English

24 C
Dhaka
সোমবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৫
- Advertisement -

কিডনির রোগের আসল কারণ খুঁজে পেলেন গবেষকরা

- Advertisements -

কিডনির রোগ কেন হয়? শুধু কি পানি কম খাওয়ার কারণে হয়, নাকি এর নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ রয়েছে, যে কিনা কিডনি রোগের ওপর দাপট দেখিয়ে চলে? এ বিষয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন, কিডনি রোগের ওপর এক বিশেষ ধরনের স্নেহপদার্থ দাপট দেখায়। সেটি শরীরের শক্তি উৎপাদনকারী কোষ মাইটোকনড্রিয়াকে ফালা ফালা করে দেয়। এর ফলে শক্তি তৈরির প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়। কোষকে শক্তিহীন করে দিয়ে সেটি সরাসরি আঘাত হানে কিডনির ওপরে। একে একে নষ্ট করতে থাকে কিডনির সুস্থ ও সবল কোষগুলোকে। ফলে যে রোগটি দেখা দেয়, তার নাম ‘অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি’। মূলত এটিই হলো সূত্রপাত। কিডনির কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতে শেষে কিডনি বিকল হওয়া শুরু হয়।

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সঙ্গে এ গবেষণায় রয়েছে ইউনিভার্সিটি অফ ইউটা।  সেখানকার গবেষকরা জানিয়েছেন, সেই স্নেহপদার্থটির নাম ‘সেরামাইড’। এটি সবার শরীরেই থাকে। তবে বাইরের খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার কিংবা জাঙ্কফুড বেশি খেলে এর মাত্রা বেড়ে যায়। এই ‘সেরামাইড’ যদি অধিক পরিমাণে রক্তে মিশে যায়, তাহলে সেটি মাইটোকনড্রিয়ার ওপর হামলা করে। আর মাইটোকনড্রিয়া হলো আপনার শরীরের শক্তি তৈরির ঘর। সেখানে কোষের জন্য শক্তি (এটিপি) তৈরি হয়। কোষের জন্ম-মৃত্যু, ক্যালশিয়াম সঞ্চয় করে রাখা, সংকেত আদান-প্রদানেও এর বড় ভূমিকা আছে। মাইটোকনড্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোষের শক্তি তৈরির প্রক্রিয়াটিই নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কোষগুলোর সুরক্ষাকবচ নষ্ট হতে থাকে। সেই সুযোগে সেরামাইড আক্রমণ করে কিডনির কোষগুলোকে।

গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, সেরামাইডের আধিক্য ঘটলে কিডনির সব মাইটোকনড্রিয়া কোষগুলোকে নষ্ট করে দিতে পারে। ফলে কিডনির সুস্থ কোষগুলো অকেজো হয়ে যেতে থাকে।

এ নিয়ে গবেষকরা ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা করে দেখেছেন, সেরামাইড বেশি হলে কিডনি ফেলিওরের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। আবার সেরামাইডের মাত্রা কমিয়ে ফেললেই কিডনি সুস্থ হচ্ছে ধীরে ধীরে। সেরামাইডের পরিমাণ যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তাহলেই কিডনির অসুখ হওয়ার ঝুঁকি পুরোপুরি কমে যাবে বলেই দাবি করেছেন গবেষকরা।

সে ক্ষেত্রে সেরামাইডের মাত্রা কমাতে হলে বিশেষ কোনো ওষুধ খেতে হবে, তা না হলে ইনজেকশন নিতে হবে। কী উপায়ে সেরামাইডকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে, সে চেষ্টাই করছেন গবেষকরা। মানুষের ওপর পরীক্ষা করেও দেখা হচ্ছে।

গবেষকরা ‘সেরামাইড কন্ট্রোল থেরাপি’ করে দেখছেন সেটি কতটা কার্যকরী হয়। যত জনের ওপর এ থেরাপি করা হয়েছে, তাদের কিডনির রোগ নির্মূল হওয়ার পথে বলেও দাবি করা হয়েছে। থেরাপিটি করার পর কিছু বদল দেখা গেছে রোগীর শরীরে— প্রথমত  কিডনির ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলো মেরামত হয়েছে। দ্বিতীয়ত কিডনির ক্রনিক রোগে যারা আক্রান্ত, তাদের ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই কমেছে। তৃতীয়ত শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে গেছে।

তবে গবেষণাটি আরও বৃহত্তর পর্যায়ে করা উচিত বলেই জানিয়েছেন গবেষকরা। রোগীর শারীরিক অবস্থা বিচার করেই থেরাপি করা হবে। সবার ক্ষেত্রে যদি একই রকম কার্যকরী ফল দেয়, তাহলেই থেরাপিটি কিডনির অসুখ সারাতে প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/0ub8
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন