English

31 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
- Advertisement -

শুধু ভালোবাসা নয়, কখনও কখনও ফুল ব্যবহৃত হয় প্রতিবাদে-বিক্ষোভে-বিপ্লবে

- Advertisements -

ফুল দিয়ে শুধু ভালোবাসা, ভালোলাগা, কিংবা মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোই হয় না, কখনও কখনও এটি ব্যবহৃত হয় প্রতিবাদে-বিক্ষোভে-বিপ্লবে। বিশ্বে ফুল দিয়ে ঘটা কিছু প্রতিবাদ বা বিপ্লবের বিবরণ এখানে দেয়া হলো।
জর্জিয়ায় গোলাপ
২০০৩ সালে গোলাপ বিপ্লবের কারণেই জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট এডুয়ার্ড শেভার্দনাদজে গদি ছাড়েন। শেভার্দনাদজের বিরুদ্ধে সেই সময় একটি স্লোগান বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল, যার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, ‘আমাদের শত্রুর গায়েও আমরা বুলেটের বদলে গোলাপ ছড়াব।’
টিউলিপ বিপ্লব
২০০৫ সালে নির্বাচনের পর কিরগিজস্তানের রাষ্ট্রপতি আকায়েভের অপসারণের দাবিতে প্রতিবাদের ঢল নামে। আকায়েভের বিরোধী গোষ্ঠীর প্রতীক টিউলিপ হয়ে ওঠে প্রতিবাদেরও প্রতীক। ২০১০ পর্যন্ত অচলাবস্থা চলার পর কিরগিজস্তান একটি সংসদীয় প্রজাতন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তবুও থামেনি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও অন্যভাবে মতপ্রকাশকে বাধা দেয়ার চেষ্টা।
ফুলের রঙের নামে যে বিপ্লব
শুধু ফুলের রঙের সাথে সামঞ্জস্য রেখেও বেশ কয়েকটি বিপ্লব বা গণঅভ্যুত্থানের নামকরণ হয়েছে সোভিয়েত-পরবর্তী দেশগুলোতে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইউক্রেনের কমলা বিপ্লব (কমলা রঙ, ফল নয়)। এর আগে, ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রেক্সাপটে অ্যামেরিকায় ফুল হাতে পথে নামে হিপিরা। অন্যদিকে, লাল গোলাপ ছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সোশাল ডেমোক্র্যাটদের পছন্দের প্রতীক।
থাইল্যান্ডে উল্টো চিত্র
প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ফুল সবসময় যে প্রতিবাদীদের হাতেই উঠবে, তা ঠিক নয়। ২০১৩ সালে থাইল্যান্ডে উল্টো চিত্র। প্রতিবাদীদের শান্তির বার্তা দিতে পুলিশকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের লাল গোলাপ দেন। কিন্তু একদিকে সরকারপক্ষে থাকা ‘লাল শার্ট’ গোষ্ঠী ও বিরোধী মতের ‘হলুদ শার্ট’ গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলমান থাকতে থাকতেই সামরিক বাহিনীর হাতে যায় শাসন ক্ষমতা। ২০১৪ সাল থেকেই এরপর জারি থাকে সামরিক আইন। প্রতিবাদ হয় ব্যর্থ।
নতুন বেলারুশ গড়তে ফুল
২৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর পুনর্নির্বাচনের প্রতিবাদে রাজধানী মিনস্ক জনতার প্রতিবাদে। প্রতিবাদী জনতার ওপর পুলিশ হামলা চালালে আরও বাড়তে থাকে ক্ষোভ। বেলারুশের নারীদের দেখা যায় সাদা পোশাক ও হাতে ফুল নিয়ে মিছিল করতে। রাজধানীর পথে ফুল হাতে মানববন্ধন করে শান্তির বার্তা দেন তারা।
কার্নেশন বিপ্লব
টানা পাঁচ দশক ধরে পর্তুগালে ছিল সামরিক শাসন। বিরুদ্ধ মতের ফলে সেন্সরশিপ বা নাগরিকদের ওপর অসহনীয় অত্যাচার ছিল তৎকালীন নেতৃত্বের দৈনন্দিন চর্চার অংশ। ১৯৭৪ সালে সামরিকবাহিনীর ভেতর থেকেই ওঠে প্রতিবাদী স্বর। কোনো ধরনের খুনোখুনি ছাড়াই বদল আসে পর্তুগালে। তৃতীয় পর্তুগিজ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিপ্লবের উদযাপন করতে পর্তুগিজরা বেছে নেন লাল কার্নেশন ফুল।
টিউনিশিয়ার জুঁই বিপ্লব
টিউনিশিয়ার জাতীয় ফুলের নামেই এই বিপ্লবের নামকরণ। ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিবাদী জনতার চাপে রাষ্ট্রনেতা জিনে এল আবিদিন বেন আলি ক্ষমতাচ্যুত হন। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা এই শাসক পরে বিক্ষোভকারীদের চাপে সৌদি আরবে পালিয়ে যান।
আরব অভ্যুত্থান
টিউনিশিয়ার অভ্যুত্থানের পর একে একে আরব বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে বিপ্লবের আঁচ। মিশর, সিরিয়া, লিবিয়ার পাশাপাশি উত্তর আফ্রিকার কিছু দেশেও দেখা যায় এই ধারা। অন্যান্য দেশেও সরকার পতন হয় অনেকটা টিউনিশিয়ার ধাঁচেই। সব জায়গাতেই দেখা যায় ফুলের ব্যবহার।
সিরিয়ায় ফুল
একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে আজও গৃহযুদ্ধ চলছে সিরিয়ায়। ২০১৩ সালে গৃহযুদ্ধের চরম পরিস্থিতির সময়ের এক ছবিতে দেখা যায়, সিরিয়ান কুর্দিশ পপুলার প্রোটেকশান ইউনিটসের এক যোদ্ধার বন্দুকে গোঁজা আছে গোলাপ, যা যুদ্ধবিরতির প্রতীক। কিন্তু সাত বছর কেটে গেলেও যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই সিরিয়ায়।
চীনেও জুঁইফুল
আরব অভ্যুত্থান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১১ সালে চীনেও শুরু হয় গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভ। অংশগ্রহণকারীরাও টিউনিশিয়ার আদলে হাতে তুলে নেন জুঁইফুল। এর উত্তরে চীনা কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ করে জুঁইফুল বিক্রি। শুধু তাই নয়, ইন্টারনেটে ‘জুঁইফুল’ লিখে সার্চ করার ওপরেও জারি হয় নিষেধাজ্ঞা।
সূত্র : ডয়েচে ভেলে

সাবস্ক্রাইব
Notify of
guest
0 মন্তব্য
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন