English

27.2 C
Dhaka
মঙ্গলবার, জুলাই ১, ২০২৫
- Advertisement -

হাত নেই, পা দিয়ে বিমান চালিয়ে গিনেস বুকে জেসিকা কক্স!

- Advertisements -

তিনিই হয়তো পৃথিবীর মধ্যে একজন; যিনি পা দিয়ে বিমান চালাতে পারদর্শী। জন্ম থেকেই বিকলাঙ্গ তিনি। দুই হাত ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেছেন। জীবনে অনেক যুদ্ধ করে আত্মবিশ্বাসের সাহায্যে লক্ষ্যে পৌঁছেছেন এই নারী।

শুধু বিমান চালাতেই নয় বরং কি-বোর্ড টাইপিং, পিয়ানো বাজানো, সাঁতার কাটা, ফোন ব্যবহার সবই পারেন তিনি। এমনকি পা দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত বস কাজই করেন প্রতিভাবান এই নারী। তার নাম জেসিকা কক্স। ছোট থেকেই তিনি নিজেকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করেছেন। মাত্র ৩ বছর বয়স থেকে জেসিকা নাচ ও শরীরচর্চা করা শুরু করেন। ৫ বছর বয়সে সাঁতার কাটতে শেখেন তিনি। ১০ বছর বয়স থেকে তায়োকান্দোও শিখতে শুরু করেন।

জীবনে কোনো কাজেই থেমে যাননি জেসিকা। যা করতে চেয়েছেন, তাই করেছেন। বাবা-মায়ের পর স্বামী আসেন তার জীবনে। স্বামীর নাম প্যাট্রিক। তিনি চতুর্থ ডিগ্রির ব্ল্যাক বেল্ট প্রাপ্ত তায়োকান্দ প্রশিক্ষক। শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষকের মনে একসময় ভালোবাসা জেগে ওঠে। এরপরই তারা বিয়ে করেন।

আমেরিকান তায়েকান্দো অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম আর্মলেস ব্ল্যাক বেল্টধারী নারী হলেন জেসিকা। সেই সঙ্গে ২০০৮ সালে বিশ্বের প্রথম আর্মলেস লাইসেন্সধারী পাইলট হন এই মার্কিন নারী। তিনি গিনেস বুকেও নাম লিখিয়েছেন তার এই প্রতিভার জন্য। এরপর টানা ৩ বছর জেসিকা মোট ৮০ ঘণ্টা বিমান চালিয়েছেন।

জেসিকা বলেন,‘আমার দক্ষতা প্রমাণ করতে ৩টি ভিন্ন রাজ্যে ৩ বছর যাবৎ ৩ জন প্রশিক্ষকের কাছে ৮০ ঘণ্টা বিমান চালিয়েছি। অবশেষে আমি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখাতে পেরেছি। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’

৩৯ বছর বয়সী এ নারী পা দিয়েই বিমান চালাতে পারেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। শুধু তাই নয়, গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে রান্না এমনকি ঘরও গুছিয়ে নেন জেসিকা। স্বামী প্যাট্রিকও ঘরের কাজে নিরলস সহায়তা করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের টুসন শহরে বসবাস করেন এ দম্পতি।

প্যাট্রিক তাদের সম্পর্কের বিষয়ে বলেন, ‘অনেকেই হয়তো ভালো চোখে দেখেননি, আমি জেসিকার সঙ্গে প্রেম করেছি বা তাকে বিয়ে করেছি। তবে আমি জেসিকাকে তার আত্মবিশ্বাসের কারণে শ্রদ্ধা করি। আজীবন তার পাশে থাকার জন্যই তাকে বিয়ে করেছি।’

২০১০ সালে প্রেম হয় তাদের। এর দুই বছর পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন জেসিকা ও প্যাট্রিক। জেসিকা বলেন, ‘প্যাট্রিক খুবই ভালো মানুষ। সে না থাকলে হয়তো আমি জীবনে এতদূর এগিয়ে যেতে পারতাম না। সব বিষয়েই সে আমাকে উৎসাহ দিয়েছে, সঙ্গে থেকেছে। প্রিয়জনের কাছ থেকে এর চেয়ে আর বেশি কিছু চাই না।’

জেসিকা তার জীবনধারণের বিষয়ে বলেন, ‘জীবনের পদে পদে শিখছি এখনো। একটি বয়স পর্যন্ত আমার মা দেখাশোনা করতেন। তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকে জামা-কাপড় পরা থেকে শুরু করে দাঁত ব্রাশ সবই শিখেছি।

এ ছাড়াও টয়লেট ব্যবহার, গোসল করা, ঘর গোছানো, ফোন ব্যবহার করাসহ নিজের কাজগুলো করতে শিখেছি। এমনও হয়েছে ড্রেসের বোতাম লাগাতে পারতাম না। নিজের কাপড় মেলে দিতে পারতাম না। এখন সবই আয়ত্তে এসেছে।’

জেসিকা পা দিয়েই মন ভোলানো সুর তোলেন পিয়ানোতে। গানও গাইতে পারেন তিনি। জেসিকা ও প্যাট্রিক অবসর পেলেই বিশ্ব ভ্রমণে বের হন। পাশাপাশি তারা বিকলাঙ্গ মানুষদের কাউন্সিলিং করান। যাতে তারা নিজেদের বোঝা না ভেবে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারেন।

জেসিকা বলেন, ‘আমার মতো যাদের হাত নেই; তাদের জন্য কাজ করছি। এমনকি আমার নিজের সন্তানও যদি হাত-পা ছাড়া জন্মগ্রহণ করে, তবুও আমি তাকে সাদরে গ্রহণ করব।’

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/3z2p
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন