বলিউডে আইটেম গানের কথা উঠলেই যার কথা সবার আগে মাথায় আসে তিনি মালাইকা আরোরা। শুধু আইটেম গানে নেচেই নিজেকে অনন্য করে তুলেছেন ‘মুন্নি বদনাম হুয়ি’ গার্ল।
কাজের বাইরে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বরাবরই আলোচনায় থাকেন একান্ন বছর বয়সী এ অভিনেত্রী। কারণ, তার শরীরী সৌন্দর্যে এখনো বুঁদ নেটিজেনরা।
মালাইকার চাকচিক্যময় জীবন নিয়ে নানা সময়ে প্রশ্নও উঠলেও তার সত্যিকারের জীবন এতটা সহজ নয়, কখনো ছিলও না। কারণ অনেক সংগ্রাম করে আজকের অবস্থান তৈরি করেছেন এই অভিনেত্রী। পিঙ্কভিলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
সেই সংগ্রামের গল্প বলতে গিয়ে মালাইকা জানিয়েছেন, সিঙ্গেল মায়ের কাছে বড় হয়েছেন, ছোট বোন অমৃতা আরোরারও যত্ন নিতেন তিনি।
এরপর বলেন, ‘আমার মা চাকরি করতেন, যার কারণে আমাকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হয়। খুব ছোট বয়সেই এমন এক অবস্থায় পড়ি, যেখানে আমার দায়িত্ব নিতে হয়েছে। আমি আমার বোনেরও (অমৃতা আরোরা) যত্ন নিতাম এবং সময়ের আগেই দায়িত্বশীল হয়ে ওঠি।’
মালাইকা আরোরা বলেন, “আমাদের কোনো কিছুর অভাব ছিল না। তবে মা অনেক কষ্ট করে আমাদের সবকিছু দিয়েছেন।
শিক্ষা, খাবার, জামাকাপড়—যা প্রয়োজন সবই দিয়েছেন। মা কখনো বলেননি, ‘তুমি এটা পাবে না’। যত কঠিনই হোক না কেন, তিনি সব একাই সামলেছেন। কাজ করেছেন, আমাদের বড় করেছেন, স্কুল-কলেজে পড়িয়েছেন—সবকিছু করেছেন।”
ব্যক্তিগত জীবনে মায়ের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, সেই দৃঢ়তা, সংকল্প বা শক্তি আমি তার কাছ থেকেই পেয়েছি। আমি তার জীবন দেখে বড় হয়েছি এবং সেই শিক্ষা আমার মধ্যে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে।’
বাস্তব পরিস্থিতির কারণে মালাইকা প্রায়ই অনুভব করতেন, তাকে আরো বেশি কিছু করতে হবে। কঠিন এই জীবনের জার্নিতে কখনো ক্লান্ত হয়ে উঠেছেন। ‘হ্যাঁ, এমন সময় এসেছে যখন মনে হয়েছে একটু বিশ্রাম নিই। কিন্তু আবার মনে হয়েছে, আমার দায়িত্ব আছে। আমি এমন একজন মেয়ে হতে চেয়েছিলাম, যার ওপর সবাই ভরসা করতে পারেন।’ বললেন তিনি।
মালাইকার পৈতৃক কোনো সম্পত্তি নেই, তাই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তার জীবনযাপন নিয়ে মানুষের মন্তব্য তাকে হতাশ করে। বিলাসিতা প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, “আমি বসে থেকে বলতে পারি না—‘আরে, আজ কাজ করব না।’ এমন বিলাসিতা আমার নেই।”
মালাইকা বলেন, ‘অনেকেই আমার জীবনযাপন নিয়ে মন্তব্য করেন। কিন্তু তারা বোঝেন না এই জীবনধারা বজায় রাখতে, একটি পরিবার চালাতে, সব কিছু ঠিকঠাক রাখতে কতটা পরিশ্রম করতে হয়। মানুষ শুধু চাকচিক্য দেখে। কিন্তু এর পেছনের কষ্টটা বোঝে না।’
১৯৯৮ সালে আরবাজ খানকে বিয়ে করেন মালাইকা আরোরা। ২০১৬ সালে দীর্ঘ ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানতে আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন এই দম্পতি। ২০১৭ সালের মে মাসে তাদের বিচ্ছেদ মঞ্জুর করেন মুম্বাইয়ের বান্দ্রার পারিবারিক আদালত। মালাইকা-আরবাজের আরহান খান নামে একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। এরপর আর বিয়ে করেননি মালাইকা।