নক্ষত্রদেরও মরে যেতে হয়। এবার বুঝি চূড়ান্তভাবেই এলো সেই ক্ষণ। পতনের দ্বারপ্রান্তে প্রিয়তারা দ্বয়। হয়তো এবারের ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ পাবে আলাদা মাত্রা।
ফুটবল বিশ্বের দুই মহাতারকা লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে তাদের রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব ফুটবলকে সংজ্ঞায়িত করা এই দ্বৈরথ শেষ হয়েও যেন হচ্ছে না।
এই দুই তারকা সম্মিলিতভাবে ১৩টি ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। শত শত গোল করে আসা এই দুই কিংবদন্তি তাদের ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসেও নতুন ইতিহাস তৈরির দোরগোড়ায়।
২০১৫ সালে লন্ডনের একটি রাস্তার ডাস্টবিনে যখন মেসি বনাম রোনালদোর বিতর্কটি প্রথমবার গ্রাফিতি আকারে দেখা গিয়েছিল, তখন অনেকেই ভাবেননি যে এক দশক পরেও এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিশ্ব ফুটবলের মূল আলোচনা হয়ে থাকবে। অথচ ৪১ বছর বয়সী রোনাদো এবং ৩৯ বছর বয়সী মেসি এখন তাদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায়। ক্লাব এবং দেশের হয়ে প্রত্যেকেই ৮০০-এরও বেশি গোল করেছেন, একত্রে ৯টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন।
রোনালদোর সমর্থকরা তার ৯৫৪টি ক্লাব ও আন্তর্জাতিক গোল, পর্তুগালের হয়ে ১৪৩টি গোল এবং বিশ্বরেকর্ড ২২৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। অন্যদিকে, মেসি ভক্তদের কাছে তার ২০২২ সালের বিশ্বকাপ জয় এবং সেই টুর্নামেন্টের প্রতিটি নকআউট রাউন্ডে গোল করার ঐতিহাসিক দৌড়ই শেষ কথা।
বিশ্বকাপের মঞ্চে দুজনের যাত্রা ভিন্ন পথে এগিয়েছে। ২০০৬ সালে মেসি আর্জেন্টিনার কনিষ্ঠতম স্কোরার হন, ২০১৪ সালে ফাইনালে ওঠেন এবং সবশেষে ২০২২ সালে ৭ গোল করে বহু প্রতীক্ষিত সোনালী ট্রফিটি হাতে তোলেন। অন্যদিকে, রোনাদোও ২০০৬ সালে পেনাল্টি থেকে নির্ণায়ক গোল করে নিজের আগমন জানান দেন, ২০১৮ সালে স্পেনের বিরুদ্ধে বিখ্যাত হ্যাটট্রিক করেন এবং ইউরো ২০১৬ ও নেশনস লিগ ২০১৯-এ পর্তুগালকে শিরোপা এনে দেন।
আমেরিকা, কানাডা ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিতব্য ২০২৬ বিশ্বকাপের দিকে যখন বিশ্ব তাকিয়ে, তখন আধুনিক ফুটবলের এই সংজ্ঞায়িত দ্বৈরথ সম্ভবত তাদের শেষ অধ্যায়ের জন্য প্রস্তুত।
