English

27.7 C
Dhaka
রবিবার, আগস্ট ৩, ২০২৫
- Advertisement -

গ্লুকোমা রোগের লক্ষণ ও রোগীর করণীয়

- Advertisements -
অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মো. মুনির: গ্লুকোমা চোখের একটি জটিল রোগ। এতে চোখের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চোখের দৃষ্টি কমে যায়। রোগী অন্ধত্ব বরণ করতে বাধ্য হয়। তবে সময়মতো চিকিৎসা করালে অন্ধত্ব থেকে মুক্তি মেলে।
যে কারণে হয় : সুনির্দিষ্ট কারণ নেই। তবে চোখের উচ্চচাপ প্রধান কারণ বলে ধরে নেওয়া হয়। স্বাভাবিক চাপেও এ রোগ হতে পারে। আবার কিছু কিছু রোগের সঙ্গে এ রোগের গভীর সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। যেমন- পরিবারের কারও এ রোগ থাকা। চল্লিশোর্ধ্ব বয়স। ডায়াবেটিস। উচ্চ রক্তচাপ। মাইগ্রেন। রাতে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ সেবন। দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড ওষুধ সেবন। চোখের ছানি অপারেশন না করলে। চোখের অন্যান্য রোগ। জন্মগত চোখের ত্রুটি ইত্যাদি।

লক্ষণ : ঘন ঘন চশমার গ্লাস পরিবর্তন হওয়া। চোখে ঝাপসা দেখা বা আলোর চারপাশে রঙধনুর মতো দেখা। ঘন ঘন মাথাব্যথা বা চোখে ব্যথা হওয়া। দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসা বা দৃষ্টির পারিপার্শ্বিক ব্যাপ্তি কমে যাওয়া। অনেক সময় চলতে গিয়ে দরজার পাশে বা অন্য কোনো পথচারীর গায়ে ধাক্কা লাগা। মৃদু আলোয় কাজ করলে চোখে ব্যথা অনুভূত হওয়া। ছোট ছোট শিশু অথবা জন্মের পর চোখের কর্নিয়া ক্রমাগত বড় হয়ে যাওয়া বা চোখের কর্নিয়া সাদা হয়ে যাওয়া, চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি।

চোখ পরীক্ষা করা যাদের জরুরি : যে পরিবারে এ রোগ আছে। চল্লিশোর্ধ্ব বয়সী যাদের ঘনঘন চশমা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। যারা মাঝে মধ্যে চোখে ঝাপসা দেখেন বা যাদের ঘনঘন চোখ ব্যথা বা লাল হয়। যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মাইগ্রেন আছে। যারা চোখে দূরের জন্য মাইনাস গ্লাস ব্যবহার করেন।

চিকিৎসা : গ্লুকোমা রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এজন্য ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা আজীবন করে যেতে হবে। দৃষ্টি যাতে আর না কমে, সেজন্য চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া। প্রচলিত তিন ধরনের চিকিৎসা রয়েছে- ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা, লেজার চিকিৎসা ও শৈল্য বা সার্জারি। এ রোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, নিয়মিত ওষুধ ব্যবহার করা এবং নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষা ও তার পরামর্শ মেনে চলা। যেহেতু রোগীর চোখে কোনো ব্যথা হয় না, এমনকি তেমন কোনো লক্ষণ বা অনুভূত হয় না, তাই রোগী নিজে বা রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা অব্যাহত রাখেন না। ফলে অনেক রোগী অকালে অন্ধত্ব বরণ করে থাকেন।

রোগীর করণীয় : চিকিৎসক রোগীর চক্ষু পরীক্ষা করে তার চোখের চাপের মাত্রা নির্ণয় করে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করে দেবেন, তা নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। দীর্ঘদিন একটি ওষুধ ব্যবহারে এর কার্যকারিতা কমে যেতে পারে বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। তাই নিয়মিত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। সময়মতো চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা করিয়ে দেখা যে, তার গ্লুকোমা নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা। পরিবারের সবার চোখ পরীক্ষা করিয়ে গ্লুকোমা আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া। মনে রাখতে হবে, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা। ঠিকমতো ওষুধ ব্যবহার করে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চললে একজন গ্লুকোমা রোগী তার স্বাভাবিক দৃষ্টি নিয়ে বাকি জীবনটা সুন্দরভাবে অতিবাহিত করতে পারেন।

লেখক : সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং সিনিয়র কনসালট্যান্ট (গ্লুকোমা), বাংলাদেশ আই হসপিটাল, শান্তিনগর, ঢাকা।

The short URL of the present article is: https://www.nirapadnews.com/a5nm
Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন