ঢালিউডের কিংবদন্তিতুল্য নায়িকা রোজিনার প্রযোজনা ও পরিচালনায় নির্মিত হতে যাচ্ছে সরকারি অনুদানের সিনেমা ‘ফিরে দেখা’। তাতে তিনি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করবেন। সে কথা অনেকেই জানেন। কিন্তু তার বিপরীতে কে অভিনয় করবেন তা নিয়ে মানুষের আগ্রহ ছিল। অবশেষে সিনেমার প্রধান সব কটি চরিত্রের অভিনয়শিল্পীর নাম জানালেন রোজিনা নিজেই। তিনি বলেন, ‘আসলে আমার সিনেমাটি ১৯৭১ সালে আমার চোখে দেখা সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ এর প্রেক্ষাপট। আমি সেখানেই শ্যুটিং শুরু করতে চাই আসছে মার্চ থেকে। কাজ আগেই শুরু করতাম, কিন্তু এর মধ্যে দেশের বাইরে লম্বা সময়ের জন্য থাকতে হয়েছে আমাকে। এসে জানতে পারি শ্যুটিং এলাকায় নির্বাচনী আবহাওয়া। সেটি শেষ না হলে কাজ করাটা ঠিক হবে না। তাই দেরি হলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে অভিনয়শিল্পী নির্বাচন শেষ। আমার সিনেমায় কোনো একটি নির্দিষ্ট চরিত্র প্রধান নয়। কয়েকটি চরিত্র সমান গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে আমি করছি একটি চরিত্র। আমার স্বামীর চরিত্র করবেন ইলিয়াস কাঞ্চন। আমার ভাইয়ের চরিত্রে থাকবেন নিরব। আমি চলচ্চিত্রের মানুষ, তাই চেয়েছি সিনেমায় যারা নিয়মিত কাজ করে, তাদেরই কাস্ট করতে। প্রত্যেককে নির্বাচন করা হয়েছে চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে যাবে বলেই।’
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘বেশ আগেই রোজিনা আমাকে প্রস্তাব দেয় চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য। কিন্তু যারা আমার ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানেন, তারা বুঝতে পারবেন আমি কোনো মানহীন গল্পে কাজ করি না। এমনকি এত দিন সিনেমার প্রধান চরিত্রেই কাজ করেছি। তবে রোজিনার নিজের গল্প যেহেতু আমার একধরনের বিশ্বাস ছিল তার প্রতি। তারপরও আমি আগে স্ক্রিপ্ট চাইলাম। সে স্ক্রিপ্ট পাঠানোর পর দেখলাম, এটি একটি নারীপ্রধান গল্পের সিনেমা। রোজিনা যে চরিত্রটি করবে, সেটি মুখ্য। তারপরও কাজটি করছি কয়েকটি কারণে। প্রথমত, এটি রোজিনার সিনেমা। তার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। আমরা একসঙ্গে অনেক সিনেমা করেছি। দ্বিতীয়ত, এটি মুক্তিযুদ্ধের গল্পের কাজ। তৃতীয়ত, এখন ভালো গল্পের সিনেমা হয় খুব কম। এ কাজটি আমার উপস্থিতির জন্য যদি একটু হলেও ভালো হয় তাহলে কেন করব না। আশা করছি ভালো একটি সিনেমা হবে।’ নিজের চরিত্র নিয়ে তিনি বলেন, ‘সিনেমায় আমি রোজিনার স্বামী। পেশায় স্কুলশিক্ষক, কিন্তু ঘটনাক্রমে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিই। একপর্যায়ে আমাকে হত্যা করা হয়।’
দুই শতাধিক সিনেমার অভিনেত্রী রোজিনা তার প্রথম পরিচালিত এই সিনেমার গল্প প্রসঙ্গে বলেন, এতে যুদ্ধকালীন গোয়ালন্দের নদী ও এর আশপাশের গ্রাম আছে। গল্পের এলাকাতেই সিনেমার শ্যুটিং হবে। এখনো মনে আছে, আমি বেশ ছোট। আমাদের গ্রামের পাশের নদীতে লঞ্চ আর জাহাজ চলত। রাতে যখনই জাহাজের আলো দেখতে পেতাম, তখনই সবাই লুকিয়ে পড়তাম। কখনো পাটক্ষেতে, কখনো খাটের নিচে, কখনো জঙ্গলের মধ্যে। সেই বিষয়গুলো থাকবে সিনেমায়। এর সঙ্গে দুটি পরিবারের হৃদয়বিদারক ঘটনা দেখানো হবে। যাদের প্রায় প্রত্যেকে মুক্তিযুদ্ধে নিহত হন।