রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে থাকলেই অক্সিজেনের সরবরাহও কমে যায়। রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব কমলে চেহারায় তার ছাপ পড়বে। প্রচণ্ড ক্লান্তি ভাব, ঝিমুনি হবে।
রক্তাল্পতার লক্ষণ দেখা দিলেই মুঠো মুঠো আয়রন ট্যাবলেট বা সাপ্লিমেন্ট নেওয়া শুরু করেন অনেকে। এতে হিতে বিপরীত হয়। আরো নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে। তাই পুষ্টিবিদরা বলেন, ওষুধ যতটা সম্ভব কম খেয়ে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলেই এই সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।
বেশি করে ফলমূল, শাক-সবজি রাখতে হবে খাবার তালিকায়। সেই সঙ্গে তিন রকম পানীয় নিয়ম করে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেতে হবে। তাহলেই রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কিছু দিনেই স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।
রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াবে যেসব পানীয়
বেদানার রস
বেদানায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অন্য পুষ্টিগুণ। এগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এতে ভরপুর পরিমাণে আয়রন আছে। এটি নিয়ম করে খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণ হবে। বেদানা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রেখে হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। বেদানায় থাকা নাইট্রেটস ও পলিফেনল পেশিতে রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে।
আমলকির রস
আমলকিতে আয়রন ও ভিটামিন সি-এর মাত্রা খুব বেশি। নিয়মিত আমলকির রস খেলে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। তা ছাড়া এর মধ্যে রয়েছে অ্যামাইনো এসিড ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা হৃৎপিণ্ডের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। আমলকি হজমক্ষমতা বাড়ায়। বিপাকে সাহায্য করে। শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ ছেঁকে বের করে দেয় আমলকির রস। এটি নিয়ম করে খেলে লিভারও ভালো থাকবে।
বিটের কাঞ্জি
বিটের মধ্যে আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের মাত্রা বেশি। প্রতিদিন খাওয়ার পরে এক গ্লাস করে বিটের রস খেলে রক্তাল্পতার সমস্যা দূর হবে। এতে আছে ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন বি১, বি২, বি৬, বি১২ এবং ভিটামিন সি। বিটের রস খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়বে।
বিটের কাঞ্জি তৈরি করার পদ্ধতিও সহজ। প্রথমে বিটের খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে ধুয়ে ছোট ছোট করে কেটে রাখুন। এবার বড় একটি পাত্রে পানি গরম করতে দিন। এর মধ্যে কেটে রাখা বিটগুলো দিয়ে দিন। কম আঁচে ফোটান। এবার ওই মিশ্রণে দিয়ে দিন লবণ, সামান্য পিষে নেওয়া সরিষা। সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে চিনামাটির পাত্রে ঢেলে নিন। তিন থেকে চার দিন পর্যন্ত ওই পাত্রটি রোদে রেখে দিন। তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে কাঞ্জি। দই বা ঘোল যারা বেশি খেতে পারেন না, তারা প্রো-বায়োটিকের জন্য এই পানীয়টি খেতেই পারেন।