English

34 C
Dhaka
শনিবার, জুলাই ১২, ২০২৫
- Advertisement -

নিজেই চলতে পারে যে পাথর

- Advertisements -

পাথর কি কখনো নিজে থেকে হাঁটতে পারে? শুনতে অবাক লাগলেও পৃথিবীতে এমন একটি জায়গা আছে যেখানে পাথর সত্যিই নিজে থেকে নড়ে! যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালির মরুভূমিতে এই অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। এখানকার একটি শুকনো লবণাক্ত এলাকা, যার নাম ‘রেস ট্র্যাক প্লায়া’। এই জায়গায় বড় বড় পাথর মাটির ওপর দিয়ে একা একা চলাচল করে—কোনো মানুষের সাহায্য ছাড়াই!

কীভাবে চলে এই পাথর?

এই পাথরগুলোর চলার পথে মাটিতে দাগ পড়ে থাকে, যা দেখে বোঝা যায় তারা ঠিক কতদূর গিয়েছে। কিন্তু কীভাবে এটা সম্ভব? বহু বছর ধরে বিজ্ঞানীরা এই রহস্য ভেদ করার চেষ্টা করেছেন। অবশেষে তারা এর কারণ বের করেছেন।

ডেথ ভ্যালিতে শীতের রাতগুলো খুব ঠান্ডা হয়। বৃষ্টির পানি জমে এখানে পাতলা বরফের স্তর তৈরি হয়। সকালে সূর্য উঠলে বরফের কিছু অংশ গলে পানি তৈরি হয়। এই পানির কারণে মাটি পিচ্ছিল হয়ে যায়। তারপর হালকা বাতাসের ধাক্কায় পাথরগুলো ধীরে ধীরে পিছলে যেতে থাকে। যেহেতু মাটি খুব মসৃণ এবং বরফের কারণে ঘর্ষণ কম থাকে, তাই পাথর সহজেই নড়তে পারে।

বিজ্ঞানীরা কী বলছেন?

রিচার্ড নরিস (ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়) বলেন, “পাথরগুলোর চলাচল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক। বরফ, পানি আর বাতাসের সম্মিলিত শক্তি এটাকে সম্ভব করে।”

রালফ লরেঞ্জ (জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি) বলেন, “এখানে মহাকর্ষের চেয়ে বরফ আর বাতাসের প্রভাব বেশি কাজ করে। এটি প্রকৃতির একটি আশ্চর্য ঘটনা!”

কত দ্রুত চলে পাথর?

এই পাথরগুলো খুব ধীরে নড়ে। কখনো কখনো পুরো একটি মৌসুমে মাত্র কয়েক মিটার সরে। ২০১৪ সালে বিজ্ঞানীরা জিপিএস এবং ক্যামেরা দিয়ে এই চলাচল রেকর্ড করেন। তারা দেখেন, পাথরের আকার বা ওজন যাই হোক না কেন, বরফ আর বাতাসের শক্তিই এদের নড়াচড়ার মূল কারণ।

কেন শুধু ডেথ ভ্যালিতেই? পৃথিবীর অন্য কোথাও এ ধরনের ঘটনা দেখা যায় না। কারণ, রেস ট্র্যাক প্লায়া-র পরিবেশই একেবারে আলাদা—মসৃণ মাটি, লবণাক্ত ভূমি, ঠান্ডা রাত আর হালকা বাতাসের সমন্বয় শুধু এখানেই আছে।

বিজ্ঞানী ব্রায়ান জ্যাকসন বলেন, “এই পাথরগুলোর চলাচল জলবায়ুর ছোট ছোট পরিবর্তন বুঝতে সাহায্য করে। এটি প্রকৃতির এক জীবন্ত পরীক্ষাগার!”

প্রকৃতি কত বিচিত্র! ডেথ ভ্যালির এই ভ্রাম্যমাণ পাথরগুলো বিজ্ঞানীদের যেমন গবেষণার বিষয়, তেমনি সাধারণ মানুষের কৌতূহলেরও কেন্দ্র। এই রহস্যময় ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়—পৃথিবীতে এখনো অনেক অজানা বিষয় আছে, যার রহস্য ভেদ করতে বিজ্ঞানীদের দিনরাত পরিশ্রম করতে হয়।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/tvtd
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন