সেরা প্রশিক্ষণ দেবেন, কিন্তু টাকা দিয়ে লঞ্চ করাবেন না। কারণ, তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল প্রতিভা আর পরিশ্রম। একসময় যদিও ফুটবলারের কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল তৃষাণজিৎ, পরে নিজেই অভিনয়ের পথে আসার ইচ্ছে প্রকাশ করে। আর বাবার আশীর্বাদ নিয়ে এখন সে তৈরি নতুন লড়াইয়ের জন্য।