নাসিম রুমি: ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে ইউরোপ সেরা প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি)-কে ধুয়ে-মুছে ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে নিল ইংলিশ ক্লাব চেলসি। নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে রোববার (১৩ জুলাই) রাতে অনুষ্ঠিত ফাইনালে কোল পালমারের জোড়া গোল ও একটি অ্যাসিস্টে ৩-০ ব্যবধানে দাপুটে জয় পায় প্রিমিয়ার লিগ ক্লাবটি।
৮২ হাজারেরও বেশি দর্শকের সামনে প্রথমার্ধেই সবকটি গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় চেলসি। গোলদাতাদের তালিকায় পালমার ছাড়াও নাম লেখান জোয়াও পেদ্রো, যিনি সেমিফাইনালেও জোড়া গোল করেছিলেন।
নতুন ফরম্যাটের ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে, যেখানে ফেভারিট ধরা হচ্ছিল পিএসজিকেই—তাদের মৌসুমে ৪টি ট্রফি জেতা, চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথমবার শিরোপা অর্জন, এবং সেমিফাইনালে রেয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ ব্যবধানে হারানো যেন সবই ম্লান হয়ে গেল এন্টসো মারেস্কার চেলসির সামনে।
ম্যাচের ২২তম মিনিটে গোলরক্ষকের লম্বা পাস ধরে মালো গিস্তোর শট প্রতিহত হলে বল পান কোল পালমার। বাঁ পায়ে নিখুঁত নিচু শটে চেলসিকে এগিয়ে দেন তিনি।
আট মিনিট পর আবারও জ্বলে ওঠেন পালমার। ডিফেন্ডার লিভাই কলউইলের বাড়ানো উঁচু বল ধরে ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ে নিচু শটে জাল খুঁজে নেন তিনি।
৪৩তম মিনিটে চেলসির হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন জোয়াও পেদ্রো। পালমারের পাস থেকে অফসাইড ফাঁকি দিয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি। তিন ম্যাচে তার এটি ছিল তৃতীয় গোল।
পিএসজি পুরো ম্যাচে ছয়টি অন টার্গেট শট নিয়েছিল, কিন্তু চেলসির গোলরক্ষক রবার্ট সানচেস সবগুলোই ঠেকিয়ে দেন। বিশেষ করে উসমান দেম্বেলে, ভিতিনিয়া ও জোয়াও নেভেসের প্রচেষ্টাগুলো সানচেস অবিশ্বাস্য দক্ষতায় প্রতিহত করেন।
৮৫তম মিনিটে পিএসজি পড়ে ১০ জনের দলে, যখন মিডফিল্ডার জোয়াও নেভেস ভিএআরের সহায়তায় পেছন থেকে মার্ক কুকুরেইয়ার চুল টেনে ধরার দায়ে লাল কার্ড দেখেন। ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। শেষ বাঁশি বাজার পর চেলসির জোয়াও পেদ্রোর মুখে ঘুষি মারেন পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে, যেটি নিয়ে তৈরি হয় হইচই।
তবে মাঠের উত্তেজনা পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন চেলসির খেলোয়াড়রা বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠেন। ফাইনালের পারফরম্যান্সে নতুন কোচ এন্টসো মারেস্কার অধীনে এটি ছিল তাদের মৌসুমের দ্বিতীয় শিরোপা—এর আগে কনফারেন্স লিগ জিতেছিল রেয়াল বেতিসকে ৪-১ গোলে হারিয়ে।
পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাদের হাত থেকেই ট্রফি গ্রহণ করেন চেলসির অধিনায়ক, উদযাপনে শামিল হন কোচ থেকে শুরু করে পুরো দল।
এভাবেই ইউরোপিয়ান মহারথী পিএসজিকে হারিয়ে বিশ্বসেরা ক্লাবের মুকুট নিজেদের মাথায় পরল স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের দল চেলসি।